‘জুলাই সনদের’ খসড়া দেশের সব রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রীয়াজ।
সোমবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
ড. রীয়াজ বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক দলকে অনুরোধ করেছি যদি কারও কোনো সুপারিশ, মতামত বা সংশোধনী প্রস্তাব থাকে, তা যেন ৩০ জুলাই দুপুর ১২টার মধ্যে কমিশনকে জানানো হয়।’
তিনি আরও জানান, আলোচনা হচ্ছে৷ সেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে সেগুলো তার (জুলাই সনদ) মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এদিকে খসড়াটি ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, এতে মোট সাতটি অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো এসব অঙ্গীকারে একমত হলে স্বাক্ষরিত হতে পারে চূড়ান্ত সনদ।
জুলাই সনদের অঙ্গীকারনামায় বলা হয়েছে, আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারীগণ এই মর্মে অঙ্গীকার করছি যে—
এক. হাজারো মানুষের জীবন ও রক্ত এবং অগণিত মানুষের সীমাহীন ক্ষয়ক্ষতি ও ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে অর্জিত সুযোগ এবং তৎপ্রেক্ষিতে জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে দীর্ঘ ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রণীত ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এর পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করব;
দুই. ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এ দেশের শাসনব্যবস্থা তথা সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশি ব্যবস্থা ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থার বিষয়ে যেসব প্রস্তাব/সুপারিশ এই সনদে লিপিবদ্ধ রয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন, লিখন ও পুনর্লিখন এবং বিদ্যমান আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন, পরিবর্তন, পরিমার্জন, লিখন, পুনর্লিখন বা নতুন আইন প্রণয়ন, প্রয়োজনীয় বিধি প্রণয়ন বা বিদ্যমান বিধি ও প্রবিধির পরিবর্তন বা সংশোধনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি;
তিন. ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এ দেশের শাসনব্যবস্থা তথা সংবিধান, বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশি ব্যবস্থা ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থার বিষয়ে যেসব প্রস্তাব/সুপারিশ এই সনদে লিপিবদ্ধ রয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন, লিখন ও পুনর্লিখন এবং বিদ্যমান আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন, পরিবর্তন, পরিমার্জন, লিখন, পুনর্লিখন বা নতুন আইন প্রণয়ন, প্রয়োজনীয় বিধি প্রণয়ন বা বিদ্যমান বিধি ও প্রবিধির পরিবর্তন বা সংশোধন এই সনদ গৃহীত হওয়ার পরে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের দুই বছরের মধ্যে সম্পন্ন করতে এবং এসব সংস্কার টেকসই করতে অঙ্গীকার করছি;
চার. এই সনদ গৃহীত হওয়ার পর এতে যেসব প্রস্তাব/সুপারিশ লিপিবদ্ধ রয়েছে সেগুলো পরবর্তী দুই (২) বছর মেয়াদকালের মধ্যে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি;
পাঁচ. ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাস্তবায়নের প্রতিটি ধাপে আইনি ও সাংবিধানিক সুরক্ষার পূর্ণ নিশ্চয়তা বিধান করব;
ছয়. ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাস্তবায়নে এবং এর আইনি ও সাংবিধানিক সুরক্ষা প্রদানে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ; এবং
সাত. ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও গণ-অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে সংবিধানে যথাযোগ্য স্বীকৃতি দিতে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকব।