মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫, ১০:৫৬ এএম

ইসলামী দলগুলোর যুগপৎ আন্দোলনে চাপে পড়বে বিএনপি?

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৫, ১০:৫৬ এএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ গ্রাফিক্স

জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশের চারটি প্রধান ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও খেলাফত মজলিস- জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে রাজপথে নেমেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই আন্দোলন শুধু সরকারের ওপর নয়, বরং বিএনপির ওপরও গুরুত্বপূর্ণ চাপ সৃষ্টি করতে পারে। একই সঙ্গে এটি ভবিষ্যতের নির্বাচনী কৌশল ও জোট গঠনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই যুগপৎ আন্দোলনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে সংবিধানিক সংস্কার কার্যকর করা। দলগুলো ধাপে ধাপে সমাবেশ ও বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কর্মসূচির প্রথম ধাপ শুরু হবে ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বিক্ষোভের মাধ্যমে, এরপর ১৯ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় শহরগুলো এবং ২৬ সেপ্টেম্বর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ ও সমাবেশের আয়োজন করা হবে।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন পাঁচ দফা এবং খেলাফত মজলিস ছয় দফা দাবিতে পৃথকভাবে সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণা করে। এর একদিন আগে, রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর), মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসও পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনে যোগ দেয়।

এই দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- জুলাই সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন, সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু, গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করা, নির্বাচনে সমান সুযোগ (লেভেল প্লেইং ফিল্ড) তৈরি, এবং জাতীয় পার্টির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

যদিও এই কর্মসূচিগুলো একই দিনে পালন করা হবে, প্রতিটি দল নিজ নিজ মঞ্চ থেকে আলাদাভাবে কর্মসূচি পরিচালনা করবে। গত শনিবার অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে এই চারটি প্রধান ধর্মভিত্তিক দলের পাশাপাশি আরও তিনটি দল- এনসিপি, এবি পার্টি এবং গণঅধিকার পরিষদ- উপস্থিত ছিল। এসব দলও নির্বাচনপূর্ব সংস্কার ও জুলাই সনদের বাস্তবায়নের পক্ষে একমত হয়েছে। তবে, সংসদের দুই কক্ষে পিআর চালুর প্রস্তাবে তাদের ভিন্নমত রয়েছে।

জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন সংসদের উভয় কক্ষে পিআর চালুর দাবি করলেও, এনসিপি, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ এবং দুটি খেলাফত মজলিস কেবল উচ্চকক্ষে পিআর প্রবর্তনের পক্ষে।

এদিকে এনসিপি পক্ষ থেকে একটি দাবিতে জানানো হয়েছে, ‘ডানপন্থি ট্যাগ’ এড়াতে তারা এখনই আনুষ্ঠানিকভাবে ধর্মভিত্তিক দলগুলোর সঙ্গে জোটে যেতে চায় না।

জুলাই সনদ নিয়ে বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক মতানৈক্য রয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এই সনদে মোট ৮৪টি সংস্কারের সুপারিশ করেছে, এর মধ্যে ১১টি প্রস্তাবে বিভিন্ন দল ‘নোট অব ডিসেন্ট’ জমা দিয়েছে।

বিএনপি উচ্চকক্ষে পিআর, প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকা বাতিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন পদ্ধতি, দুদক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়োগে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছে।

এ আন্দোলন প্রসঙ্গে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানকে সফল করতে সনদ বাস্তবায়ন আবশ্যক। স্বৈরাচারী শাসকের পদত্যাগে যে সংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা পূরণে জনগণের ইচ্ছার ভিত্তিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়েছে।’

তিনি আরও জানান, ‘নির্বাচনের আগে বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ বা গণভোটের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে।’

ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘ধর্মভিত্তিক দলগুলো জোটবদ্ধ হওয়ার পথে রয়েছে। দেশের ইসলামপ্রিয় মানুষদের ভোট একত্র করার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিক আন্দোলন চলবে।’

তিনি বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘কিছু পক্ষের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, জুলাই অভ্যুত্থান কেবল ক্ষমতার পালাবদলের জন্য ছিল। সেটি আমরা মানি না।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ যুগপৎ আন্দোলন প্রসঙ্গে বলেন, ‘এটা হয়তো নির্বাচনী কৌশল হিসেবে করা হচ্ছে। আন্দোলন করা রাজনৈতিক অধিকার। তবে এই অবস্থানকে দ্বিচারিতা বলা যেতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাহী আদেশে কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে বিএনপি নয়। জাতীয় পার্টির বিষয়ে যদি কারো আপত্তি থাকে, তাহলে তারা আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই যুগপৎ আন্দোলন কেবল দাবি আদায়ের জন্য নয়, বরং এটি ভবিষ্যতের আসন ভাগাভাগি, নির্বাচনী জোট ও কৌশল নির্ধারণেও প্রভাব ফেলতে পারে।

আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর কমিশন আবারও দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসবে, যেখানে এসব মতানৈক্য দূর করার বিষয়ে আলোচনা হবে।

Link copied!