জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান নিয়ে ক্রমাগত বিতর্কিত ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমানকে শোকজ নয়, বহিষ্কার করে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে জুলাই ঐক্যের ৯৭টি সংগঠন।
রোববার (২৪ আগস্ট) রাত পৌনে ৮টায় এক যৌথ বিবৃতি এ দাবি জানানো হয়েছে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিএনপির চেয়ারপারর্সন বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক উপদেষ্টা, ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা, সাবেক মুজিব বাহিনীর প্রধান ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক সেক্রেটারি ও সভাপতি ফজলুর রহমানের দেওয়া ‘৫ আগস্ট’ নিয়ে দেওয়া বক্তব্য জুলাই আগস্টে শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানির সামিল। অবিলম্বে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চব্বিশের ৫ আগস্ট নিয়ে ফজলুর রহমানের দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। একই সময়ের মধ্যে ফজলুর রহমানের সকল সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করে গ্রেপ্তার করতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ছাত্র জনতাকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দিবে গণঅভ্যুত্থানের বৃহত্তর ঐক্যবদ্ধ শক্তি ‘জুলাই ঐক্য’।
এতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমের অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে ‘৫ আগস্টের ঘটনাপ্রবাহ ঘটিয়েছে কালো শক্তি, যারা ৫ আগস্ট ঘটিয়েছে, তাদের আমি নেতা বলতে চাই না, তারা কেবল অভিনেতা। মানুষ এখন বুঝে গেছে, এরা রাজাকারের বংশধর’ এই বক্তব্য দেন নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতা ফজলুর রহমান। জুলাই ঐক্য মনে করে তার এই বক্তব্য সরাসরি গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটে আঘাত করেছে।
ফজলুর রহমানের এই বক্তব্য শুধু জুলাই-আগস্টের আন্দোলনেক বিতর্কিত নয় বিএনপির দীর্ঘদিনের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে। জুলাই বিপ্লব নিয়ে ফজলুর রহমানের ক্রমাগত কুরুচিপূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য গণঅভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থি। আমরা জানতে পেড়েছি এই ঘটনায় তাকে শোকজ করা হয়েছে। বাংলাদেশে শোকজের রাজনীতি যুগযুগ ধরে চলছে। এই ঘটনা যেন শুধু শোকজে থেমে না থাকে তার জন্য বিএনপিকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দীর্ঘ ১৫ বছর আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের সময় বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ফজলুর রহমান বাধাহীনভাবে কাটিয়েছিলেন। যখন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা পরিবার ছেড়ে পালিয়ে ছিলেন তখনও ফজলুর রহমানরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। প্রায় দুই হাজার ছাত্রজনতার প্রাণের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশে স্বাধীনভাবে কথা বলতে পাড়ছেন বিএনপিসহ দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। রাজনৈতিক দলগুলোকে মনে রাখতে হবে সেই কথা বলার স্বাধীনতা মানে মুজিববাদের পুনরুত্থান নয়। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর এখনও যারা ফ্যাসিবাদের চর্চা করছেন, আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের দুঃস্বপ্ন দেখেছেন, একই সঙ্গে ভারতের ভাষায় কথা বলার চেষ্টা করছেন সকল দল এবং ব্যক্তিকে হুঁশিয়ারি করে দিচ্ছি। জুলাই শেষ হয়নি। প্রয়োজনে আমরা চূড়ান্ত বিপ্লবের পথ বেছে নিব। তখন কোনো আদর্শই জুলাই শক্তির সামনে টিকে থাকতে পারবে না।
বিবৃতিতে যুক্ত জুলাই ঐক্যের সংগঠনগুলো হলো-
আপ বাংলাদেশ, ইনকিলাব মঞ্চ; জুলাই রেভলুশেনারি অ্যালায়েন্স; জুলাই রেভলুশ্যনারি জার্নালিস্ট অল্যায়েন্স; পুনাব; পুশাব; সাধারন আলেম সমাজ; জাগ্রত জুলাই; জুলাই মঞ্চ; বাংলাদেশ কওমি ছাত্র সংগঠন (কছাস); বৈষম্য বিরোধী কওমি ছাত্র আন্দোলন; জুলাই ছাত্র জনতা সংসদ; জুলাইয়ের সাংবাদিকেরা; বাংলাদেশ কারিগরি ছাত্র পরিষদ; জেন জি- স্টুডেন্ট ইউনিটি; জুলাই সাংস্কৃতিক সংসদ; সোসাল সাইন্স ক্লাব, ঢাকা কলেজ; রোটার্যাক্ট ক্লাব অফ ইসলামিক ইউনিভার্সিটি; সিসিএস- জাতীয় ভোক্তা অধিকার; সোচ্চার ষ্টুডেন্টস নেটওয়ার্ক, ঢাবি।
রাইজিং ইয়ুথ রামপুরা; পিপলস রিফর্ম অ্যালাইনস (পিআরএ); বিআই; এনএপিইউএস; একতার বাংলাদেশ; তরুন; জুলাই বিপ্লবী যুব সংগঠন; ফরিদগঞ্জ লেখক ফোরাম; জুলাই চেতনা; জুলাই সংগ্রাম পরিষদ; গণঅভ্যুথান রক্ষা আন্দোলন; বি আই ই ডি স্পোর্টস ক্লাব; ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র জনতা মঞ্চ; কাজির খাল সুপার স্টার ক্লাব; সানরাইজ স্পোর্টিং ক্লাব; জুলাই রেভ্যুরেশনারি ক্লাবদ; ছত্রিশ জুলাই ঐক্য পরিষদ; বাংলাদেশ সংস্কার আন্দোলন (বিএসএ); বাংলাদেশ সচেতন শিক্ষার্থী সমাজ; যাত্রাবাড়ী জুলাই ঐক্য পরিষদ; নিরাপদ বাংলাদেশ চাই; সোসাইটি ফর স্টুডেন্ট ডেভেল্পমেন্ট।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন