কোনো লিখিত পরীক্ষা না দিয়েই, এমনকি আবেদন না করেও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) বৈজ্ঞানিক সহকারী পদে চাকরি পেয়েছেন ৪২ জন। এমন চাঞ্চল্যকর তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত শেষে বারির সাবেক মহাপরিচালকসহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের উপ-পরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে মামলার অনুমোদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তদন্তে জানা যায়, ২০১৩ সালে বৈজ্ঞানিক সহকারী পদে ২০টি শূন্যপদে নিয়োগের জন্য লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রাপ্ত নম্বর ও কোটা বিবেচনায় ১৮ জন প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ দেয় বাছাই কমিটি, এবং বারি সে অনুযায়ী নিয়োগ দেয়।
তবে পরে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ওই ১৮ জন ছাড়াও অতিরিক্ত ৪২ জনকে বেআইনি উপায়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এদের মধ্যে ২৫ জন লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হননি, ১৪ জন মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হননি এবং ৩ জন চাকরির জন্য আবেদনই করেননি।
অর্থাৎ মোট ৪২ জন প্রার্থীকে বিধিবহির্ভূতভাবে ও প্রতারণার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
দুদক জানিয়েছে, তৎকালীন মহাপরিচালক ড. রফিকুল ইসলাম মণ্ডল এবং উপ-পরিচালক (প্রশাসন) মো. মোস্তাফিজুর রহমান পরস্পর যোগসাজশে এই প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ সম্পন্ন করেন।
এ ঘটনায় মামলা অনুমোদিত হয়েছে এই দুই কর্মকর্তা এবং নিয়োগ পাওয়া ৪২ জন বৈজ্ঞানিক সহকারীর বিরুদ্ধে। অভিযুক্তরা বর্তমানে বারির বিভিন্ন গবেষণা কেন্দ্র ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন।
দুদকের মামলার আসামিরা হলেন-মো. সেরাজুল ইসলাম, এ কে এম মুসা মণ্ডল, মো. মুকুল মিয়া, মো. নুরুল হাসান, সুয়ান কুমার দাস, মশিউর রহমান, মো. এনামুল ইসলাম, মামুন উর রশিদ, মো. হারুন-উর-রশিদ, মো. আবু সাঈদ ভূঁইয়া, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. আরিফুজ্জামান, সামসুল আলম, জিএইচএম রায়হান কবির, মো. মামুনুর রশিদ, মো. ফরহাদ আহমেদ, মো. আবুজার রহমান, সনজিত কুমার বর্মন, প্রকাশ চন্দ্র সরকার, ফিরোজ আহমদ, মো. ফজলুল হক, মো. সরিফুল ইসলাম, মো. আল মাহমুদ পলাশ, মো. তোত মিয়া মণ্ডল, মেহেদী হাসান, মো. সবুজ বিশ্বাস, মো. সবুজ আলী, মো. মফিজুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, নাসরিন নাহার, মো. হুমায়ুন কবির, মো. গোলাম সাকলাইন, মো. হেলুজ্জামান, তাজুল ইসলাম, মো. মোফাখখারুল আলম, মো. রাজিব হাসান, মো. আসাদ আলী, মোহাম্মদ আলী, সাবিনা ইয়াছমিন, মো. শহিদুল ইসলাম, মো. রবলুল ইসলাম ও ফরিদুল ইসলাম।
তাদের মধ্যে অনেকেই বর্তমানে সরেজমিন গবেষণা কেন্দ্র, উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, মসলা গবেষণা কেন্দ্র, বীজ প্রযুক্তি বিভাগ, আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র ও গম-ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটে কর্মরত আছেন।
দুদকের একজন কর্মকর্তা জানান, এ ঘটনায় নিয়োগপ্রক্রিয়ায় স্পষ্ট অনিয়ম, যোগসাজশ ও জালিয়াতির প্রমাণ মেলেছে। পুরো বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ায় নিষ্পত্তির জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।


সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন