ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের রিপোর্টে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের উন্নয়ন

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৫, ০২:৪৯ এএম
ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ছবি- সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্রের অবনতির মধ্যেও বাংলাদেশ গণতন্ত্রের পথে উত্তরণের একটি ইতিবাচক উদাহরণ হিসেবে উঠে এসেছে। দেশের অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে, তা নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকার বিষয়ক উপ-কমিটির একটি প্রতিনিধিদল ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

গত ১৬ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সফর শেষে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল।

প্রতিবেদন উপস্থাপনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের সফরকৃত প্রতিনিধিদলের প্রধান মুনির সাতোরি। তিনি জানান, ‘সফরের দুটি প্রধান উদ্দেশ্য ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম পর্যালোচনা এবং রোহিঙ্গা সংকটের গুরুত্ব পুনঃউত্থাপন।’

মুনির সাতোরি বলেন, ‘সংস্কার কার্যক্রমে এখনো কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে, যেখানে আমরা আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছি। আর রোহিঙ্গা সংকট যেন বিশ্ব মানচিত্র থেকে ভুলে যাওয়া না হয়, সে জন্য এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজনৈতিক এজেন্ডায় পুনরায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’

প্রতিনিধিদলের সদস্য ইজাবেল উইসেলার-লিমা বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র অবনতির মুখে বাংলাদেশ একটি পরিবর্তনশীল পথ দেখিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিযোগিতামূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে কাজ করছে, যা গণতন্ত্রের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

তিনি রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গেও সতর্ক করে বলেন, ‘কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির বিশ্বের সবচেয়ে বড় শিবির, যেখানে মিয়ানমার দায়িত্ব নিচ্ছে না এবং বাংলাদেশও সীমাবদ্ধ।’

আরেক সদস্য আরকাদিউজ মুলারজিক মন্তব্য করেন, ‘রোহিঙ্গা শিবিরে সবচেয়ে বেশি মানবিক সাহায্য এসেছে ইউরোপের দেশগুলো থেকে, মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর প্রতিশ্রুতি নগণ্য, যা আশ্চর্যজনক।’ তিনি ভারতের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলমান বলে জানান।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে ক্যাটারিনা ভিয়েরা বলেন, ‘দেশটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং একটি স্বচ্ছ, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজনের সুযোগ রয়েছে। তবে ধর্মীয়, লিঙ্গ ও নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু ও নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের সংস্কারকর্মীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে গণতান্ত্রিক কাঠামো গঠনে গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে পারে। আন্তর্জাতিক সহায়তায় বাংলাদেশ আগামী দিনে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’

প্রতিনিধিদল অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক দল, বেসরকারি সংস্থা, নাগরিক সমাজ ও শ্রমিক প্রতিনিধি এবং রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনসহ মাঠ পর্যায়ের বহু পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছে।