সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশেষ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২৫, ১০:৫৩ এএম

দেশের তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে হঠাৎ অস্থিরতা

বিশেষ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২৫, ১০:৫৩ এএম

ছবি- সংগৃহীত

ছবি- সংগৃহীত

হঠাৎ করেই দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। এক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংঘর্ষ না থামতেই আরেকটিতে শুরু হয়। সংকট নিরসনে সামগ্রিকভাবে পরিকল্পনা করে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না সংশ্লিষ্টরা।

গেল কয়দিন ধরে তিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরিস্থিতি এমন যে, কেবল কোনো ঘটনা ঘটলে তার পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। তাতে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বরং সংঘর্ষ পরবর্তী সংকট আরও বিস্তৃত হচ্ছে।

সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা- গণঅধিকার পরিষদ এবং দলটির সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার পরপরই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যায়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয় ও বহিরাগতদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।  বিশেষ করে, চবির ঘটনা দেশে নজিরবিহীন। 

এ ছাড়া, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর দুটি ইতোমধ্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, অন্যটিতে অস্তিরতা বিরাজ করছে। ফলে দেশের তিন বিশ্ববিদ্যালয়েই একধরনের সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

গত শনিবার (৩০ আগস্ট) রাতে চবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের স্থানীয়দের সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় স্থানীয় বাসার এক দারোয়ান কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে মারধর করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। পরের দিন স্থানীয়দের সশস্ত্র হামলায় অন্তত দেড় হাজার শিক্ষার্থী আহত হন। এরমধ্যে শতাধিক শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর। এদিন দুপুরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন চবি এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে, যা সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টা পর্যন্ত বহাল থাকবে বলে জানানো হয়। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে যৌথবাহিনী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

চবি মেডিকেল সেন্টার থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য তিন শতাধিক আহত শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পর রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর সদরের এসপি ও ডিসির উপস্থিতিতে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করেছে বহিরাগতরা। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়।

জানা গেছে, কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছিলেন। আন্দোলন চলাকালে রাত ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র হাতে বহিরাগত দুর্বৃত্তরা নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে মিলনায়তনের তালা খুলে ভেতরে আটকা শিক্ষকদের বের করে আনে। ঘটনার পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে রাত সাড়ে ৯টায় জরুরি সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থীদের সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সন্ধ্যা থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মোড় এলাকায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের অবস্থান দেখা যায়। পরে তারাই প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে শিক্ষার্থীদের ওপর এ হামলা চালায়।

প্রসঙ্গত, কম্বাইন্ড ডিগ্রি বাস্তবায়নে আয়োজিত একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত ফলপ্রসূ না হওয়ায় সভায় উপস্থিত উপাচার্যসহ সব শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে তালা ঝুলিয়ে দেয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ২২৭ জন শিক্ষক অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এর আগে, বেলা ১১টায় কম্বাইন্ড ডিগ্রি ইস্যু সমাধানে একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভা শুরু হয়।

এদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণের শেষ দিন সব কার্যক্রম পণ্ড করে দেন শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তারা রাকসুর কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে তালা মেরে বিক্ষোভ করেন। শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহীর নেতৃত্বে রাকসু নির্বাচনের সব কার্যক্রম ভেস্তে দেওয়া হয়; ভাংচুর করা হয় চেয়ার-টেবিল। এরপর নির্বাচন কমিশন অফিসে তালা লাগিয়ে অবস্থান শুরু করে শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।

পরে সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে আসলে শাখা ছাত্রদল নেতাকর্মীদের বাধার সম্মুখীন হন। আম্মার নিজেও তালা মারা গেটের সামনে অবস্থান করা শুরু করেন। এ সময় বিএনপিপন্থি শিক্ষকরা এসে শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করেন। 

এদিকে রাকসু নির্বাচনের মনোনয়ন তুলতে এসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন রাবি শাখা ছাত্রশিবির। বক্তব্য চলাকালে শাখা সভাপতির বুকে বোতল ছুঁড়েন অজ্ঞাত এক ব্যক্তি। তার নাম পরিচয় জানা যায়নি। সব মিলিয়ে রাবি ক্যাম্পাসে বর্তমানে উত্তেজনা ও অস্থিরতা বিরাজ করছে।

Link copied!