ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছোট ছেলে এরিক ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন হোয়াইট হাউসে তার বাবার দ্বিতীয় মেয়াদ শেষে তিনি নিজে কিংবা ট্রাম্প পরিবারের অন্য কেউ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন।
সম্প্রতি ফিনান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের সহ-নির্বাহী ভাইস-প্রেসিডেন্ট এরিক ট্রাম্প বলেন, যদি তিনি তার বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নেন, তবে তার জন্য হোয়াইট হাউসে যাওয়ার পথ তুলনামূলক সহজ হবে।
তিনি এও জানান যে, পরিবার হিসেবে এই রাজনীতির অভিজ্ঞতা আবারও গ্রহণ করার ইচ্ছা রয়েছে কি না, সেই সিদ্ধান্ত এখনো নেননি।
তার ভাষায়, “আসল প্রশ্ন হলো, আপনি কি আপনার পরিবারকে আবার এই অভিজ্ঞতার মধ্যে টেনে আনতে চান? আমার সন্তানদের কি আমি চাইব গত এক দশকে আমরা যা সহ্য করেছি, তার পুনরাবৃত্তি হোক? যদি উত্তর হয় ‘হ্যাঁ’, তাহলে রাজনৈতিক পথটি আমার জন্য সহজ হবে বলে মনে করি।”
এরিক ট্রাম্প পূর্বে রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকলেও ২০১৭ সালে তার বাবা প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে পারিবারিক ব্যবসা পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। তবে, তিনি জানান রাজনীতি নিয়ে সবসময়ই তার দৃষ্টি ছিল এবং তিনি অনেক ‘অর্ধেক রাজনীতিক’ দ্বারা প্রভাবিত হননি।
এরিক আরও দাবি করেন, তিনি ‘খুব কার্যকরভাবে’ রাষ্ট্র পরিচালনার কাজ করতে পারবেন। একই সঙ্গে বলেন, তাদের পরিবারের অন্য সদস্যরাও ভবিষ্যতে এই দায়িত্ব নিতে সক্ষম।
২০২৪ সালের নির্বাচনের পর ট্রাম্প পরিবার রাজনীতি থেকে সরে যাবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে এরিক বলেন, ‘আমি জানি না... সময়ই বলবে। তবে আমি ছাড়াও আরও অনেক ব্যক্তি আছেন যারা এটি করতে পারেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘মূল প্রশ্ন হলো, আপনি কি সত্যিই এটি করতে চান? এবং আপনি কি আপনার কাছের মানুষদের এই ব্যবস্থার বর্বরতার মুখে ঠেলে দিতে রাজি আছেন?’
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প পরিবারের আর্থিক লাভ নিয়ে ওঠা প্রশ্নের জবাবও দেন এরিক। তিনি বলেন, তাদের পরিবার রাজনীতি থেকে কোনো আর্থিক লাভ করেনি বরং অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘যদি এমন কোনও পরিবার থাকে যারা রাজনীতি থেকে একেবারেই লাভবান হয়নি, তবে সেটা হলো ট্রাম্প পরিবার। আমার বাবা যদি রাজনীতিতে না আসতেন, তাহলে আমাদের সম্পদের মূল্য আরও অনেক বেশি হতো। আইনি লড়াই, প্রচারণার খরচ এবং পারিবারিক ক্ষতি সবমিলিয়ে তা ছিল বিশাল।’
তার দাবি অনুযায়ী, রাশিয়ান তদন্ত ও বিভিন্ন আইনি জটিলতায় প্রতিরক্ষার জন্য তাদের পরিবার প্রায় ৫০ কোটি ডলার খরচ করেছে।
এদিকে, ট্রাম্প মিডিয়া অ্যান্ড টেকনোলজি গ্রুপে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অংশীদারিত্ব বর্তমানে প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারের সমান। এছাড়া, রিয়েল এস্টেট, ক্রিপ্টোকারেন্সি, ঘড়ি, গিটার এবং এমনকি বাইবেলসহ বিভিন্ন লাইসেন্সড পণ্যের মাধ্যমে ট্রাম্প গত বছরই আয় করেছেন ৬৩০ মিলিয়ন ডলারের বেশি।
এরিক ট্রাম্প জানান, ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের মূল্য বর্তমানে ৮ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে।
এই বক্তব্যে স্পষ্ট, ট্রাম্প পরিবারের রাজনীতিতে ফেরার ইচ্ছা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। তবে তারা এখনো নিজেদের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন—এই পথে আবার এগোনো হবে কি না, তা নিয়ে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান
আপনার মতামত লিখুন :