ঢাকা সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

হামাসকে সাধারণ ক্ষমার ইঙ্গিত নেতানিয়াহুর

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৫, ০৮:৫৪ পিএম
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি- সংগৃহীত

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস যদি তাদের হাতে থাকা অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দেয়, তবে গোষ্ঠীটিকে সাধারণ ক্ষমা করতে প্রস্তুত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এই বক্তব্য তার দীর্ঘদিনের অবস্থানের পরিবর্তন। কারণ এর আগে তিনি যুদ্ধ শেষ করার জন্য হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূল করা ছাড়া সম্ভব নয় বলে বারবার দাবি করেছিলেন।

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনার ফাঁস হওয়া তথ্য নিশ্চিত করেন। 

তিনি বলেন, ‘যদি হামাস নেতারা দেশত্যাগ করে ও যুদ্ধ শেষ করে সমস্ত জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তাহলে আমরা তাদের ছেড়ে দেব।’ এটি পরিকল্পনার অংশ এবং এখনই পুরো বিবরণ প্রকাশ করা সম্ভব নয়।

টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যদি ইসরায়েলের জনসমক্ষে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বাকি ৪৮ জন জিম্মি মুক্তি পায়, তবে ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী হামাস নেতাদের গাজা থেকে নিরাপদে বের হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। বিনিময়ে, ইসরায়েল যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত শত শত ফিলিস্তিনি বন্দি, এক হাজারের বেশি আটক গাজাবাসী এবং সংঘাতে নিহত কয়েকশ ফিলিস্তিনির দেহাবশেষ মুক্তি দেবে।

পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হামাস সদস্যরা সাধারণ ক্ষমা পাবেন। যারা গাজা ত্যাগ করতে চায়, তাদের তৃতীয় দেশে নিরাপদে যাওয়ার পথ দেওয়া হবে। এ ছাড়া তাৎক্ষণিক মানবিক সহায়তা প্রদান ও কাতারের ওপর আর কোনো হামলা না করার জন্য ইসরায়েল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে নেতানিয়াহু এই ধারাটি নিয়ে আলোচনা করবেন, তবে ইসরায়েল তা পূর্ণভাবে গ্রহণ করবে কি না তা এখনই নিশ্চিত করেননি।

নেতানিয়াহুর এই বক্তব্য এসেছে গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত বোমাবর্ষণের সময়। গাজা শহরের স্থল অভিযানের কারণে আশেপাশের অঞ্চল ধ্বংস হয়েছে এবং লাখ লাখ ফিলিস্তিনি তাঁবু ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। নেতানিয়াহুর মতে, হামাসকে ধ্বংস করাই এই অভিযানের মূল লক্ষ্য।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে এক হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫০-এরও বেশি জিম্মি করে। এরপর থেকে ইসরায়েলের অভিযানে ৬৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যা জাতিসংঘের একটি কমিটি গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এই ঘটনায় বিশ্বব্যাপী ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে ও কিছু দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করেছে।

সূত্র: টেলিগ্রাফ, নিউ ইয়র্ক পোস্ট, আরটি