ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫

হাসিনার নির্দেশে ইয়াকুব-ইসমামুলকে হত্যা করা হয়

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৫, ১১:৫৮ এএম
শেখ হাসিনা। ছবি- সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয়জনকে গুলি করে হত্যার মামলায় ট্রাইব্যুনালে আরও তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। শহীদ ইয়াকুবের মা রহিমা আক্তার জানিয়েছেন, গত বছরের ৫ আগস্ট বেলা আড়াইটার দিকে আমার ছেলের লাশ খাটিয়ায় করে গলির ভেতর আনা হয়। পেটে গুলি লেগে বেরিয়ে গেছে, ভুঁড়ি বেরিয়ে গেছে, রক্ত পড়া থামছিল না।

অপর সাক্ষী শহীদ আহম্মেদ জানিয়েছেন, গণঅভ্যুত্থানের সময় পুলিশের পোশাক পরিহিত লোকদের হিন্দি ভাষায় কথা বলতে শুনেছেন।

সাক্ষ্য দিয়েছেন শহীদ ইয়াকুবের চাচা নাজিমুদ্দিন রোডের শহীদ আহম্মেদ (৪০) ও শহীদ ইসমামুল হকের ভাই চট্টগ্রামের মহিবুল হক (২১)। ইয়াকুব ঢাকার নিউমার্কেটের একটি প্রতিষ্ঠানের ডেলিভারিম্যান ছিলেন এবং নাজিমুদ্দিন রোডের মিলি গলির বাসিন্দা ছিলেন। সাক্ষীদের জেরা করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

এ পর্যন্ত মামলায় ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে ২০ আগস্ট। ট্রাইব্যুনাল-১-এর নেতৃত্বে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার, অন্য দুই সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী এ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

মামলায় আটজন আসামির মধ্যে সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ্ আলম মো. আখতারুল ইসলাম এবং রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল পলাতক। গ্রেফতার অবস্থায় রয়েছেন শাহবাগ থানার সাবেক পরিদর্শক মো. আরশাদ হোসেন, সাবেক কনস্টেবল মো. সুজন হোসেন, ইমাজ হোসেন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।

মা রহিমা আক্তার জানান, “আমার ছেলে চানখাঁরপুল নাজিমুদ্দিন রোডে আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়। খবর শুনে আমি গলিতে যাই, কিন্তু প্রতিবেশীরা আমাকে যেতে দেয়নি। পরে লাশ খাটিয়ায় আনা হয়। হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য প্রতিবেশীর মোবাইলে ধারণ হয়েছে। আমি চাই হত্যাকারী ও নির্দেশদাতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।” তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ আরও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেছেন নির্দেশদাতা হিসেবে।

চিকিৎসকরা ইসমামুলের ময়নাতদন্ত না করার কারণে, ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে তার লাশ চট্টগ্রামে পরিবারের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন জানাজা শেষে ইসমামুলের মরদেহ নিজ গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়।

সাক্ষীর দাবি অনুযায়ী, ভাইয়ের হত্যাকারী ও নির্দেশদাতাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন পরিবার।