ঢাকা রবিবার, ২০ জুলাই, ২০২৫

মানবাধিকার হাইকমিশনের বিষয়ে কিছু রাজনৈতিক দলের আপত্তি

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২০, ২০২৫, ১১:৩৩ এএম

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্বাক্ষরের পর ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের (ওএইচসিএইচআর) একটি মিশন চালু হওয়ার বিষয়টি নিয়ে কিছু রাজনৈতিক দল বরাবর আপত্তি জানিয়ে আসছে।

প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে সমঝোতা স্মারকের খবরটি শেয়ার করা হলে সেখানে মন্তব্য করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা সারজিস আলম।

তিনি লেখেন, যেই কমিশন মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস হতে দিয়েছে, মুসলমানদের টার্গেট করে জঙ্গি ট্যাগ দিয়েছে, পশ্চিমাদের সাম্রাজ্যবাদী উদ্দেশ্যকে সার্ভ করেছে, যে কমিশন পুরো পৃথিবী কিংবা মানবতার না হয়ে কয়েকটি দেশ, গুটিকয়েক ব্যক্তি কিংবা কিছু গোষ্ঠীর দালাল হিসেবে কাজ করেছে, সেই তথাকথিত মানবাধিকার কমিশন দিয়ে আমরা কী করব?

এদিকে, ঢাকায় মানবাধিকার কমিশনের অফিস চালু নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছে বাংলাদেশের ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো।

আজ ১৯ জুলাই শনিবার সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ জানিয়েছে, বাংলাদেশে মানবাধিকার কমিশনের অফিস খুলতে দেওয়া হবে না। অবিলম্বে চুক্তি বাতিল না করলে ‘কঠোর কর্মসূচি’ ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেয় তারা।

এই সংগঠনটি বলছে, এর আগেও বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সংস্থা বাংলাদেশের মুসলিম পারিবারিক আইন, ইসলামি শরিয়া ও ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর হস্তক্ষেপের চেষ্টা করেছে। নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনেও একই চিত্র দেখা গেছে। এছাড়া, সমকামী তথা এলজিবিটি ইস্যুটি জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের মানবাধিকার দর্শন ও নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত।

এদিকে, মানবাধিকার কমিশনের অফিস খোলা সংক্রান্ত চুক্তি বাতিলের দাবিতে গতকাল বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে ইসলামী আন্দোলন ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি ইমতিয়াজ আলম শুক্রবার একটি সমাবেশে মানবাধিকার দপ্তর স্থাপন প্রসঙ্গে বলেন, ফিলিস্তিন, আফগানিস্তানসহ দেশে দেশে মুসলিম নির্যাতনে কী ভূমিকা পালন করেছে? এখন এ দেশে মানবাধিকার দেখাতে চায়?

ওই সমাবেশে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, যেকোনো মূল্যে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন থেকে সরকারকে সরে আসতে বাধ্য করা হবে।

তবে শনিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন পক্ষের আপত্তির বিষয়টি তুলে ধরে বলা হয়েছে, আমরা স্বীকার করি জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আদর্শিক অবস্থান নিয়ে সমাজের একটি অংশের উদ্বেগ রয়েছে। বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থা একটি শক্তিশালী সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। অনেক নাগরিক আমাদের জানিয়েছেন যেকোনো আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে এই মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত।

এ পরিপ্রেক্ষিতে, ওএইচসিএইচআর মিশন মানবাধিকারের যেকোনো গুরুতর লঙ্ঘনের প্রতিরোধ ও প্রতিকার, বিগত সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর মনোনিবেশ করবে। এটি দেশের প্রতিষ্ঠিত আইনি, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কাঠামোর বাইরে থাকা কোনো সামাজিক এজেন্ডাকে উৎসাহিত করবে না।