বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ফিচার ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০২৫, ০১:২০ পিএম

সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে দেশসেবার স্বপ্ন পূরণ হলো না সৌরভের

ফিচার ডেস্ক

প্রকাশিত: জুলাই ১৭, ২০২৫, ০১:২০ পিএম

শহীদ সারদুল আশিস সৌরভ (২২)। ছবি- সংগৃহীত

শহীদ সারদুল আশিস সৌরভ (২২)। ছবি- সংগৃহীত

গত বছর ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় শেরপুর জেলা শহর। ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হঠাৎই রূপ নেয় সংঘর্ষে, যখন একত্রে মাঠে নামে পুলিশ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ সরকারি দলের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।

এদিন দুপুরে শহরের খরমপুর মোড় এলাকায় পুলিশের অবস্থানের বিপরীতে খাদ্য গুদাম মোড়ে অবস্থান নেয় ছাত্ররা।

হঠাৎ করেই পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান ছাত্রদের মিছিল লক্ষ্য করে কলেজ মোড়ের দিকে অগ্রসর হয়। ছাত্ররা সেটিকে অনুসরণ করে এগোতেই, বিপরীত দিক থেকে জেলা প্রশাসনের একটি দ্রুতগতির সাদা মাইক্রোবাস মিছিল ভেদ করে চলে যায়।

সেই গাড়ির নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সারদুল আশিস সৌরভ (২২)।

শহীদ সৌরভ ছিলেন শেরপুর সেকান্দার আলী কলেজের বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বাড়ি ঝিনাইগাতি উপজেলার পাইকুড়া গ্রামে। বাবা মো. সোহরাব হোসেন একজন কৃষি উদ্যোক্তা, মা মোছাম্মৎ শামসুন্নাহার বেগম জড়াকুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা।

পরোপকারী ও স্বপ্নবাজ

সৌরভের বড় ভাই শাহরিয়ার আশিস শোভন বলেন, ‘আমার ভাই সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে দেশসেবা করতে চেয়েছিল। কয়েকবার ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণও হয়, কিন্তু স্বাস্থ্যজনিত কারণে বাদ পড়ে। তারপর সে নিজের শরীর ঠিক রাখতে নিয়মিত ডায়েট করত।’

শোভন আরও বলেন, ‘সৌরভ ফ্রিল্যান্সিং করে প্রায় ২ লাখ টাকা জমিয়েছিল নিজের শখের বাইক কেনার জন্য। সেই টাকাগুলো আজও মাটির ব্যাংকে পড়ে আছে। কিন্তু ভাইটা নেই।’

ছেলেকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন মা শামসুন্নাহার বেগম। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘সৌরভ এলাকার গরিবদের পাশে থাকত। ঈদের আগে নিজ উদ্যোগে সেমাই, সুজি, চাল-ডাল বিতরণ করত। ‘দরিদ্র কল্যাণ তহবিল’ নামে একটি সংগঠনও চালাত। আজ সে নেই। যারা আমার বুকের ধনকে হত্যা করেছে, আমি তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’

সৌরভের বাবা বলেন, ‘আমাদের গ্রামে কোনো গণকবরস্থান ছিল না। ভূমিহীনদের দাফনে সমস্যা হতো। সৌরভের উদ্যোগে ছাত্র-জনতা মিলে আড়াই লাখ টাকা চাঁদা তুলেছিল জমি কেনার জন্য। কিন্তু সে নিজে দেখে যেতে পারল না। আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা বিচার চাই।’

দেশপ্রেমিক বন্ধু

সৌরভের বন্ধু শামীম হাসান (২২) বলেন, ‘ও সবসময় সমাজ, দেশ ও নিপীড়িত মানুষের কথা ভাবত। তাই স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল। সেই আন্দোলনেই রাজপথে শহীদ হয় সৌরভ।’

মোবাইলে সৌরভের ছবি দেখিয়ে শামীম আরও বলেন, ‘সে ছিল ভদ্র, পরোপকারী, বন্ধু এবং দেশপ্রেমিক। এখনো মনে হয়, সে পাশেই আছে। ওর শূন্যতা আমাদের কাঁদায়।’

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!