নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের ভাড়া চাওয়ায় জাহাঙ্গীর হোসেন (৫৭) নামের এক দোকান মালিককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিএনপির পাঁচজন নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) রাতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তাদের বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়।
বহিষ্কৃতরা হলেন—মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোতা প্রধান (সাবেক মেম্বার), জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক খোকন প্রধান, বিএনপি সদস্য রাসেল প্রধান, আলম মিয়া ও সাদ্দাম হোসেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আড়াইহাজার উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের সালমদী বাজারে জাহাঙ্গীর হোসেনকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সুনাম ক্ষুণ্ণ করায় তাদের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, ‘দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িতদের কোনো ছাড় নেই। তাদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে।’
স্থানীয় সূত্র ও নিহতের পরিবারের সদস্যদের বরাতে জানা গেছে, বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে সালমদী বাজারে ভাড়া চাওয়াকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত জাহাঙ্গীর হোসেন ওই এলাকার তালেব আলীর ছেলে এবং পেশায় একজন মুদি দোকানি। বাজারে তার চারটি দোকান রয়েছে।
নিহতের ছেলে রাসেল হোসেন জানান, গত ৫ আগস্ট বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-অর্থনৈতিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমনের অনুসারী তোতা মেম্বার তাদের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকায় তিনটি দোকান ভাড়া নেন। এর একটি দোকানে স্থাপন করা হয় মাহমুদপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়। বাকি দুটির ভাড়া পরিশোধ করলেও কার্যালয়ের দোকানটির ১০ হাজার টাকা ভাড়া বকেয়া ছিল।
বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ভাড়া চাইতে গেলে তোতা মেম্বার ক্ষিপ্ত হয়ে জাহাঙ্গীর হোসেনকে চড় মারেন। এর কিছুক্ষণ পর তার ছেলে খোকন প্রধান, ভাতিজা সাদ্দাম হোসেন, রাসেল প্রধান ও আলম মিয়াসহ কয়েকজন দলীয় কার্যালয়ের ভেতরে জাহাঙ্গীর হোসেনকে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা সবাই পলাতক রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
নিহতের পরিবার বলছে, এ ঘটনায় প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতায় আসামিরা গা ঢাকা দিয়েছে। দ্রুত তাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
উল্লেখ্য, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মাহমুদুর রহমান সুমনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে অভিযুক্তদের পরিচিতি রয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত দলীয়ভাবে কেন্দ্র থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।