আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, নির্বাচনকালে পুলিশের দায়িত্ব হবে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা। কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির প্রতি পক্ষপাত বা দুর্বলতা প্রদর্শনের সুযোগ নেই।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ডিএমপির গ্র্যান্ড কল্যাণ সভায় অফিসার ও ফোর্সদের উদ্দেশে এ নির্দেশনা দেন কমিশনার সাজ্জাত আলী।
তিনি বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বহু বছর ধরে এ দেশের মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। এবার সাধারণ মানুষ যেন অবাধে ও নিরাপদে ভোট দিতে পারেন, সেই পরিবেশ নিশ্চিত করাই হবে পুলিশের প্রধান দায়িত্ব।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘পুলিশ বাহিনী আজ যে অবস্থানে পৌঁছেছে, তা অনেক ত্যাগ ও নিষ্ঠার ফল। আমরা চাই, ২০১৮ সালের কালিমালিপ্ত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় যেসব ব্যক্তি অনিয়ম ও বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন, তাদের আইনের মুখোমুখি দাঁড় করানো হোক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সব ধরনের বেআইনি সমাবেশ ও সহিংসতা মোকাবিলায় সতর্কতা ও সংযম অবলম্বন করতে হবে। জনগণের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি বা দূরত্ব তৈরি হয় এমন আচরণ এড়িয়ে চলাই হবে পুলিশের দায়িত্বশীলতার পরিচায়ক।’
সভায় ডিএমপি কমিশনার জানান, দায়িত্ব পালনকালে আহত কোনো পুলিশ সদস্যের চিকিৎসার পূর্ণ ব্যয়ভার ডিএমপি বহন করবে। পাশাপাশি তিনি সব সদস্যকে শারীরিকভাবে সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকতে খেলাধুলা ও নিয়মিত ব্যায়ামের পরামর্শ দেন।
অধস্তন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আচরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উচিত হবে অধীনস্থদের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকা। একজন ভালো নেতা অধীনস্থদের পাশে থাকেন, দমন করেন না।’
কল্যাণ সভায় ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) মো. সরওয়ার জানান, থানায় আগত সেবাপ্রত্যাশীদের আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে ডিউটি অফিসারের কক্ষে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি) স্থাপন করা হচ্ছে।
অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস. এন. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক থানার ফাঁড়ি, আদালত ও মালখানা ভবন জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। এসব স্থাপনা সংস্কার করে বসবাস ও কাজের উপযোগী করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক কার্যক্রম বেড়ে যাবে। তাই পুলিশের সবাইকে আরও বেশি সতর্কতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।’
ডিএমপি কমিশনার সভার শেষভাগে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘পুলিশের ভাবমূর্তি ও জনগণের আস্থা অর্জনই আমাদের বড় অর্জন। নির্বাচনকে ঘিরে এমনভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে, যাতে জনগণ মনে করে ‘পুলিশ সত্যিই তাদের পাশে আছে।’
ডিএমপির গ্র্যান্ড কল্যাণ সভায় অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স ও প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলী, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. জিললুর রহমানসহ ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার, উপকমিশনারসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার ৮৫০ জন পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।




