মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস পক্ষপাতহীনভাবে উপস্থাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার (৭ জুলাই) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
প্রধান উপদেষ্টা কল্যাণ ট্রাস্টের সম্পদ ব্যবস্থাপনায় উপযোগী পরিকল্পনা তৈরির জন্য একজন পরামর্শক নিয়োগ ও একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।
তিনি বলেন, ‘ট্রাস্টের আওতায় থাকা সম্পদে কী ধরনের এন্টারপ্রাইজ হতে পারে এবং কল্যাণ ট্রাস্ট কীভাবে কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে, সে বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে। ট্রাস্টকে আবার সক্রিয় ও কার্যকর করতে হবে।’
আগামী দিনে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সব প্রকল্পের মধ্য দিয়ে যেন মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস উঠে আসে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
বৈঠকে উপদেষ্টা ফারুক ই আজম অভিযোগ করেন, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বিভিন্ন স্থাপনা ও অবকাঠামোর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এসব স্থাপনায় রণাঙ্গনের বিশদ বিবরণ বা মুক্তিযোদ্ধাদের বর্ণনা অনুপস্থিত। বরং একটি পরিবারের ছবি ও সরঞ্জামের মাধ্যমে অতিরঞ্জিত ও পক্ষপাতদুষ্ট উপস্থাপনা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রকল্পে ২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও প্রকৃত গবেষণার কোনো চিহ্ন নেই।’’
ফারুক ই আজম বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সুবিধাভোগী শ্রেণিতে পরিণত করেছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্ধারিত সম্পত্তি, সুবিধা ও বরাদ্দ দলীয়করণ করা হয়েছিল এবং এসব অবকাঠামো ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের রাজনীতি চালানো হয়েছে।’
তিনি জানান, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের আওতায় থাকা অরক্ষিত সম্পদগুলো অত্যন্ত মূল্যবান এবং এসব সম্পদের সঠিক ব্যবহারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম ও আগামী ছয় মাসের কর্মপরিকল্পনাও প্রধান উপদেষ্টার কাছে উপস্থাপন করা হয়। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের প্রতিটি প্রকল্পের মধ্য দিয়ে যেন মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস উঠে আসে—এ বিষয়ে সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।’