জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের জন্য এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখার আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। তিনি বলেছেন, ‘জুলাই বিপ্লব অর্থবহ করতে হলে শাপলা হত্যাকাণ্ডসহ সকল গণহত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাজধানীর মহাখালীতে জামিয়া মুহাম্মাদিয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসায় ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত কেন্দ্রঘোষিত খাবার বিতরণ কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ইয়াছিন আরাফাত, প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক আতাউর রহমান সরকার, ঢাকা-১৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ডা. এস এম খালিদুজ্জামান, জামিয়া মুহাম্মাদিয়ার মুহতামিম শায়খুল হাদিস মুফতি মাওলানা নোমান, সহ-মুহতামিম মুফতি ওয়াজেদ আলী, গুলশান পশ্চিম থানা আমির মাহমুদুর রহমান আজাদ ও পূর্ব থানা আমির জিল্লুর রহমান প্রমুখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছরের দুঃশাসন ও অপশাসনের অবসান ঘটেছে। মানুষ আজ নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছে। এই বিপ্লব আমাদের শিক্ষা দেয়, দেশে হত্যা, গুম, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও দখলদার রাজনীতি চলতে দেওয়া যাবে না। জনগণ আর কখনো ফ্যাসিবাদ ও দুঃশাসনের শেকলে বন্দি হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের তৈরি আইন দিয়ে শাসন করে মানুষের মুক্তি নিশ্চিত করা যায় না। তাই কুরআন-সুন্নাহর ভিত্তিতে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আলেম সমাজসহ সকল শ্রেণির মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
প্রধান অতিথি বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও দেশের মানুষ তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি। তৈরি করা হয়েছে এমন আইন, যা জনগণের উপর শোষণ ও বঞ্চনার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে মাদ্রাসা ছাত্রদের ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। শহিদ ও আহতদের বড় একটি অংশ ছিল কওমি ছাত্র। তাই এই দেশে কুরআন-সুন্নাহর আইন ছাড়া অন্য কোনো আইন জনগণ মেনে নেবে না।’
সেলিম উদ্দিন অভিযোগ করেন, ‘আওয়ামী বাকশালীরা ইসলাম, ইসলামি মূল্যবোধ এবং মাদ্রাসা ছাত্রদের ওপর পরিকল্পিত নির্যাতন চালিয়েছে। ৫ মে হেফাজতের সমাবেশে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে শত শত কওমি ছাত্রকে শহিদ করা হয়। এরপর সেই শহিদদের রক্ত নিয়ে তামাশাও করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই বিপ্লব ছিল ইসলামি চেতনার ভিত্তিতে পরিচালিত, যার মূল স্লোগান ছিল, ‘আমরা ন্যায়বিচার চাই।’ তাই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে গণহত্যার বিচার এবং ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠাই হতে হবে এই বিপ্লবের মূল উদ্দেশ্য।’