রাজধানীর ধানমন্ডির নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে (অব.)। তার গ্রেপ্তারের পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
দুপুর ১২টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে জামায়াত আমির বলেন, এবিএম খাইরুল হক ফ্যাসিস্ট আমলে প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে ছিলেন। নাহ, কোনোমতেই তিনি তার দায়িত্বের মর্যাদা উপলব্ধি করেননি এবং আমানত রক্ষা করেননি।
ওই পোস্টে তিনি আরও বলেন, এই মর্যাদাপূর্ণ চেয়ারে বসে ইতিপূর্বে কেউ দেশ ও জাতির এত বড় ক্ষতি করেনি। তার হঠকারী রায়ের মাধ্যমে রাজনৈতিক মাফিয়াদের হাতে গুম, খুন, লুণ্ঠনসহ সব অপকর্মের লাইসেন্স ও হাতিয়ার তুলে দেওয়া হয়েছিল।
জামায়াত আমির আরও বলেন, তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেরিতে হলেও পাকড়াও করেছে। জাতি এখন তার সুষ্ঠু বিচার এবং ন্যায্য শাস্তি দেখতে চায়। তার ক্ষেত্রে আমরা শুধু ন্যায়বিচারই প্রত্যাশা করি। ন্যায়বিচারেই তিনি ইতিহাসের শিক্ষণীয় শাস্তি পাওয়ার উপযুক্ত হবেন- এই আশাই রাখি।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল ৮টার কিছুসময় পরে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে তার ধানমন্ডির বাসা থেকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তাকে ডিবি কার্যালয়ে আনা হবে। এরপর তার বিরুদ্ধে পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে এবিএম খায়রুল হক শপথ নেন ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। পরের বছর (২০১১ সাল) ১৭ মে ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
বিচারাঙ্গনে তুমুলভাবে আলোচিত-সমালোচিত এ বিচারপতির বেশ কয়েকটি রায় চরম বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল। তিনি নিজে আওয়ামী আমলে নানাভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাকে প্রধান বিচারপতি করা হয়েছিল কয়েকজন জ্যেষ্ঠ বিচারপতিকে ডিঙিয়ে।
প্রধান বিচারপতি থাকাকালে ত্রাণ তহবিলের টাকায় নিজের চিকিৎসা করে সমালোচিত হয়েছিলেন তিনি। অবসর নেওয়ার কয়েকদিন আগে তিনি ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করেন। এতে দেশে রাজনৈতিক সংঘাতের পথ উন্মুক্ত হয়।
রাজনৈতিক একটি বিষয়কে আদালতের আওতাধীন করে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক নন বলে রায় দিয়েছিলেন এবিএম খায়রুল হক। এ ছাড়া বিতর্কিত একাধিক বিচারপতিকে শপথ পড়ানো, আগাম জামিনের এখতিয়ার কেড়ে নেওয়া, খালেদা জিয়াকে ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
খায়রুল হকের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর গত ১৮ আগস্ট ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য ইমরুল হাসান বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় খায়রুল হকের বিরুদ্ধে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পরিবর্তন ও জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে খায়রুল হক ছিলেন আইন কমিশনের চেয়ারম্যান। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন ঘটলে ১৩ আগস্ট তিনি আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছিল না।

 
                             
                                    
 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন