তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলমের বক্তব্য বিকৃতি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বিষয়টি শনাক্ত করেছে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)’র ফ্যাক্টচেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম ‘বাংলাফ্যাক্ট’।
বাংলাফ্যাক্টের অনুসন্ধান বলছে, তথ্য উপদেষ্টার বক্তব্য বিকৃত করে বিভ্রান্তিকরভাবে উপস্থাপন করেছে একটি টেলিভিশন চ্যানেল।
অনুসন্ধান টিম জানায়, সম্প্রতি পিআইবি’র প্রকাশনা উৎসব ও আলোচনা সভায় বক্তারা মব ভায়োলেন্স ও গণমাধ্যমের ন্যারেটিভ ইত্যাদি বিষয়ে কথা বলেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তার বক্তব্যে মব ভায়োলেন্স ও এ ব্যাপারে গণমাধ্যমের ন্যারেটিভ নিয়ে আলোচনা করেন।
তার সেই বক্তব্যের কিছু অংশ আলাদা ও বিকৃতি করে বিভ্রান্তিকরভাবে উপস্থাপন করেছে দেশ টিভি। গণমাধ্যমটির বানানো ফটোকার্ডে যে বাক্যটি লেখা হয়েছে, মাহফুজ আলম তা বলেননি। এমনকি ফটোকার্ডে লেখা ‘আজ তা প্রতীয়মান হচ্ছে’ কথাটুকুও তার বক্তব্যের কোনো অংশে নেই বলে বাংলাফ্যাক্ট জানিয়েছে।
মাহফুজ আলম তার পূর্ববর্তী বক্তাদের আলোচনার জের ধরে বলেন, ‘প্রথমে শুরু করতে চাই, মব ভায়োলেন্স শব্দটা দিয়ে। প্রথমে মিডিয়া যখন মবের আলোচনা করতেছিল এবং রাষ্ট্রের যখন নিরাপত্তার ইস্যু, আইনশৃঙ্খলার ইস্যু, এটা নিয়ে আমি একটু বলি...জুলাইয়ের একজন কর্মী হিসেবে এবং রাষ্ট্রের একজন দায়িত্বশীল হিসেবে কিছু কথা বলি। আমাদের এখন সময় এসেছে যে কথাগুলো স্পষ্ট করার যে, কী ঘটেছিল এবং কী ঘটতেছে।’
‘মব ভায়োলেন্স’ নিয়ে ন্যারেটিভ তৈরি করে কীভাবে এটিকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ফলাফল হিসেবে গণমাধ্যমে দেখানো হচ্ছে, তা দেখিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘মব ভায়োলেন্স জিনিসটা, এখন এক বছর পরে এসে যেটা আমাদের অনুভূতি এবং উনাদের অভিজ্ঞতা যেটা বলতেছে, এটা এখন ইকুইটেড (মিলিয়ে দেখা) হয়ে যাচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সাথে। এমন মনে হচ্ছে যে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরে যেহেতু মব ভায়োলেন্স হয়েছে, সব জায়গায় ছাত্ররা বা সাধারণ নাগরিক, কোথাও কোথাও কোনো ধর্মীয় সেক্ট বা গোষ্ঠী ভায়োলেন্স করেছে। (এমনকি) কোনোরকম রাজনৈতিক সভা-সমাবেশও করেছে ওদেরকেও মব বলা হয়েছে। বিশেষ করে দেখেন, একটি দলের প্রধান, নুরুল হক নুর, উনাকে মারধরের ক্ষেত্রে। এটা ন্যারেটিভটা যেটা আছে আরকি।’
বক্তব্যের এই অংশে নুরুল হক নুরদের আন্দোলনকেও ‘মব’ আখ্যা দিয়ে ন্যারেটিভ তৈরির সমালোচনা উঠে আসে। দেশটিভি’র বানানো ফটোকার্ডে যে বাক্যটি লেখা হয়েছে, তা মাহফুজ আলমের বক্তব্য থেকে ভিন্ন।
গত বছর থেকে ভারতীয় গণমাধ্যম ও ভারত থেকে পরিচালিত কিছু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পেইজ, পাশাপাশি দেশ থেকে পরিচালিত বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকেও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, খাগড়াছড়ি পরিস্থিতি ও ২০২৪ সালের আন্দোলনে অংশ নেওয়া সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে গুজব ও ভুয়া তথ্য প্রচারের প্রবণতা বেড়েছে বলে জানিয়েছে ফ্যাক্টচেকিং সংস্থাগুলো।
ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া শত শত ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে বাংলাদেশের ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান বাংলাফ্যাক্ট। বাংলাদেশে চলমান গুজব, ভুয়া খবর ও অপতথ্য প্রতিরোধ এবং জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ায় দায়িত্ব পালন করছে বাংলাফ্যাক্ট।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন