ঢাকা বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫

‘কয়েকটি দল পণ করেছে পিআর না হলে নির্বাচনে যাবে না’

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২৫, ০৫:৩৩ পিএম
আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি -সংগৃহীত

সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতির নির্বাচন না হলে কিছু রাজনৈতিক দল ভোটে অংশ নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের দেশের কয়েকটি রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতিকে শুধু সমর্থনই করছে না, বরং এ পদ্ধতি না হলে নির্বাচনে না যাওয়ার পণ করে বসে আছে।’

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিউল বারী বাবুর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভা ও আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। শফিউল বারী স্মৃতি সংসদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের সাধারণ মানুষ পিআর পদ্ধতি বোঝে না। তারা এখনো সঠিকভাবে ইভিএমে ভোট দিতে পারে না, ভোটই দিতে চায় না। সেখানে পিআর পদ্ধতি কীভাবে বুঝবে? নতুন নতুন চিন্তাভাবনা সামনে আসছে, যা আমাদের সমাজ-রাজনীতির জন্য একেবারেই অপরিচিত। এসব ধারণা থেকে আমাদের সরে আসতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভালো দিক হলো, কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এসব অপরিচিত ধারণা বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের মানুষ যেটাতে অভ্যস্ত সেই ভোটের ব্যবস্থা করেন। তাদের প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা করেন। তাহলে সমস্যাগুলোর সমাধান হবে, না হলে হবে না। বাইরে থেকে এসে কাউকে নতুন নতুন চিন্তাভাবনা দিয়ে দেশের সমস্যার সমাধান হবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, অবিলম্বে সংস্কারগুলো শেষ করুন। জাতীয় সনদ ঘোষণা করুন। আর দয়া করে নির্বাচনের যে তারিখটা নির্ধারণ করেছেন, সেই সময়টাতে নির্বাচন দিন। মানুষকে তার অধিকার ফিরিয়ে দিন, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে অবিলম্বে সংস্কারকাজগুলো শেষ করতে এবং জুলাই সনদ ঘোষণা করতে মির্জা ফখরুল আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনের জন্য যে সময়টা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই সময়টাতে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘মানুষকে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিন।’

বিএনপি সংস্কারকে ভয় পায় না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের অনেকে খোঁটা দিয়ে কথা বলেন, আমরা সংস্কার চাই না। সংস্কারের চিন্তাটাই তো আমাদের। সংস্কারের শুরুটা আমাদের দিয়ে।’

এ সময় তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘ফ্যাসিজমের মূল হোতা’ বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের আগে শেখ মুজিবুর রহমান, যিনি ফ্যাসিজমের মূল হোতা, তিনি গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল করে দিয়েছিলেন। সেই বাকশাল থেকে ফিরিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রে নিয়ে এসে মাল্টিপার্টি সিস্টেমের ব্যবস্থা চালু করলেন জিয়াউর রহমান।’

ঐকমত্য কমিশনের প্রশংসা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি কিছু ভালো দিক দেখছি। আজকে খবরের কাগজে দেখলাম, বোধ হয় বারোটি মৌলিক বিষয়ে পরিবর্তনে সবগুলো দল এক হয়েছে।’

এ সময় মির্জা ফখরুল সরকারকে শিশু একাডেমি স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি স্টেটমেন্ট (বিবৃতি) দিয়েছি। আজকে আবার অনুরোধ করব। আমি শুনেছি, এটা নাকি হাইকোর্টের জায়গা। যারই জায়গা হোক, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়া সবার মতামত নিয়ে সেদিন আমাদের শিশুদের বিকশিত করার জন্য এই শিশু একাডেমি স্থাপন করেছিলেন।’

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপনসহ স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা উপস্থিত ছিলেন।