গত কয়েক দিনের অনবরত বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে উজানে থাকা ফ্লাড বাইপাসসহ ঘরবাড়ি ও স্থাপনা। নদী এলাকায় বিভিন্ন রাস্তার ওপর দিয়ে বইছে পানি। ফলে পানিবন্দি মানুষ নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে।
সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হলেও ভাটিতে এখনো পানির চাপ বাড়ছে। গতকাল রোববার রাতে পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপরে গিয়ে ভাটির লোকালয়ে প্রবেশ করে প্লাবিত করে। তীব্র স্রোতে এখনো পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এ ছাড়াও পানির তোড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে পানি বৃদ্ধি পেয়ে লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নিচু এলাকায় বুক পরিমাণ পানিতে তলিয়ে আছে বাড়িঘর। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব মানুষ নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, তিস্তা তীরবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল রাতেই প্লাবিত হয়েছে। এখানকার মানুষজন স্পার বাঁধসহ উঁচু এলাকায় গরু-ছাগল নিয়ে রাত কাটিয়েছে। এ ছাড়াও নতুন নতুন লোকালয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত করছে।
এসব এলাকায় কাঁচা-পাকা সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় যেকোনো সময় রাস্তাঘাট ধসে যেতে পারে। পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়েছে অনেক স্থাপনা ও সড়ক।
তিস্তা এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে পানি ঢুকতে শুরু করে। রাতেই বাড়িতে বুকসমান পানি উঠে যায়। গরু-ছাগল নিয়ে কোনোরকমে উঁচু রাস্তায় অবস্থান নিয়েছি।’
মহিষখোচা গোবর্ধন এলাকার ইউপি সদস্য মতি মিয়া বলেন, ‘পাকা সড়কের ওপর দিয়ে পানি ঢুকছে। এই রাস্তা দিয়ে নদী এলাকার হাজারো মানুষ যাতায়াত করে, যানবাহন চলে। এখন সব বন্ধ হয়ে গেছে। এই সড়ক ভেঙে গেলে মানুষের যাতায়াত সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে।’
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, ‘কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। তীরবর্তী এলাকার মানুষদের অগ্রিম জানানো হয়েছে যেন তারা প্রস্তুত থাকে। ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন