দেশব্যাপী দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা মামলাগুলোর অবসান ঘটাতে বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আগামী ছয় মাসের মধ্যে অন্তত ২০ হাজার মিথ্যা ও রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে যাচ্ছে আইন, বিচার ও সংসদ মন্ত্রণালয়।
এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হলে এসব মামলায় জড়িত হাজার হাজার ব্যক্তি ‘কলঙ্ক ও আইনি জটিলতা’ থেকে মুক্তি পাবেন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাজধানীর এক অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমি মনে করি, আগামী ছয় মাসে কমপক্ষে ২০ হাজার মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করবে মন্ত্রণালয়। সরকার এরই মধ্যেই প্রায় ১২ হাজার মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে, যা অন্তত তিন লাখ মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে।’
আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ড. আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে গঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি এ পর্যন্ত (২৮ মে পর্যন্ত) মোট ১৬টি বৈঠক করেছে এবং এতে ১১ হাজার ৪৪৮টি রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এই কমিটি জেলার আইনজীবী কমিটি ও মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর শাখা প্রেরিত তথ্য, এফআইআর ও চার্জশিট পর্যালোচনা করে মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।
কমিটি জানায়, বিএনপি ১৪ জানুয়ারি প্রায় ১৬ হাজার মামলার তালিকা এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ২৭ এপ্রিল ১ হাজার ২০০টি মামলা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়।
তবে উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল অভিযোগ করেন, অনেক মামলার সঙ্গেই প্রয়োজনীয় নথি যেমন এফআইআর বা চার্জশিট পাঠানো হয়নি, যা প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত করছে।
তিনি আরও জানান, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ২০ মে ২০২৫ তারিখে ৪৪টি মামলার তালিকা জমা দিয়েছে এবং সেগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা ও পূর্ণাঙ্গ তথ্য সরবরাহ অত্যন্ত জরুরি বলে জানিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়।
সাংবিধানিক অধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করতে সরকার এই সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে, যা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নাগরিক অধিকার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আপনার মতামত লিখুন :