সোমবার, ০৬ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২৫, ১০:২৭ এএম

ক্রিকেট বোর্ড কেন মামাবাড়ির রোড?

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২৫, ১০:২৭ এএম

এআই দিয়ে বানানো ছবিটি।

এআই দিয়ে বানানো ছবিটি।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন এখন আর কোনো খেলাধুলার বিষয় নয়, যেন এক প্রকার ‘মৌচাক মাস্টারি’! ব্যাট-বল নয়, লড়াইটা এখন ২৫টা চেয়ার ঘিরে- যার প্রতিটা যেন মধুতে ভরা। পরিচালক হবার এই চেয়ারে বসা মানে শুধু দায়িত্ব না, বরং একেকটা ‘স্বর্ণখনি’ খুলে যাওয়া। কিন্তু কী আছে এই বিসিবির চেয়ারগুলোতে? কিসের এত টান?

প্রার্থী জিজ্ঞেস করলেই বলে, ‘ভাই, ক্রিকেটকে বাঁচাতে হবে!’ কেউ বলে, ‘জীবনটাই তো ক্রিকেটকে দিয়ে দিলাম।’ শুনে চোখে পানি এসে পড়ে- আবেগে না, হাসিতে! কারণ, এইসব ‘ক্রিকেট রক্ষাকর্মী’দের অনেকেই আবার খুঁজে পাওয়া যায় না ক্লাব পর্যায়ে, জেলা-উপজেলায়, এমনকি মাঠে ক্রিকেট খেলা দেখার সময়ও না। মাঠে দেখা যায় শুধু নির্বাচনের সময়, ভোটের ক্যালেন্ডার বের হলে!

বোর্ডে ঢুকলেই যেন এক ‘পরিচিতির প্যারাসুট’ গায়ে চড়ে বসা যায়। একজন ব্যবসায়ী যদি বিসিবির পরিচালক হন, তো পত্রিকায় ছবি, টিভিতে সাক্ষাৎকার, গলদঘর্ম ট্যাক্স অফিসারও তখন বলেন, ‘স্যার, অনেক কাজ করছেন!’ আর একজন রাজনীতিবিদ যদি বোর্ডে ঢুকে পড়েন, তখন তো কথাই নেই- জনগণের চোখে তিনি দেশের ক্রিকেটের মহাসচিব! এলাকার মানুষ ভাবে, ‘আমাদের এমপি আবার ক্রিকেট বোর্ডেও! বাহ, চাঁদ উঠছে এবার!’

বিদেশ সফরের ব্যাপারেও কম যায় না বোর্ড। আগে একজন-দুজন কর্মকর্তা যেতেন, এখন একেকটা সিরিজে গোটা পিকনিক দল যায়। বিজনেস ক্লাস, পাঁচ তারা হোটেল, আর খেলা দেখা বাদ দিয়ে শপিং আর সেলফিতে ব্যস্ত থাকেন অনেকে। দলের পারফরম্যান্স খারাপ হলেও, পরিচালকদের পাসপোর্টে ছাপ পড়ে ঠিকই।

আর দুর্নীতি? সে তো যেন এ গল্পের বোনাস ট্র্যাক। কেউ বোর্ডে না থাকলে দুর্নীতির বুলি কপচান মুখ ভরে। কিন্তু ক্ষমতায় এলেই সব অভিযোগ হঠাৎ মিউট হয়ে যায়। কারো ফাইল খোলা হয় না, তদন্ত নামে কিছু থাকে না- দেখে মনে হয়, দুর্নীতির দলিলগুলো আসলে ব্ল্যাকমেইল করার গুপ্ত চাবি। দরকার হলে বের হয়, না হলে আলমারিতে ঘুমায়।

বোর্ডের পরিচালক হতে হলে ক্লাবের কাউন্সিলর লাগবে। এখন অনেক ক্লাবেই দেখা যায়, এক মৌসুমের খরচ ধরিয়ে দিলেই কাউন্সিলর বানিয়ে দেওয়া হয়। যারা টাকা দিলেন, তাদের অনেকেই ক্রিকেট বোঝেন না- শুধু বোর্ডে বসে কীভাবে মধু চুষতে হয়, সেটাই শিখে এসেছেন। হেরে গেলে তারা ক্লাবের দায়িত্বও নেন না- কারণ, তাদের কাজ তো শেষ!

সবচেয়ে বড় প্রশ্ন- যারা বলেন, ‘ক্রিকেটের সেবা করতে এসেছি’, তারা নিজেরা কখনো এক টাকাও ক্লাব বা জেলা ক্রিকেটে খরচ করেছেন কি না? তা নিয়ে ব্যাপক সন্দেহ। মাঠে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি হলে ছাতা ধরেননি, গ্যালারিতে বসে একটা টিকিট কেটেও খেলা দেখেননি- তবু বিসিবি পরিচালক হতেই হবে! কারণ, সেখানে ‘সেবার’ নাম আছে ‘সুযোগ’।

নির্বাচনের সময় এত সংঘাত কেন? সবাই তো বলে, ‘আমার একটাই লক্ষ্য- ক্রিকেট।’ তাহলে এত ঝগড়া, এত মামলা-মোকদ্দমা কেন? কেউ কাউকে ভালো বলতে পারে না, সবাই ব্যস্ত একে-অন্যকে ফাঁসাতে। শুনে মনে হয়, ক্রিকেট নয়, এখানে বুঝি লাল রঙের হীরা পাওয়া গেছে! কার আগে কে সেটা লুফে নেবে, সেই প্রতিযোগিতা চলছে।

Link copied!