শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বাসস

প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২৫, ০৭:১৯ পিএম

১১ জুলাই: ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা, লাঠিচার্জ ও টিয়ার শেল

বাসস

প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২৫, ০৭:১৯ পিএম

২০২৪ সালের ১১ জুলাই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। ছবি- সংগৃহীত

২০২৪ সালের ১১ জুলাই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। ছবি- সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিলের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বানে ২০২৪ সালের ১১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) চতুর্থ দিনের মতো ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, এদিন বিকেল ৩টার পর আন্দোলনকারীরা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক-মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।

শিক্ষার্থীরা বাধা উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যেতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এতে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন।

পুলিশের এই হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার (১২ জুলাই) সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করার কর্মসূচি ঘোষণা দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সব গ্রেডে বৈষম্যমূলক ও অযৌক্তিক কোটা বাতিলের দাবিতে ১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনের ১১তম দিন ছিল বৃহস্পতিবার।

এদিন সকাল থেকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, পুলিশ, ছাত্রলীগ, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায় থেকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে বলা হয়, কোটা নিয়ে আপিল বিভাগের আদেশের পর শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়া উচিত।

এদিন পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয় এমন কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীদের বিরত থাকতে হবে। ব্লকেড কর্মসূচির নামে রাস্তায় নামলে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানায় পুলিশ।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিছিল নিয়ে শাহবাগের দিকে যান শিক্ষার্থীরা। এর আগে থেকেই পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয়।

আন্দোলনকারীরা যাতে শাহবাগ থেকে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের দিকে যেতে না পারেন, সে জন্য রাস্তায় ব্যারিকেড দেয় পুলিশ। সেখানে জলকামান ও সাঁজোয়া যান প্রস্তুত রাখা হয়।

আন্দোলনকারীরা জানান, শিক্ষার্থীরা বেলা সাড়ে তিনটার দিকে মিছিল শুরু করলে পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের বলা হয়, শাহবাগে ব্যারিকেড অতিক্রম করলে পুলিশ ‘অ্যাকশনে’ যাবে। পরে বিকেল পাঁচটার দিকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে সেই ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগ মেট্রো স্টেশনের নিচে অবস্থান নেন। তখন পুলিশ পিছু হটতে বাধ্য হয়।

শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনকারীরা ‘পুলিশ দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘ভয় দেখিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘হামলা করে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

এদিন ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হন রাজধানীর শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ফটকের সামনে বিকেল ৪টায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে ১০ শিক্ষার্থী আহত হন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মূল ফটকে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে শিক্ষার্থীরা তালা ভেঙে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগে যান। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিকেল ৪টার দিকে মিছিল নিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেন এবং সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন।

এদিকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ভবনের সামনে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের মধ্যে নয়জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিন আন্দোলনরত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও এর অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এতে সাতজন আহত হন। পরে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর ২ নম্বর গেটে এসে সড়ক অবরোধ করেন।

সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিকেল ৪টার দিকে ক্যাম্পাসের গোলচত্বর থেকে মিছিল বের করে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করতে গেলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন। এ সময় শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ করলে পাঁচজন আহত হন।

এ ছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-রাজশাহী রেলপথ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খুলনার জিরো পয়েন্ট, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যশোর-রাজশাহী মহাসড়ক এবং গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গোপালগঞ্জ-টুঙ্গিপাড়া সড়ক অবরোধ করে কর্মসূচি পালন করেন। এ ছাড়াও পাবনা-ঈশ্বরদী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা।

এদিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কোটাবিরোধী আন্দোলনকে সরকারবিরোধী আন্দোলন বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘আন্দোলনকারীরা বাংলা ব্লকেড নামে মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে।’

এদিন সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরাতে উপাচার্যদের চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের এ চিঠি পাঠানো হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের দাবি করা হয়, ‘কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা চলছে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘অনেকেই তাদের (আন্দোলনকারীদের) ব্যবহার করার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছে। তাদের ষড়যন্ত্রে পা না দিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিন। তারা মেধাবী ছেলে, কেন তারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যাবে? জানমালের ক্ষতি করলে, অগ্নিসংযোগ করলে, জনদুর্ভোগ করলে তো পুলিশ বসে থাকবে না।’

এদিন ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া রায়ের মূল অংশ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। রায়ে বলা হয়, সরকার চাইলে কোটার হার বা শতাংশ পরিবর্তন, পরিবর্ধন-পরিমার্জন করতে পারবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!