জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জুলাই সনদের পূর্ণ বাস্তবায়ন, জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ, নির্বাচনে লেভেল–প্লেইং ফিল্ড, জুলাই গণহত্যার বিচার এবং সংসদের উচ্চকক্ষে পিআর (প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন) চালুর দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে মাঠে নামছে দেশের কয়েকটি ইসলামী রাজনৈতিক দল। আন্দোলনের অংশ হিসেবে আসন্ন সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক।
তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদকে কাগুজে বা অকার্যকর করা যাবে না। এটি কার্যকর করতেই হবে।’
এ সময় তিনি আরও জানান, ‘পাঁচ দফা দাবিতে তিন ধাপে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হবে- ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায়, ১৯ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় শহরে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে।’
মামুনুল হক বলেন, ‘জুলাই সনদের যেসব সংস্কার বাস্তবায়নে সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন, সেগুলো নির্বাচন পূর্বেই করতে হবে। পরবর্তী সংসদের উপর ছেড়ে দিলে তা বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা থাকবে না। ক্ষমতায় বসলে অনেকেই প্রতিশ্রুতি ভুলে যান।’
তিনি রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক আদেশ বা অন্য কোনো কার্যকর পদ্ধতির মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়নের দাবি জানান।
তিনি আরও বলেন, ‘সংসদের নিম্নকক্ষে বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতি মানলেও, পিআর ছাড়া উচ্চকক্ষ গ্রহণযোগ্য হবে না। পিআর ছাড়া উচ্চকক্ষ হবে কেবল বেকার পুনর্বাসনের জায়গা।’
সংবাদ সম্মেলনে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে একই দাবিতে আজ সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) পৃথক সংবাদ সম্মেলন থেকে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (চরমোনাই) এবং আবদুল বাসিত আজাদের নেতৃত্বাধীন খেলাফত মজলিস। এসব দল জুলাই সনদ কার্যকর না হলে নির্বাচন অংশগ্রহণকে প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছে।
তবে পিআর ইস্যুতে মতভেদের কারণে এনসিপি, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ এবং নেজামে ইসলাম পার্টি যুগপৎ আন্দোলনের বাইরে থাকছে। এসব দল সংসদের শুধু উচ্চকক্ষে পিআর চায়, নির্বাচনের আগে সংবিধান সংশোধনের পক্ষপাতী নয়।
জামায়াতের সঙ্গে কোনো আনুষ্ঠানিক জোট হয়নি জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, ‘আমরা জামায়াতসহ আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে একই দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি। এটি একটি বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ার প্রক্রিয়া।’
তিনি শেষ পর্যন্ত হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘নির্বাচনে লেভেল–প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরপেক্ষতা ছাড়া গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন