ঢাকা সোমবার, ১২ মে, ২০২৫

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম চালালে হতে পারে যেসব শাস্তি

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ১২, ২০২৫, ০৯:৩৯ এএম
ছবি- সংগৃহীত

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ এর সংশোধিত বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। গত শনিবার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। 

আইনজীবীদের দেয়া তথ্যমতে, ইতিপূর্বে হরকাতুল জিহাদ, জামাত-উল-মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবিরসহ বেশ কয়েকটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ওই একই আইনে প্রথমে ছাত্রলীগ পরে নিষিদ্ধ হয়েছে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম।

প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করলে এবং তা প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড এবং অন্যূন ৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।

তবে এটা করতে আইনে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত ব্যক্তি বা সত্তার এবং তাদের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার বিধান যুক্ত করে সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।

এতে বলা হয়, কতিপয় সন্ত্রাসী কার্য প্রতিরোধ এবং উহাদের কার্যকর শাস্তির বিধানসহ আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান প্রণয়ন করার নিমিত্ত সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ প্রণয়ন করা হয়। উক্ত আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, কোনো ব্যক্তি বা সত্তা সন্ত্রাসী কার্যের সহিত জড়িত রয়েছে মর্মে যুক্তিসঙ্গতকারণের ভিত্তিতে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্ত ব্যক্তিকে তফসিলে তালিকাভুক্ত করতে পারে বা সত্তাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা ও তফসিলে তালিকাভুক্ত করতে পারে। বর্তমান আইনে কোনো সত্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধকরণের বিষয়ে কোনো বিধান নেই।

উক্ত বিষয়টি স্পষ্টকরণসহ বিধান সংযোজন আবশ্যক হেতু সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-কে সময়োপযোগী করে উক্ত আইনের অধিকতর সংশোধন সমীচীন ও প্রয়োজন। বর্ণিত প্রেক্ষাপটে সন্ত্রাসবিরোধী আইন সংশোধন করে সত্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, প্রয়োজনীয় অভিযোজন করা এবং অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার নিষিদ্ধকরণের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি মো. মহসিন রশিদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আইনে যেসব শর্ত পূরণ করলে একটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা যায়, আওয়ামী লীগ তার সবই করেছে। এটি একটি সময়োচিত সিদ্ধান্ত।’

সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ড. শাহজাহান সাজু বলেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্যরা বা সমর্থকেরা কোনো কর্মসূচিতে অংশ নিলে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রয়োজনবোধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই ব্যবস্থা নিতে পারে।’

আইনের ১৭ থেকে ১২ নম্বর ধারায় নিষিদ্ধ সত্তার সঙ্গে সম্পৃক্ততা, সমর্থন, প্রচার, ষড়যন্ত্র বা সহায়তার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড থেকে শুরু করে চার বছর থেকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের সংশোধনীতে আরও বলা হয়েছে, কোনো নিষিদ্ধ সংগঠনের পক্ষে প্রচার, বক্তৃতা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা বা সমর্থন জানানোও দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।