সোমবার, ২৮ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বাসস

প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২৫, ০৪:২৪ পিএম

জুলাইকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে: নিহা   

বাসস

প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২৫, ০৪:২৪ পিএম

নিশিতা জামান নিহা। ছবি- সংগৃহীত

নিশিতা জামান নিহা। ছবি- সংগৃহীত

২০২৪ সালের জুলাইয়ের ছাত্র অভ্যুত্থানে যারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম নিশিতা জামান নিহা। 

‘জুলাই আমাকে শিখিয়েছে মাথা তুলে দাঁড়াতে হয় কীভাবে।’ এমন দৃপ্ত উচ্চারণে ২০২৪ সালের ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন নিশিতা জামান নিহা। 

‘আমরা শুধু প্রতিবাদ করিনি, ভবিষ্যতের জন্য রাস্তাও দেখিয়েছি।’ এই বিশ্বাস থেকে শুরু করে ‘জুলাই আমাদের বিবেকের প্রতীক, তাকে রক্ষা করতেই হবে’ এমন অঙ্গীকারে ফুটে ওঠে এক সাহসী নারীর রাজনৈতিক জাগরণ।

বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের আবাসিক এই শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের ছাত্রী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের একজন ছাত্র প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা নিশিতা জামান নিহার বাবা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান একজন ব্যবসায়ী এবং মা আফরোজা জামান একজন শিক্ষিত গৃহিণী। পরিবারের অগ্রগামী মূল্যবোধ এবং সমাজ সচেতন মনোভাব থেকেই নিহার মধ্যে জন্ম নেয় প্রতিবাদী চেতনা ও নেতৃত্বের আত্মবিশ্বাস। 

সম্প্রতি জাতীয় বার্তা সংস্থা (বাসস)-এর সাথে সাক্ষাৎকারে জুলাই আন্দোলনের স্মতিচারণ করেছেন তিনি।

বাসস: জুলাই আন্দোলনের ১ বছর পূর্ণ হলো, ওই সংগ্রামের সময়গুলো এখনো অনুভব করেন কি?

নিশিতা জামান নিহা: জুলাই আন্দোলনের দিনগুলো আমি কখনো ভুলতে পারিনি, কারণ আন্দোলনের সময় যে ব্যাপারগুলো ছিল সেটি শুধু আমার জীবনের জন্য নয়, আমার দেশের জন্যও খুব খারাপ একটা সময় ছিল। 

আন্দোলনের সময় যে এতগুলো মানুষের প্রাণ গেল, যারা চোখ হারিয়েছেন, হাত হারিয়েছেন, পা হারিয়েছে আমি যখন ওইগুলো দেখি—আমি এখনো তা ভুলতে পারিনি।

আমার চোখের সামনে তাদের চেহারা ভেসে ওঠে। তাদের আকুতি আর্তচিৎকারগুলো আমার কানে বাজে। 

এখন জুলাইয়ে ১ বছর হলেও আমার মনে হয়েছে আমাদের প্রত্যাশা বেশি পূরণ হয়নি। এক জুলাই থেকে আরেক জুলাই আসলেও যে কাজগুলো হওয়ার কথা ছিল সেগুলো হয়নি। নতুন বাংলাদেশের যে স্বপ্নগুলো দেখেছিলাম যেগুলো পূরণ না হওয়ায় হতাশাও কাজ করে।

বাসস: আপনি ছাত্র রাজনীতিতে আসলেন কীভাবে? 

নিশিতা জামান নিহা: আমি ক্যাম্পাসে প্রথম বর্ষ থেকে ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত হই । আমার প্রথম অ্যাক্টিভিজম ছিল ‘নিরাপদ সড়ক আন্দোলন’। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের আগে থেকে আমি বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মশালা ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করতাম। তারপর আমাদের পাঠচক্রের প্রথমদিকের সদস্য ছিলাম। 

বাসস: আপনি কোটা আন্দোলনে যুক্ত হলেন কীভাবে? 

নিশিতা জামান নিহা: কোটা আন্দোলনটা প্রথমে শুরু হয়েছিল আমাদের সেন্ট্রাল লাইব্রেরি থেকে, যখন বিশাল মিছিল হয় তারপর আমাদের এখানে একটা ফেসবুক গ্রুপ খোলা হয়, যার নাম ‘কোটা পুনর্বহাল চাই না’, ওই গ্রুপের আমি অ্যাডমিন ছিলাম। ওইখান থেকে আমার কোটা আন্দোলনের সাথে যুক্ত হওয়া। তারপর সমন্বয়ক দুই কমিটিতে আমি ছিলাম।

বাসস: আন্দোলনে আপনার ভূমিকা কি কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হিসাবে ছিল?

নিশিতা জামান নিহা: আমার মূল দায়িত্ব ছিল আমার হলের মেয়েদের সবাইকে একত্রিত করা এবং তাদের নিয়ে মিছিলে যাওয়া। প্রথমে মেয়েরা ভালোভাবে আমাদের সাথে যুক্ত হয়নি কিন্তু একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর তারা আমাদের সাথে ভালোভাবে যুক্ত হয়। প্রথমদিকে আমাদের পাঁচ হলের মেয়েদের নিয়ে একটা মেসেঞ্জার গ্রুপ খুলি, যেখানে আমরা সিদ্ধান্ত নিতাম যে কখন কীভাবে আমরা একত্রিত হব, কীভাবে মিছিলে যাব। 

আমরা আমাদের সিদ্ধান্তগুলো গ্রুপের ১৫ জন মিলে নিতাম। আমরা হল থেকে মিছিলে যাওয়ার আগে থালা-বাটি বাজিয়ে সবাইকে ডেকে এক জায়গায় করতাম। আমাদের হল ক্যাম্পাসের বাইরে হওয়ায় আমরা সবাই একসাথে দলবদ্ধ হয়ে সেন্ট্রাল লাইব্রেরিতে যেতাম। আমাদের মেয়েদের ব্যাপারগুলোর সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় আমি ছিলাম।

বাসস: আন্দোলনে আপনার হলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ কেমন ছিল? 

নিশিতা জামান নিহা: আসলে বিগত সব আন্দোলনের থেকে আমাদের এই আন্দোলনে মেয়েদের অনেক বেশি অংশগ্রহণ ছিল। আমাদের হলের অনেক আপু নানা কাজে ব্যস্ত থাকলেও তারা আমাদের সাথে অংশগ্রহণ করত। কেউ টিউশন শেষ করে আমাদের সাথে যুক্ত হতো বা কেউ নিজের গুরুত্বপূর্ণ কাজ শেষ করে আমাদের সাথে আসত। আসলে সবার নিজের মন থেকেই আমাদের সাথে যুক্ত হতো, কারণ হলো এটা আমাদের জীবনের সাথে বিশেষভাবে যুক্ত। তাই শুরু থেকেই মেয়েদের অংশগ্রহণ ছিল অনেক বেশি। 

বাসস: ১৪ জুলাই রাতে শিক্ষার্থীদের রাজাকার আখ্যায়িত করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী, ওইদিন রাতে আপনারা কী করে প্রতিবাদ মিছিল করেছিলেন?

নিশিতা জামান নিহা: তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যটি দেওয়ার পর থেকেই সবার মনে একটা গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল যে উনি কীভাবে প্রধানমন্ত্রী হয়ে এমন একটা বক্তব্য দেন।

ওই দিন রাত্রের দিকে ছেলেদের হলে একটা স্লোগান দেওয়া হয় যে— 

‘তুমি কে আমি কে? রাজাকার রাজাকার—কে বলেছে, কে বলেছে? স্বৈরাচার স্বৈরাচার।’

তখন আমরা ভাবলাম যে সেই জায়গায় থেকে আমরা প্রতিবাদ করতে পারি। প্রথমে আমরা কয়েকজন মিলে হলের নিচে এসে স্লোগান দিতে থাকি। ঠিক সেই সময় হলের প্রতিটি রুম থেকে মেয়েরা নেমে এসে আমাদের সাথে যোগ দেয়। তারপর আমরা হলের প্রধান ফটকের তালা ভেঙে মিছিল নিয়ে রাজুতে যাই।

বাসস: ১৪ জুলাইয়ের রাতের মিছিলের পর আপনারা কি আশংকা করেছিলেন যে ছাত্রলীগ আপনাদের ওপর হামলা করতে পারে?

নিশিতা জামান নিহা: জি, ১৪ জুলাইয়ের মিছিলের পর থেকেই একটা গুঞ্জন ওঠে ছাত্রলীগ আমাদের ওপর যেকোনো সময় হামলা করতে পারে। আমরা যখন মিছিলে যাই তখন আমরা দেখতে পাই ছাত্রলীগের কিছু বহিরাগত আমাদের ক্যাম্পাসে অবস্থান করছে। তখন আমরা কিছুটা অনুমান করতে পারি যে তারা হামলা করবে। তা ছাড়াও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন ছিল। 

পরের দিন ১৫ জুলাই দুপুরের দিকে আমরা শুনতে পাই, ইডেন কলেজের মেয়েদের ওপর ছাত্রলীগের কর্মীরা গরম পানি নিক্ষেপ করেছে, তারপর আমরা এগুলো দেখে আর বসে থাকতে পারিনি। আমরা হলের গুটিকয়েক মেয়ে ইডেন কলেজে গেলে আমরা দেখতে পাই, ঢাকা কলেজের ভাইদের সহায়তায় উনাদের উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনাগুলো আমাদের কাছে খুবই বেদনাদায়ক ছিল। ক্যাম্পাসে যে আমাদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা হয়, যেখানে আমাদের হলের এক মেয়ের হাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগস্থ হয়।

আমার মনে হয়, আমার ওপর এই দায়টা যায়, কারণ আমি যখন তার খোঁজখবর নিতে যাই তখন সে বলে, ‘আমার হাতটা এখনো ঠিকভাবে কাজ করছে না, আমি পরীক্ষায় ঠিক করে লিখতে পারি না।’ 

বাসস: ১৭ জুলাই থেকে হল বন্ধ হয়েছিল তখন আপনারা সবাই বিছিন্ন হয়ে গেলেন কিন্তু পরে আবার কীভাবে এক হয়ে আন্দোলন করেছিলেন? 

নিশিতা জামান নিহা: আমরা আমাদের হলকে যানতাম আমাদের একটা নিরাপদ আশ্রয় হিসাবে; কিন্তু যখন আমাদের হল থেকে বলা হলো, ‘গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ অফ করে দেওয়া হবে এবং যেকোনো সময় যেকোনো কিছু ঘটতে পারে, তোমরা যদি থাকতে চাও থাকতে পারো।’ তখন আমাদের অনেক মেয়ে ভীতিকর অবস্থায় পড়ে এবং কান্নাকাটি করে দেয়। তারপর সবাই সবার মতো চলে যায়, কারণ আমাদের হল প্রভোস্ট, হাউজ টিউটর যখন এইসব কথা বলেন, তাতে আমাদের আর কিছুই করার ছিল না। আমরা তখন আমাদের যে মেসেঞ্জার গ্রুপ ছিল সেটাতে আমরা কথা বলতাম কীভাবে কী করা যায় এগুলো নিয়ে। 

বাসস: অন্যান্য সমন্বয়কদের সাথে কীভাবে যোগাযোগ করে আন্দোলনে সমন্বয় করতেন? 

নিশিতা জামান নিহা: অবশ্যই, উনাদের সাথে আমাদের যোগাযোগ হতো নিয়মিত, যতদিন ক্যাম্পাস খোলা ছিল। পরবর্তীতে ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আমাদের মোবাইলগুলো গোয়েন্দা নজরদারিতে ছিল। 

তখন আমাদের যোগাযোগ করাটা ছিল খুবই বিপজ্জনক। তারপরও নাহিদ ইসলাম ভাই অন্য একটা ফোন দিয়ে আমার খোঁজখবর নেন এবং অন্যদেরও খবর নেন। 

বাসস: ইন্টারনেট বন্ধ থাকার সময় কীভাবে আপনারা যোগাযোগ করেছিলেন? 

নিশিতা জামান নিহা: আমি তখন আমার গ্রামের বাড়িতে ছিলাম। তখন টুকটাক মোবাইলে কথা হতো। 

অনেকে বাটন ফোনে যোগাযোগ করেছিল। আসলে এর বাইরে আর কিছু করার সুযোগ ছিল না আমাদের কাছে। 

বাসস: আপনি ব্যক্তিগতভাবে বা আপনার পরিবার কোনো হুমকির মুখে ছিলেন কি না? 

নিশিতা জামান নিহা: ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়ার আগে ছাত্রলীগের এক নেত্রী আমার সব তথ্য সংগ্রহ করে ডিবেটিং ক্লাবের একজন আপুর থেকে, তারপর আমি গ্রামের বাসায় যাওয়ার পর স্থানীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ থেকে টুকটাক হুমকি আসত। স্থানীয় থানায় আমার সব তথ্য উনাদের কাছে ছিল এবং তাদের ওপর দায়িত্ব ছিল যাতে আমার ব্যাপারটা তদন্ত করে দেখে। তারপর পুলিশ আমার কাছে আসে এবং খোঁজ-খবর নেয়। তারা আমার পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চায়। পুলিশ আমাকে সরাসরি বলে যে, ‘তুমি কী করছ না করছ সব আমরা দেখছি, তোমার মোবাইল থেকে পরিবার সব আমাদের নজরে আছে। এরপর যদি তুমি কিছু করো আজকে শুধু বলে গেলাম এরপর আর কিছু করার থাকবে না।’

বাসস: আন্দোলনে আপনাদের শিক্ষকদের ভূমিকা বা সমর্থন কেমন ছিল? 

নিশিতা জামান নিহা: একটি নিদিষ্ট সময় পর্যন্ত শিক্ষকদের কোনো ভূমিকা আমি দেখতে পাইনি, আমাদের ওপর যখন হামলা হলো তখন আমার বিভাগের দুই-একজন শিক্ষক আমাকে কল দিয়ে খোঁজখবর নেন। 

তারপর যখন হল বন্ধ করে দেওয়া হয় তখন একজন শিক্ষক আমাকে কল করে বলেন যে, ‘তোমার যদি কোনো থাকার সমস্যা হয় তাহলে আমার বাসায় চলে আসো।’ 

১৫ তারিখ রাত্রে আমরা হল থেকে প্রভোস্ট বরাবর একটা দরখাস্ত দেই যে, আমাদের হলকে রাজনীতি মুক্ত করতে হবে। সেই ঘোষণা আমরা ১৫ তারিখ রাত্রে নিয়ে নেই।

হলের ছাত্রলীগের যারা ছিল তারা যখন দেখল রোকেয়া হলের ছাত্রলীগের মেয়েদের বের করে দেওয়া হলো তখন তারা হল থেকে যে যার মতো চলে গিয়েছিল। 

বাসস: শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার খবর প্রথম কীভাবে শুনেছিলেন এবং আপনার অনুভূতি কেমন ছিল? 

নিশিতা জামান নিহা: শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার খবর আমি প্রথমে ফেসবুক দেখতে পাই এবং পরবর্তীতে টিভিতে দেখি। উনি পালিয়ে যাওয়ার পর আমার মনে হয়েছিল যে ঠিক আছে, এবার আমরা মুক্ত স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারব। এতগুলো মানুষের জীবন নিয়ে তিনি যেভাবে সুস্থভাবে সেইফ এক্সিট নিয়ে দেশ থেকে চলে গেলেন এটা আমার কাছে দুঃখজনক ছিল। 

বাসস: নতুন বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীদের কেমন অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করেন? নারীদের নিয়ে আপনার ভাবনা কী?

নিশিতা জামান নিহা: ৫ আগস্টের পর নারীদের রাজনীতিতে আসার একটা অনুপ্রেরণা ছিল। কিন্তু সময় যত যেতে থাকে যে নারীরা আন্দোলন সম্মুখ সারিতে ছিল তাদের ওপর নানা রকম সাইবার বুলিং, থ্রেট আসতে থাকে। বিশেষ করে আমি বলব, সাইবার বুলিং অনেক বেড়েছে—এটা একটি হতাশার ব্যাপার। পরাজিত শক্তি ও একটি গোষ্ঠী নারীদের রাজনীতিতে আসার পথটি পিছন থেকে টেনে ধরছে। 

কারণ তারা নারীদের আন্দোলনে দেখেছে যে তারা কী করতে পারে। এটি তাদের মধ্যে একটি ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার আশেপাশে যত মেয়ে ছিল তারা কোনো সময় একবার হলেও সাইবার বুলিং-এর শিকার হয়েছে। অনেক ভুঁইফোড় মিডিয়া মেয়েদের ভিডিওগুলো কেটে প্রচার করে, যাতে অনেক খারাপ কমেন্ট লক্ষ করা যায়। তারা এগুলো করে ভিউয়ের জন্য, যা হতাশাজনক। এগুলো থেকে মেয়েদের মধ্যে হতাশা তৈরি করে, যার ফলে অনেক মেয়ে রাজনীতি ছেড়েও দিচ্ছে। 

আমার একটা পরামর্শ হলো, মেয়েরা যারা রাজনীতিতে আসতে চায় তাদেরকে রাজনৈতিক দলগুলো একটা জায়গায় করে দিতে পারে এবং তাদেরকে আশ্বস্ত করতে পারে যে তারা এগুলো থেকে তাদের সেইফ করবে। 

তা ছাড়াও মেয়েদের সাথে কোনো খারাপ ঘটনা ঘটলে যে আপনি সাথে সাথে কোনো প্রতিকার বা অভিযোগ করবেন এমন কোনো হটলাইন নেই। 

তাই আমার পরামর্শ থাকবে, এমন একটা হটলাইনের ব্যবস্থা করা এবং থানাগুলোতে শুধুমাত্র নারীদের জন্য একটা হেল্প ডেস্কের ব্যবস্থা করা। নারীদের সরাসরি নির্বাচনে যাওয়ার যে ব্যাপারটা সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ যখন নারীরা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাবে তখন নারীদের কথা ভালোভাবে বলতে পারবে এবং নারীদের ক্ষমতায়নটা ভালোভাবে করতে পারবে। 

যদি আমি আমার প্রত্যাশা পূরণের কথা বলি তাহলে বর্তমানে খুব বেশি প্রত্যাশা পূরণ হয়নি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু যতগুলো পরিবর্তন আসার কথা ছিল খুব বেশি আসলে পরিবর্তন আসে নাই।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!