ময়মনসিংহের নান্দাইলে পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে প্রায় ৩০ লাখ টাকার শিং মাছ নিধনের অভিযোগ উঠেছে। মাছের পরিমাণ হবে প্রায় তিনশ মণ।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দিবাগত রাতে উপজেলার গাঙাইল ইউনিয়নের অরণ্যপাশা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত মাছচাষি আবুল কালাম (৪৫)।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পুকুরটিতে থাকা প্রায় সব শিং মাছ মরে ভেসে আছে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
স্থানীয়রা জানায়, এ এক ভয়ানক অবস্থা। এক সাথে এত মাছ নিধন এর আগে কখনো ঘটেনি। এতে মাছচাষি কালামের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
পুকুরের পাশে বসে আহাজারি করছিলেন কালাম। তিনি বলেন, আমার তো সব শেষ হইয়া গেছে। এর চেয়ে আমারে মাইরাললে ভালা অইতো। অহন আমি কিবায় ১৮ লাখ টেহা ঋণ পরিশোধ করবাম। কিবায় চলবাম।
ক্ষতিগ্রস্ত মাছচাষি আরও জানান, গত মে মাসের শেষদিকে তার বাড়ির পাশে থাকা ২২ শতাংশের একটি পুকুরে ৩ লাখ শিং মাছের রেণু অবমুক্ত করে তা চাষ করে আসছিলেন। পুকুর পাহারা নিজেই দিতেন। আর সপ্তাহখানেক পরেই বাজারজাত করার পরিকল্পনা নিচ্ছিলেন। যার বাজারমূল্য হতো প্রায় ৩০ লাখ টাকা।
এমনাবস্থায় শুক্রবার রাত ৯টার দিকে তিনি পুকুর পাড়ে গিয়ে টর্চ লাইট জ্বালিয়ে দেখেন বেশ কিছু মাছ কিনারায় এসে ভেসে আছে। পরে ঘটনাটি ভালোভাবে দেখতে তিনি বিদ্যুতের আলো জ্বালিয়ে দেখতে পান পুরো পুকুরেই মাছ ভাসছে। এতে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। কিছুক্ষণের মধ্যে সকল মাছ মরে যায়। সেই সাথে চারপাশে একধরনের ঝাঁঝালো গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে।
তার অভিযোগ, পাশের বাড়ির গিয়াস উদ্দিনের ছেলে সেলন মিয়া কয়েকদিন আগে তুচ্ছ ঘটনায় তাকে প্রকাশ্যে মারধর করে। পরে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। এর মধ্যে বলেছিল, তার বড় সর্বনাশ করবে। এতে ধারণা হয়, সেলন ও তার দলবল পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে এ সর্বনাশ করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সেলন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ঘটনার দিন সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত তিনি এলাকা ছেড়ে থানায় একটি সালিশে ছিলেন। তিনি এ ধরনের ন্যাক্কারজনক কাজে জড়িত নন। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে।
নান্দাইল থানার (ওসি) খন্দকার জালার উদ্দিন মাহমুদ জানান, অভিযোগ পেয়েই একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। লিখিত অভিযোগ পেলেই আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন