শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বাসস

প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২৫, ০৭:৩৫ পিএম

১৯ জুলাই যাত্রাবাড়ীতে যেন কারবালা নেমে এসেছিল: সৈকত

বাসস

প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২৫, ০৭:৩৫ পিএম

আব্দুল্লাহ আল সৈকত। ছবি- ফেসবুক থেকে

আব্দুল্লাহ আল সৈকত। ছবি- ফেসবুক থেকে

২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ১৯ জুলাই যাত্রাবাড়ীতে যেন কারবালা নেমে এসেছিল। এ দিন শুক্রবার জুমার নামাজের পরে ছাত্র-জনতার ওপর টার্গেট করে স্নাইপার থেকে গুলি চালিয়ে বহু লোককে শহিদ করা হয়। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে জুলাই ম্যাসাকারের সেই স্মৃতি স্মরণ করেছেন যাত্রাবাড়ীতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা আব্দুল্লাহ আল সৈকত।

আব্দুল্লাহ আল সৈকতের জন্ম ২০০১ সালে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে। শৈশব কেটেছে রাজধানীর শনির আখড়া ও যাত্রাবাড়ীতে। লেখাপড়া করছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষে।

যাত্রাবাড়ীতে ছাত্র-জনতার প্রতিরোধকে লেলিনগ্রাদের সঙ্গে তুলনা করা হয়। এই প্রতিরোধের সম্মুখসারির যোদ্ধা সৈকত। ১৯ জুলাই থেকে যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, কাজলা, দনিয়া, রায়েরবাগ এলাকায় আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন সৈকত। গুলিবিদ্ধ যোদ্ধাদের হাসপাতালে নেওয়া ও তাদের চিকিৎসার জন্য কুয়েট ও ব্র্যাকের বন্ধুদের কাছ থেকে ধার নিয়ে তাদের আর্থিক সহায়তা করেছেন।

এ ছাড়া জুলাইয়ের স্মৃতি, তথ্য ও ডকুমেন্ট সংরক্ষণের জন্য তৈরি ‘জুলাই ম্যাসাকার আর্কাইভ’-এর তিনি সহ-প্রতিষ্ঠাতা।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার বিশেষ আয়োজন ‘জুলাই জাগরণ’-এর মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন পলিয়ার ওয়াহিদ।

বাসস : জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। জুলাই নিয়ে কি এমন কোনো স্মৃতি আছে, যা এখনো কাউকে বলেননি?

আব্দুল্লাহ আল সৈকত : আমি বেশিরভাগ সময় যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, কাজলা এলাকাতেই সরাসরি রাজপথে ছিলাম। কিন্তু ১৯ জুলাই জুমার নামাজের পর থেকে ম্যাসাকার যেটাকে বলছি সেটা শুরু হয়। পুলিশ তখন দল বেঁধে এসে গুলি করছিল এমনটা না। আবার থানা থেকে করছে এমনও না। তখনো পুলিশ থানার সামনে দল বেঁধেই ছিল। এদিকে ১৭ জুলাই থেকে যাত্রাবাড়ী থেকে বিশেষ করে শনির আখড়া, কাজলা হয়ে রায়েরবাগ ঢাকা-চিটাগাং মহাসড়কটা ছাত্র-জনতার দখলে ছিল। যাত্রাবাড়ী থানার পুলিশ শনির আখড়া আসবে এমন সাহস তখনো করতে পারেনি। তো ওইদিন (১৯ জুলাই) কাজলা টোলপ্লাজা বরাবর আমরা রাজপথে দাঁড়িয়ে আছি। আর গাছের বড় বড় গুড়ি ফেলে রাস্তা ব্লকেড করা। কেউ স্লোগান দিচ্ছে, কেউ গোল হয়ে আড্ডা দিচ্ছে। এমন সময় কোথা থেকে গুলির শব্দ আসলো। এটা কোন দিক দিয়ে আসছে ঠিক ঠাহর করা যাচ্ছে না। আমরা পুলিশকে লক্ষ করলাম। কিন্তু পুলিশ কোনো গুলি করছে না। এরপর আরও কয়েকটা গুলির শব্দ। আমার বামপাশের সামান্য সামনে এক অটোড্রাইভার দাঁড়িয়েছিলেন। গুলি এসে তার মুখে লাগল এবং মুখের গালের অংশ ছিঁড়ে নিয়ে চলে গেল! ওনার নাম পরে জেনেছি। হাবিব ভাই। এই সময়টা গুলির পর গুলি আসতেছে। সবাই দৌড়াদৌড়ি করতেছে। কেউ কেউ পড়ে যাচ্ছে। আর উঠতে পারছে না। তখন ধারণা করা হলো, স্নাইপার শ্যুট করা হচ্ছে। হাবিব ভাইকে আমরা কয়েকজন ধরে অনাবিল হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। তো অনাবিল হাসাপাতালে গিয়ে দেখি হাসপাতাল ভর্তি আহত লোকজনে। হাসপাতালের ভেতরে ঢোকা যাচ্ছে না। এটা ১০ মিনিটের মধ্যে ঘটে গেছে এবং আশপাশের ভবনের ছাদ বা জানালা থেকে শ্যুট করা হচ্ছিল।

বাসস : তার মানে এলোপাতাড়ি কিন্তু টার্গেট করে গুলি হচ্ছিল?

আব্দুল্লাহ আল সৈকত : হ্যাঁ। একবার ভাবেন, গুলি কোথা থেকে আসছে আমরা জানি না! এ ছাড়া এত মানুষ যে একটা গুলিতে তিনজনও আহত হচ্ছে।

বাসস : ১৯ জুলাই কতক্ষণ ছিলেন রাজপথে?

আব্দুল্লাহ আল সৈকত : শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ছিলাম। শত শত মানুষ চোখের পলকে আহত হয়েছে। বেশিরভাগ সময় হাসপাতালে ছোটাছুটি করেছি। আহতদের পেছনে সময় দিয়েছি। হাসপাতালে গিয়ে দেখলাম; আহতদের ধরে রাখা, তাদের স্যালাইন, ইনজেকশন এসব করার জন্য অভিজ্ঞ লোক দরকার। সে কারণে হাসপাতালে আহতদের পাশেই বেশি ছিলাম।

বাসস : ১৯ জুলাই হাসপাতালগুলোর সরেজমিনের ঘটনা বিস্তারিত শুনতে চাই।

আব্দুল্লাহ আল সৈকত : আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলাম—আমি যখন দেখলাম একের পর এক গুলিবিদ্ধ আহত যোদ্ধা আসতেছে, কিন্তু তাদের কোনো ডকুমেন্ট থাকতেছে না, নিজের ফোন দিয়ে ছবি তুলে রাখার চেষ্টা করলাম। কারণ হাসপাতালে কারও কোনো ভর্তি ডকুমেন্ট থাকতেছে না। কয়জন আহতরা চিকিৎসা নিচ্ছে সেসব কিছুই নেই। কোনো সিরিয়াল নম্বর নেই। মোট কথা, কোনো কাগজপত্র ডকুমেন্ট কিছুই রাখা হচ্ছে না। হাসপাতালগুলোতে ততক্ষণ ছাত্রলীগের লোকজন এসে চিকিৎসা না দেওয়া ও ভর্তি না করাতে হুমকি দিয়ে গেছে। কিন্তু হাসপাতালের মালিক ভালো মানুষ ছিলেন। তারা সব হুমকি উপেক্ষা করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছে।

বাসস : সেই জায়গা থেকে জুলাইয়ের ডকুমেন্ট সংরক্ষণের জন্য ‘জুলাই ম্যাসাকার আর্কাইভ’ প্রতিষ্ঠা করেন?

আব্দুল্লাহ আল সৈকত : একদম তাই। মোবাইলে যদ্দুর পারা যায় তাদের নাম, পরিচয়, ছবি ও যোগাযোগের ঠিকানা আমি সংরক্ষণ করেছিলাম। সবার একটা করে ছবি তুলে রাখার চেষ্টা করতেছিলাম। কারণ বুঝতে পারতিছিলাম, এসব তথ্য আর কেউ রাখবে না। কিন্তু পরে দরকার হবে।

বাসস : অনেকের চিকিৎসা খরচ ছিল না বলছিলেন?

আব্দুল্লাহ আল সৈকত : আন্দোলনে তো আসলে কেউ বেশি টাকা পয়সা নিয়ে আসে না। এই অবস্থা দেখে আমার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ব্র্যাকের এক বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ করি। আপনি জানেন ১৮ জুলাই তো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয়। ওরা গ্রাফিতি করার জন্য তখন ফান্ড কালেকশন করেছিল। ওদের কাছে ভালো একটা ফান্ড ছিল। তো আমি হাসপাতালের অবস্থা জানালাম। আর আমার কুয়েটের বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কারণ কুয়েটের কিছু ফান্ড আমার কাছে ছিল। হাসপাতালে মানুষের অবস্থা দেখে আমি ওদের ফান্ড চাইলাম। এছাড়া ওই সময় কোনো সমন্বয়ক বা ছাত্রনেতার সঙ্গে কোনো যোগাযোগের অবস্থা নেই। কারও প্রতি কারও কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এলাকায় কোনো গাড়ি নেই। কোনো অ্যাম্বুলেন্স নেই।

বাসস : আহতদের কোন হাসপাতালে এবং কীভাবে পাঠালেন?

আব্দুল্লাহ আল সৈকত : যানবাহন কিছু না পেয়ে শেষে আমরা একটা পিকআপ ঠিক করলাম। ততক্ষণে দুই হাসপাতাল থেকে ফেতর পাঠানো ৫ জন হয়েছে। তাদের পিকআপে উঠিয়ে মিডফোর্ড সলিমুল্লাহ হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই। এদিকে আহত লোক আসতেছে তো আসতেছে। গাড়ির ভাড়া দেবো কীভাবে? আশপাশের সব দোকানঘাট সব বন্ধ হয়ে গেছে। কোনো বিকাশের দোকান খোলা নেই। তো আমি দেশবাংলা হাসপাতালে আবার গেলাম। ততক্ষণ আহতরা আমাকে চিনে গেছে। হাসপাতালের স্টাফরাও আমাকে চিনে গেছে। তারা খুবই ভয়ে ছিল—এলাকার সরকারি বাহিনী হামলা করে কি না! কিন্তু তারা সব হুমকিধামকি উপেক্ষা করে সাপোর্ট দিয়েছে। বাড়ির ভাইবোনদের মতো হেল্প করেছে। এর মধ্যে যেটা বলা দরকার, দেশবাংলা হাসপাতালের মালিক বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ফলে উনি সবোর্চ্চ হেল্প করেছেন।

তবে এত মানুষের সেবা দেওয়ার সক্ষমতা তাদের নেই। অন্যদিকে যারা আহত তাদের কাছে টাকা-পয়সা নেই। এই সময় আমার নিজের কাছে যা অর্থকড়ি ছিল হাসপাতালে দিলাম। আর বন্ধুদের দেশবাংলা হাসপাতালের কাউন্টার নম্বরে বিকাশে টাকা পেমেন্ট করা শুরু করলাম।

বাসস : ক্লিনিকগুলো চিকিৎসা বাবদ কেমন বিল নিচ্ছিল?

আব্দুল্লাহ আল সৈকত : ক্লিনিকগুলো বেশি টাকা নেয়নি। জাস্ট যে বিলটা না নিলে নয়, যা খরচ হচ্ছিল তা-ই নিয়েছে। ব্যান্ডেজ আর ইনজেকশনের বিলই শুধু নিত। আমার বন্ধুরা বিকাশে যা পাঠাচ্ছিল হাসপাতালের বিকাশ নম্বরে। ওরা ওদের খরচ রেখে আমাকে ক্যাশ ফেরত দিচ্ছিল। মানে এভাবে আমি একা একা যা পারি সামলেছি। ওদেরও তো চলতে হবে। আর কার পেছনে কত টাকা খরচ হচ্ছে সেটার হিসেব রাখাও দুরূহ ব্যাপার ছিল। মাথা প্রতি কাউন্টারে অল্প টাকা দেওয়া হচ্ছিল।

বাসস : আপনার সামনে ১৯ জুলাই কেউ শহিদ হয়েছেন?

আব্দুল্লাহ আল সৈকত : অনেকে শহিদ হয়েছেন ওইদিন। এসব ঘটনার আসলে কোনো ভাষা নেই। কোনো ভাষা দিয়ে তা বোঝানো যাবে না.. (কাঁদতে থাকেন...) আমি তো ডকুমেন্ট রাখার জন্য ছবি তুলে তাদের নাম লিখে রাখছিলাম। হঠাৎ একজন আহতকে আনা হলো। তিনি শ্রমিক ছিলেন। তাকে কোনোরকম ব্যান্ডেজ দেওয়া হলো! আমি দৌড়ে ছবি তুলতে গেলাম। ছবি তুলতে তুলতে তার শরীর নিথর হয়ে গেল..(কাঁদতে থাকেন...) উনি শহিদ হয়ে গেলেন। তো ওদিন আমি এত ভেঙে পড়েছিলাম—ব্র্যাকের বন্ধুকে ফোন করে কান্না করতেছিলাম। জুলাইয়ে আমার চোখের সামনে দেখা এটা প্রথম মৃত্যু। এমন ঘটনা তো জীবনে ফেস করিনি। নিজেকে আর ধরে রাখতে পারতেছিলাম না। তো আমার বন্ধুরা সবাই আমাকে ফোন করে বলছিল, যতটা পারা যায় তুমি শক্ত থাকো, তাদের পাশে থাকো। আমরা তোর যত টাকা লাগে উঠায়ে দিচ্ছি। এতক্ষণ যে শক্তি নিয়ে সবার পেছনে দৌড়াদৌড়ি করতেছিলাম তারপর আর হাঁটতে পারছিলাম না...

বাসস : অনেক হাসপাতাল তো মৃত্যুর সার্টিফিকেট দেয়নি?

আব্দুল্লাহ আল সৈকত : কোনো হাসপাতালই মৃত্যুর সার্টিফিকেট দেয়নি। তো আমি বন্ধুদের সাহস পেয়ে আবার শক্ত হলাম। এর মধ্যে যিনি শহিদ হলেন ওনার ডেথ সার্টিফিকেট হাসপাতাল দেবে না। কারণ আমরা যে ছবি তুলে রাখছি বা নাম ঠিকানা রাখছি এটা স্থানীয় নেতারা জেনে ফেলেছে। তারা যেকোনো সময় হামলা করতে পারে, এটা হাসপাতালের নার্স স্টাফরা জানায়। কারণ ৪ থেকে ৫ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালের প্রতিটি ডাক্তার নার্স স্টাফ দারোয়ান সবার সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক হয়ে গেছে। যিনি হাসপাতালের মালিক তিনিও চলে আসছেন। তিনিও দৌড়াদৌড়ি করছেন। ১৮/১৯ তারিখ ঢাকার উত্তরা, রামপুরা, বাড্ডা, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া কোনো বেসরকারি হাসপাতালই কারও কোনো ডাটা বা তথ্য রাখেনি, আমি যতদূর জানি।

বাসস : অনেকে এটাকে গণঅভ্যুত্থান বলতে চায় না। ১৯ তারিখের অভিজ্ঞতায় কী বলবেন?

আব্দুল্লাহ আল সৈকত : ভাইরে ভাই, যারা যা বলার বলুক। আমি দেখেছি, ছাত্ররা বাদে শ্রমিকশেণির মানুষই বেশি আন্দোলনে ছিল। এমনকি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমি হাসপাতালে তাদের আহত কর্মীদের দেখতে আসতে দেখেছি। বিশেষ করে শিবিরের এক ভাই আহত হয়ে হাসপাতালে ছিল। ফ্যাসিস্ট হাসিনার অন্ধ ছাড়া বেশিরভাগ সাধারণ মানুষ তখন আন্দোলনে নেমে গেছে।

বাসস : ১৯ জুলাই হাসপাতালে কতক্ষণ ছিলেন। ছাত্রলীগ কি পরে রেইড দেয়?

আব্দুল্লাহ আল সৈকত : হাসপাতালে আমরা তো খুবই ব্যস্ত। কেউ কারও দিকে তাকানোর অবস্থায় নেই। এ সময় হঠাৎ দেখি, একটা ছেলে হাতে আঘাত পেয়েছে। এসে ব্যান্ডেজ নিয়ে চলে যাচ্ছে। কিন্তু তার কোমরে রিভলভার। ওপেন। এটা নিয়ে তার কোনো কেয়ার নেই। তখন রাত ১০টার মতো বাজে। তার চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই হাসপাতালের নার্স স্টাফরা হুড়োহুড়ি শুরু করল। তারা জানাল, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা জানতে পারছে যে, আমরা আন্দোলনকারী আহতদের সেবা দিচ্ছি। সে কারণে এখানে রেইড দেবে। হামলা করবে। এখন কে ছাত্রলীগ, কে আন্দোলনকারী কীভাবে বুঝব! তো তখন মনে হলো ওই ছেলেটা ছাত্রলীগের ছিল। সে আসলে চিকিৎসা নেওয়ার নাম করে এখানে পরিস্থিতি দেখে গেছে। তখন আমরা যারা ছাত্র ছিলাম কিংবা যারা আহতদের সেবা দেওয়ার জন্য তৎপর ছিলাম, ৬/৭ জনকে নার্সদের পাশে একটা রুমে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে তালা মেরে দিল। আমরা চারজন মেয়ে আর তিনজন ছেলে ছিলাম, যেন বোঝা না যায় এখানে কেউ আছে। এবং স্টাফ নার্সরা বলল, ‘তোমাদের যদি কিছু করতে হয় আমাদের লাশের ওপর দিয়ে যেতে হবে।’ এই হচ্ছে সেই দিনের একটা হাসপাতালের স্টাফদের ফাইট। ফলে সবাই যার যার জায়গা থেকে আন্দোলন করেছে। তো এটাকে আপনি গণআন্দোলন বা গণঅভ্যুত্থান বলবেন না? এবং...

রূপালী বাংলাদেশ

Shera Lather
Link copied!