রবিবার, ২৯ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২৫, ০৫:০২ এএম

স্থানীয় নির্বাচনের বিষয়ে সহাবস্থানে  জামায়াত-এনসিপি-গণঅধিকার

এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২৫, ০৫:০২ এএম

ছবি - রূপালী বাংলাদেশ

ছবি - রূপালী বাংলাদেশ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কখন হবেÑ এই আলোচনা ও বিভ্রান্তির অবসান ঘটিয়ে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের ব্যাপারে একমত হয়েছে সরকার ও প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি। এই ঘোষণার প্রতিক্রিয়াও হয়েছে মিশ্র। তবে জাতীয় নির্বাচনের ঘোষিত সময় নিয়ে বড় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ৫০টির বেশি দল উচ্ছ্বসিত। এদিকে, প্রশাসনের ফিটনেস ও নিরপেক্ষতা প্রমাণে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ আরও কিছু দল। একই সঙ্গে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিআর (সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি) পদ্ধতি চায় জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন। তবে বিএনপি বলছে, রমজানের আগেই দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট হতে হবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত সময়ের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্ভব নয় জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে সব দলই একমত, তাই এর আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। জাতীয় নির্বাচনের জন্যই এত দিনের সংগ্রাম, স্থানীয় নির্বাচনের জন্য নয়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অবশ্যই আমরা প্রয়োজনীয় সংস্কার চাই। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আমরা স্থানীয় সরকারের নির্বাচন চাই। স্থানীয় সরকার হলো প্রশাসনের সর্বনিম্ন স্তর। এই নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণিত হবে যে, নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে কতটা সক্ষম। এই নির্বাচনের মাধ্যমেই নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা প্রমাণিত হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে যদি কোনো দুর্বলতা ধরা পড়ে, তাহলে তা সংশোধন করেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হবে।

তবে স্থানীয় নির্বাচন আগে নয় জানিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক রূপালী বাংলাদেশকে জানান, রমজানের আগে দেশে জাতীয় নির্বাচন হবে, আর বিলম্ব নয়। নির্বাচন নিয়ে দেশের মানুষ হতাশার মধ্যে ছিল। লন্ডনে বৈঠকের পর সব ধোঁয়াশা কেটে গেছে। আর যাতে কোনো ষড়যন্ত্র না হয়।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, স্থানীয় নির্বাচনের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে জামায়াতে ইসলামী। সরকার ঘোঘণা দিলেই অংশগ্রহণ করতে পারব। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ পৌরসভার জনপ্রতিনিধি বাচাইয়ের কাজ আমরা এরই মধ্যে সম্পন্ন করেছি। নির্বাচনকালীন একটি তত্ত্বাবধায়ক, অন্তর্বর্তী সরকার যেটিই হোক, সেটা হবে। এর অধীনে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে ভালো হবে। দলীয়ভাবে ভোট হলে দলের সরকার তার প্রার্থী জয়ী করে নেয়। একটি সুস্থ, সুন্দর, জনকল্যাণমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাই। 

এদিকে, অবিলম্বে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, একটি টেস্ট ম্যাচের মধ্য দিয়ে (স্থানীয় সরকার নির্বাচন) আমাদের যেতে হবে। ধৈর্য ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে দেশের ৫৩ বছরের অসমাপ্ত কাজগুলো সংস্কার কমিশনগুলোর ইফেক্টিভিটির মধ্য দিয়ে সমাপ্ত করতে হবে। অনেক দলই স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কথা বলেছে। আমরাও মনে করি, লোকাল গভর্নমেন্ট ফাংশনাল করতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, প্রশাসনের ফিটনেস ও নিরপেক্ষতা প্রমাণে, সব না হোক, স্থানীয় সরকারের অন্তত সিটি করপোরেশন, উপজেলা বা পৌরসভার নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আগে হওয়া উচিত। এই সরকার আগের মতো দিনের ভোট রাতে করে কি না, স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলে তারও প্রমাণ পাওয়া যাবে। 
তিনি আরও বলেন, কোনো বিশেষ দলকে মাথায় তোলার প্রবণতা বাদ দিতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে সরকারের সুরক্ষা কার্যক্রমে সব রাজনৈতিক দলের মতামত নিতে হবে।
তবে, আগে স্থানীয় নির্বাচনের এবং জাতীয় নির্বাচনে পিআর (সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি) চায় জামায়াতসহ অন্যান্য ইসলামী দল। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি চায়।
ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, সংস্কার, জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে মহাসমাবেশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। আমরা জাতীয় নির্বাচনে পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চাই।

প্রসঙ্গত, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন বা পিআর পদ্ধতির দিকে নজর দিচ্ছে বেশ কিছু রাজনৈতিক দল। এগুলোর মধ্যে জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও কমিউনিস্ট পার্টি রয়েছে। তবে বিএনপি এই পদ্ধতির বিরোধিতা করে আসছে। প্রচলিত সংসদীয় পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষেই রয়েছে তারা। নির্বাচনি বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, আনুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থা গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করবে এবং ভোটারদের মতামতকে যথাযথভাবে প্রতিফলিত করবে। তবে বিএনপির আপত্তির কারণে এই নতুন পদ্ধতি বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যদি সব রাজনৈতিক দল একমত হয়, তবে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে আনুপাতিক ভোটিংয়ের দিকে এগোতে পারে।
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর হচ্ছে নির্বাচনি ব্যবস্থার এমন একটি পদ্ধতি, যেখানে আসন বণ্টন হয় প্রতিটি রাজনৈতিক দলের প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যদি কোনো দল মোট প্রদত্ত ভোটের শতকরা ১০ শতাংশ পায়, তাহলে সেই দল আনুপাতিক হারে সংসদের ১০ শতাংশ বা ৩০টি আসন পাবে। পিআর বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে মুক্ত, গোপন ও মিশ্র তিনটি আনুপাতিক নির্বাচনব্যবস্থা রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!