খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্যের পদচ্যুতি স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের বিরুদ্ধে একটি বড় বার্তা হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘উপাচার্য পদত্যাগ করেননি, বরং সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে তাকে পদচ্যুত করা হয়েছে। এটি প্রমাণ করে, আগামী দিনে যারা স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব পোষণ করবেন, তাদের জন্য বাংলাদেশে কোনো স্থান নেই।’
বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁও শহরে সাথী সমাবেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও কুয়েটের ঘটনাবলি নিয়ে বক্তব্য দেন তিনি।
শিবির সভাপতি বলেন, ‘কুয়েটের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় দুই মাস ধরে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকা অযৌক্তিক। যারা স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব পোষণ করেন, তাদের এখান থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।’
ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে ছাত্রশিবির সভাপতি বলেন, ‘আমরা আগেই ডাকসু নির্বাচনের কথা বলেছি। আশা করছি, এরই মধ্যে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, শিক্ষার্থীদের প্রকৃত প্রতিনিধি নির্বাচনের মাধ্যমে তারা তাদের অধিকার আদায়ের পথে আরও সোচ্চার হোক। এতে করে লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতিও অনেক হ্রাস পাবে।’
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের আদর্শ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা ৫২, ৬৯ ও ৭১-এর মতো দেশের প্রতিটি ঐতিহাসিক ঘটনাকে সম্মান করি। কিন্তু কোনো একটি গোষ্ঠী যদি গৌরবময় ইতিহাসকে ব্যবহার করে অন্যদের দমন করে, আমরা তার বিরোধী।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরে যারা একাত্তরের চেতনাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানিয়েছে, তারা গণহত্যা চালিয়েছে, বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছে—যে অর্থ দিয়ে বাংলাদেশ চারটি বাজেট করতে পারত।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই অর্থ জনগণের। এটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হতে পারে না। ৫ আগস্টের পর থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন আজ সর্বসাধারণের আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। এটি কোনো একক ব্যক্তির অর্জন নয়, এটি সবার।’
শহীদ পরিবারের প্রসঙ্গে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রমজান ও ঈদে শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আমরা তাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছি। আমরা চাই তারা যেন একা না থাকে।’
আগামী দিনের রাজনীতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের পর বাংলাদেশে আর আধিপত্যবাদী রাজনীতি থাকবে না। থাকবে মত ও আদর্শের স্বাধীনতা। ছাত্রশিবির আগামী দিনে সৎ, আদর্শবাদী ও দেশপ্রেমিক নাগরিক গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে।’
আপনার মতামত লিখুন :