বাংলাদেশ সরকারের বারবার আপত্তি ও কূটনৈতিক উদ্বেগের পরও তথাকথিত অনিবন্ধিত বাংলাদেশিদের ‘পুশ-ব্যাক’ করে সীমান্তপথে ফেরত পাঠানোর কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে ভারত।
মঙ্গলবার (২৭ মে) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়ায়ার।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২৫ মে (রোববার) ভারতের গাজিয়াবাদ থেকে বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ উড়োজাহাজে প্রায় ১৬০ জন অনিবন্ধিত বাংলাদেশিকে ত্রিপুরার আগরতলায় আনা হয়।
দ্য হিন্দু পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই দলে নারী ও শিশুরাও রয়েছে, যাদের সম্প্রতি দিল্লির বাইরের অঞ্চল থেকে আটক করে পুলিশ।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই ব্যক্তিদের স্থলপথে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে।
ভারতের এক সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, জটিল ও দীর্ঘ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এড়িয়ে, এখন ‘পুশ-ব্যাক’ নীতির আওতায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশের কূটনৈতিক আপত্তি
বাংলাদেশ সরকার এরই মধ্যে এই কার্যক্রমের বিরোধিতা করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
৮ মে (বৃহস্পতিবার) ভারতের কাছে একটি কূটনৈতিক চিঠি দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, এ ধরনের একতরফা উদ্যোগ ‘গ্রহণযোগ্য নয়’ এবং প্রচলিত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া মেনে চলার আহ্বান জানায়।
বিভিন্ন রাজ্যে অভিযান ও নজরদারি
সম্প্রতি পেহেলগামে হামলার পর, ভারতের একাধিক রাজ্যে অনুপ্রবেশবিরোধী অভিযান জোরদার হয়েছে। সরকারের হিসাবে, সম্প্রতি পাঁচ শতাধিক বাংলাদেশিকে সীমান্ত দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
আটকের পর এসব ব্যক্তির বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ, আধার কার্ড বাতিল ও কালো তালিকাভুক্ত করা হয়, যাতে ভবিষ্যতে তারা ভারতে ফিরলেও কোনো সরকারি সেবা না পায়।
এরপর, তাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তারা তথাকথিত এই বাংলাদেশিদের সরাসরি সীমান্তপথে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়।
আগরতলা হয়ে ফেরত পাঠানো
এ ধরনের আরেকটি ঘটনা ঘটে ৪ মে, যখন গুজরাট থেকে আটক ৩০০ জন বাংলাদেশিকে যাদের মধ্যে প্রায় ২০০ জন নারী ও শিশু, এয়ার ইন্ডিয়ার দুটি ফ্লাইটে করে আগরতলায় আনা হয়। তাদেরও পরে স্থলপথে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া
২৬ মে (সোমবার) ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশন্স ডিরেক্টরেটের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, ‘এই ধরনের পুশইন বাংলাদেশ সরকারের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সীমান্তে যেকোনো রকম অব্যবস্থাপনা এবং দ্বিপাক্ষিক প্রক্রিয়া উপেক্ষা করলে, তা প্রতিবেশী সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।’
আপনার মতামত লিখুন :