ঢাকা মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫

বুড়িগঙ্গায়ও টিকে আছে ডলফিন!

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৮, ২০২৫, ০৮:১৩ এএম
সারাবিশ্বে ডলফিনের মতো মাছগুলোর আবাসস্থল কমছে। ছবি- সংগৃহীত

দূষণ এবং মাছ ধরার জালের ব্যাপক ব্যবহারে সবধরণের মাছের আবাসস্থল কমেছে। বিশেষ করে ডলফিনের মতো মাছগুলোর আবাসস্থল কমেছে ব্যাপক হারে। তবে এরমধ্যে বেশকিছু ডলফিন টিকে আছে। এমন তথ্যই উঠে এসেছে একটি জরিপে। জরীপ অনুযায়ী, দেশের নদ-নদীতে এখনও টিকে ২ হাজার ৩০৭টি ডলফিন।

২০২৪ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৫টি নদীর ৪ হাজার ৮৯৩ কিলোমিটার এলাকায় এই জরিপ চালানো হয়। যৌথভাবে ওই জরিপ চালায় বন বিভাগ ও ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটি (ডব্লিউসিএস)। যার অর্থায়ন করে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক।

শোনতে অবাক লাগবে, এই জরিপে উঠে এসেছে- মৃতপ্রায় বুড়িগঙ্গায় ডলফিন বেঁচে আছে। ৩টি ডলফিনের খোঁজ পেয়েছে জরীপকারীরা।

জরিপ অনুযায়ী, ডলফিন আছে তুরাগ নদীতেও, সেখানে অন্তত পাঁচটি। বংশীতে আরও বেশি, যেখানে টিকে আছে অন্তত ৭টি। 

আন্তর্জাতিক মিঠাপানির ডলফিন দিবস উপলক্ষে গত রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বন বিভাগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ওই জরিপের তথ্য প্রকাশ করা হয়।

জরিপে উঠে এও উঠে আসে, ভয়াবহ দূষণ এবং মাছ ধরার জালের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে ডলফিনের আবাসস্থল প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে।

জরিপ দলটি বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বংশী, সুরমা এবং কালনী নদীর ৩০৫ কিলোমিটার জরিপ করে। যেখানে তারা ভারী দূষণ সত্ত্বেও মোট ২৭টি গাঙ্গেয় ডলফিন খুঁজে পেয়েছে।

এরমধ্যে বংশীতে সাতটি, তুরাগে পাঁচটি, কালনী ও বুড়িগঙ্গায় তিনটি করে এবং সুরমা নদীতে নয়টি ডলফিন পেয়েছে তারা।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, কিছু নদীতে, বিশেষ করে ঢাকা শহরের চারপাশে প্রবাহিত নদীগুলিতে, তীব্র দূষণের কারণে ডলফিনের সংখ্যা খুবই কম।

জরিপের নেতৃত্বে থাকা ডব্লিউসিএসের কান্ট্রি ডিরেক্টর জাহাঙ্গীর আলম বলেন বলেন, ‘এই নদীগুলোতে ডলফিনরা মূলত খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। তারা সাকার ফিশ খেয়ে বেঁচে আছে।’

জরিপে ২৫টি হটস্পট চিহ্নিত করা হয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটির তাৎক্ষণিক সংরক্ষণ প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ডলফিন দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ডলফিন নদীর স্বাস্থ্যের গুরুত্বপূর্ণ সূচক এবং তাদের বেঁচে থাকা নদী এবং মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।’

‘যখন নদীর পানি দূষিত হয়, তখন এটি ডলফিন এবং মানুষ উভয়ের জন্যই হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। উভয়ের বেঁচে থাকার জন্য নদী পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বন বিভাগকে সহায়তা করার জন্য প্রতিটি জেলায় একটি স্বেচ্ছাসেবী নেটওয়ার্ক গঠন করা হবে যেন বন্যপ্রাণী উদ্ধার ও সুরক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যায়।’

তিনি বলেন, ‘বন্যপ্রাণী রক্ষার জন্য কেবল আইন নয়, মানসিক ও আচরণগত পরিবর্তনও প্রয়োজন।’