ঢাকা বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫

নির্বাচনে হিম্মতের সঙ্গে কাজ করতে হবে, ইউএনওদের ইসি

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২৫, ১২:০৩ পিএম
নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবন। ছবি- সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ‘কনসিকন্সিয়াল’ (গুরুত্বপূর্ণ পরিণতিযুক্ত) উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) প্রস্তুত থাকার এবং কারো পক্ষে কাজ না করার কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া অস্তিত্বের প্রশ্নে হিম্মতের সঙ্গে কাজ করতেও ইউএনওদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২২ অক্টোবর) নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে শুরু হওয়া ইউএনওদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এবং আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।

শুরুতে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির স্বার্থে ইউএনওদের এখনই প্রস্তুত থাকতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে এই সুযোগ কাজে লাগানোরও আহ্বান জানানো হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তপশিল ঘোষণার পর হয়তো সার্বিক বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের হাতে চলে আসবে। এটার জন্য আমরা অপেক্ষা করব না। পরিবেশ তৈরির আবহটা এখন থেকেই তৈরি করতে হবে। প্রশাসন কঠোরভাবে কাজ করে যাবে। আমরা সমন্বিতভাবে মাঠ প্রশাসন একটা দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণস্বরূপ নির্বাচন করতে পারি একবার দেখিয়ে দেব।’

নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, ‘আগে পোস্টাল ভোটিং অকার্যকর পদ্ধতি ছিল এখন পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রথমত পোস্টাল ভোটিংয়ের অ্যাপ্লিকেশন পদ্ধতিটা আমরা অনলাইনে নিয়ে গেছি। অ্যাপ্লিকেশনটা এই মুহূর্তে ট্রায়ালে। আশা করছি, ১৬ নভেম্বর আপ্লিকেশনটা সবার জন্য লঞ্চ করে দেব। প্রবাসীদের ব্যবহৃত ব্যালট ও আমাদের দেশে ব্যালট ডিফারেন্ট হবে। আমাদের ব্যালটে না ভোটসহ ১১৬টি প্রতীক থাকবে। তপশিল ঘোষণার আগেই প্রবাসীদের ভোটের অ্যাপ্লিকেশন প্রসেস শুরু হবে। কোনো কোনো দেশে একবার নিবন্ধন করলেই বছরের পর বছর ভোট দেওয়া যায়। কোনো কোনো দেশে একটা সময়কালের জন্য বা কোনো কোনো দেশে একটা ভোটকে টার্গেট করে এটা করা হয়। তবে আমরা শুধু একটা ভোটকে টার্গেট করেই এটা করেছি। এই বিশেষ প্রসেস আগে থেকেই করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। রাষ্ট্র এবং জাতি হিসেবে এবারের ইলেকশন সব থেকে নিরপেক্ষ ও অবাধ হবে। সুতরাং এই গুরুত্বটা অনুধাবন করেই আমরা মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করব। নির্বাচনের মাঠে যারা আছেন তারা যেন আচরণবিধি মেনে চলেন। সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ এখন থেকে তৈরি করতে হবে।’

অন্যদিকে ইসি আনোয়ারুল ইসলাম সরকার সরকারি কর্মকর্তাদের মনোবল ও সততার বিষয়ে জোর দেন। তিনি স্বীকার করেন, ‘৫ আগস্টের পর কিছুদিন অস্থিতিশীল ছিল, অমুক তমুকের কথায় অনেক কিছু হয়েছে। কর্মকর্তাদের এখন আর সে ভয় নেই।’

তিনি বলেন, ‘দুইটা কেয়ারটেকার সরকারের সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষমতায় স্বাধীনতা পেয়েছি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার তৈরির আবহ হচ্ছে দেখছি। আপনাদের ভয় নেই, আমরা পাশে আছি।’

সরকারি কর্মকর্তাদের মান ভূলুণ্ঠিত হয়েছে মন্তব্য করে তিনি এই নির্বাচনকে ‘এই সরকারের অধীনে সততা নিষ্ঠা দেখানোর সুযোগ’ হিসেবে দেখেন। আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘ভয় পাওয়া যাবে না, হিম্মতের সঙ্গে কাজ করতে হবে অস্তিত্বের প্রশ্নে।’

নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, দু’পক্ষ থেকে ধরতে হবে, ধরলে ছাড়া যাবে না নির্বাচনের আগে। মোবাইল কোর্ট স্বচ্ছ হতে হবে। মোবাইল কোর্ট নিয়মিত করতে হবে।