ভোট নিয়ে যাদের অভিজ্ঞতা নেই, তারাও আজ ভোটের নিয়ন্ত্রক সেজেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকেলে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ছাতুগাঁও বাজারে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল যুগলী ইউনিয়ন শাখার সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘রাজনীতি, ভোট নিয়ে যাদের অভিজ্ঞতা নেই, তারা আজ রাজনীতি ও ভোটের নিয়ন্ত্রক সেজেছেন। যারা জনগণ ও ভোটকে ভয় পায়, তাদের মুখেই এমন কথা মানায়। স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দলের সাপ্লাই দেওয়া কয়েক হাজার লোকের সামনে দাঁড়িয়ে যারা নিজেদের রাজনীতি ও ক্ষমতার নিয়ন্ত্রক ভবেন, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন।’
তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘সংস্কারের নামে এমন এমন পদ্ধতি আলোচনায় আনা হচ্ছে, যার সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক নেই। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার কেড়ে নেওয়ার মতো পদ্ধতির কথাও বলা হচ্ছে। গণঅভ্যুত্থানের শক্তির মধ্যে পরিকল্পিতভাবে অনৈক্য ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচাল করার চক্রান্ত চলছে। অথচ জনগণ এ মুহূর্তে নির্বাচন চায়। জনগণ নির্বাচনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।’
প্রিন্স বলেন, ‘বিএনপিও সংস্কার চায়। এ জন্য বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ১১ মাস অপেক্ষা করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়া ও কার্যক্রমে সহযোগিতা করেছে। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে সরকারের ভেতর ও বাইরে থাকা মহল বিশেষ সংস্কার প্রক্রিয়া ও কার্যক্রমকে ক্রমেই জটিল করে নির্বাচনের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।’
তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘মিটফোর্ড এবং গোপালগঞ্জের ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা কি না তা খুঁজে বের করতে হবে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আরও ঘটনা ঘটানো হতে পরে।’
তিনি বলেন, ‘কোর্ট-টাই পরা শহুরে কয়েকজন লোক যা বলবে, তা-ই সংস্কার হতে পরে না। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্র বা সমাজ কাঠামোর সংস্কার হতে পরে না। ঐকমত্য কমিশনের প্রতি জনগণের মনের ভাষা উপলিব্ধি করার আহ্বান জানাচ্ছি। কঠিন মারপ্যাঁচে সংস্কার জটিল করে বাইরে ষড়যন্ত্রকারীদের সুযোগ দিয়ে নির্বাচন অনিশ্চিত করলে জনগণ ছেড়ে দেবে না।’
নির্বাচন না হলে সব আশার আলো নিভে যেতে পারে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দিতে হবে। আগামী দিনে ধানের শীষের সরকার হলে কৃষকদের একটি ফসলের উৎপাদন খরচ, প্রতিটি পরিবারের সাংসারিক খরচের একাংশ, বিনামূল্যে চিকিৎসা ও বেকার ভাতা প্রদান করা হবে।’
প্রিন্স বলেন, ‘নবীন দলের নেতাদের মুখ থেকে শুনি, আওয়ামী লীগ হটিয়ে বিএনপিকে তারা নাকি আনতে চান না। বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, বিএনপি কারও দয়ায় ক্ষমতায় আসতে চায় না। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে বিএনপি রায় চায়। জনগণ বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে চাইলে আপনারা বাধা দেওয়ার কে?’
হালুয়াঘাট উপজেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক শেখ সাদির সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব জাকির হোসেন চঞ্চলের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম মিয়া বাবুল, সদস্যসচিব আবু হাসনাত বদরুল কবীর, যুগ্ম আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আমজাদ আলী, কাজী ফরিদ আহমেদ পলাশ, যুগলী ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আবুল কাশেম, সদস্যসচিব আব্দুস সাত্তার, যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল জলিল, আল আমিন চমক, মুকতাদির আহসান, শহীদুল হক, জেলা জাসাসের সভাপতি শফিকুল ইসলাম, যুবদল নেতা আসাদুজ্জামান আসিফ, আবদুল মালেক সোহান, পৌর ছাত্রদলের সদস্যসচিব তাজবীর হোসেন অন্তর, উপজেলা মৎসজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম মিয়া প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :