ঢাকা শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৫

মেয়েকে বিয়ে না দেওয়ায় শিক্ষক খুন, তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

বিয়ানীবাজার (সিলেট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২৫, ১২:৪৮ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বিয়ানীবাজারের চাঞ্চল্যকর শিক্ষক বিনয়ন্দ্র ভূষণ চক্রবর্তী হত্যা মামলায় তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছেন দ্রুত ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকার। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আদালত রায়ে উল্লেখ করেছে, এই হত্যাকাণ্ড ছিল ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিত ও সুপরিকল্পিত। প্রায় সাত বছর ধরে মামলায় ১৪ সাক্ষীর জবানবন্দি এবং আসামিদের স্বীকারোক্তি, নিহতের স্ত্রী ও মেয়ের বর্ণনা, দুই পরিবারের বিরোধের বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে রায় প্রদান করা হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, জয় লাল নাথ, ওয়াসিম রাজা (মূল পরিকল্পনাকারি, কানাডা প্রবাসী) ও দুলাল আহমদ বাবর। রায়ের সময় বাবর ও জয় লাল নাথ আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, ২০১৮ সালের ৩০ নভেম্বর রাত ৮টার দিকে লাউতা ইউনিয়নের জলঢুপ এলাকায় আসামিরা শিক্ষক বিনয়ন্দ্র ভূষণ চক্রবর্তীকে ঘর থেকে ডেকে বের করে অগ্নিদগ্ধ করেন।

আহত অবস্থায় তাকে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সিলেট এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। ছয় দিন পর ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

নিহতের মেয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. শর্মিলা চক্রবর্তী বলেন, ‘সাত বছরের লম্বা অপেক্ষার পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ডে আমরা সন্তুষ্ট। আশা করি, সরকার দেশের বাইরে থাকা আসামিকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করবে।’

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবুল হোসেন বলেন, রায় আসামিদের অপরাধের প্রকৃত শাস্তি। ভিকটিম পরিবার ন্যায় বিচার পেয়েছে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমরা রায়ে অসন্তুষ্ট। প্রসিকিউশন মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা হাইকোর্টে আপিল করব।’

মামলার পটভূমি অনুযায়ী, ওয়াসিম রাজা ডা. শর্মিলা চক্রবর্তীর সঙ্গে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ধর্মীয় কারণে পরিবার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে তিনি বিদেশ থেকে সহযোগীদের মাধ্যমে শিক্ষককে হত্যা করেন।