ঢাকা সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫

শেখ পরিবারসহ ১০ শিল্পগোষ্ঠীর পৌনে ২ লাখ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ১৯, ২০২৫, ০৭:৪৬ পিএম
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে হয়। ছবি- সংগৃহীত

অর্থপাচার, দুর্নীতি ও লুটপাটের অভিযোগে শেখ পরিবারসহ দেশের ১০টি প্রভাবশালী শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রায় পৌনে দুই লাখ কোটি টাকার সম্পদ ও অর্থ জব্দ করেছে সরকার। জব্দকৃত এই অর্থ ও সম্পদ থেকে একটি ‘লুটের টাকা ব্যবস্থাপনা তহবিল’ গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

সোমবার ( ১৯ মে) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠক শেষে এসব তথ্য জানানো হয়।

এ সময় ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং বিএফআইইউ প্রধান এ এফ এম শাহিনুর ইসলাম।

প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের পাশাপাশি ১০টি শিল্পগোষ্ঠীর ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকার সম্পদ অ্যাটাচমেন্টে রয়েছে। এর মধ্যে ১৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার (প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা) ও ৪২ হাজার ৬১৪ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পত্তি ফ্রিজ করে রাখা হয়েছে। এছাড়া বিদেশে ২৫৩ কোটি টাকার সম্পত্তিও জব্দ করা হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ থেকেই ‘লুটের টাকা ব্যবস্থাপনা তহবিল’ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

সরকার গঠিত ১১টি তদন্ত দলের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ব্যাংক ঋণে অনিয়ম, কর ফাঁকি ও অর্থপাচারসহ নানা দুর্নীতির চিত্র। সবচেয়ে বড় দুর্নীতির চিত্র পাওয়া গেছে এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে এবং বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে বিশেষ অধ্যাদেশ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী এবং প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে এই তহবিল গঠন করা হবে। ব্যাংকগুলোর ক্ষতিপূরণ এবং জনহিতকর খাতে অর্থ ব্যয়ের জন্য দুটি আলাদা ফান্ড গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এমন একটি ফান্ড তৈরি করা, যার মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া যাবে। কারণ এই লুটপাটে ব্যাংকগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অন্যান্য অর্থ সরকার দ্বিতীয় ফান্ডে রেখে জনসেবামূলক কাজে ব্যয় করবে।’

আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে গভর্নর বলেন, ‘এ ধরনের অর্থ ফেরত আনতে সাধারণত ৪-৫ বছর সময় লাগে। তবে প্রাথমিকভাবে বিদেশি সম্পদ ফ্রিজ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় এখন আমরা আছি এবং মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিসট্যান্স (এমএলএ) চুক্তির আওতায় প্রয়োজনীয় অনুরোধ পাঠানো হচ্ছে।’