বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এসএম শাফায়েত, ইউএই ব্যুরো

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫, ০২:৪৬ পিএম

ফেব্রুয়ারিতেই খুলবে দুবাইয়ের ভিসা?

এসএম শাফায়েত, ইউএই ব্যুরো

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৫, ০২:৪৬ পিএম

ফেব্রুয়ারিতেই খুলবে দুবাইয়ের ভিসা?

ছবি: সংগৃহীত

সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার। তবে দীর্ঘদিন ধরে দেশটিতে বাংলাদেশিদের জন্য নতুন ভিসা বন্ধ থাকায় লাখো কর্মপ্রত্যাশী এবং বর্তমান প্রবাসীরা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন।

কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আলি আবদুল্লাহ খাসিফ আল হামুদি আশার বার্তা দিয়েছেন। 

তিনি জানিয়েছেন, জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভিসা জটিলতা নিরসন হতে পারে। এই ঘোষণার পর বাংলাদেশি কর্মীদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে।

গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন কারণে সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য নতুন ভিসা দেওয়া বন্ধ রেখেছে। যদিও সরকারিভাবে এই নিষেধাজ্ঞার কোনো আনুষ্ঠানিক কারণ জানানো হয়নি, তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে জাল ভিসা ও ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর কিছু অভিযোগের পেছনে ভূমিকা রেখেছে। 
এর ফলে নতুন কর্মীরা ইউএই-তে যেতে পারছেন না এবং সেখানে অবস্থানরত প্রবাসীরা ভিসার নবায়ন নিয়ে সমস্যায় পড়ছেন। বিশেষ করে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া অনেক বাংলাদেশি বৈধ কাগজপত্র সংগ্রহ করতে না পারায় অবৈধ অভিবাসী হয়ে পড়ছেন।

গত বছরের ডিসেম্বরে দুবাইয়ে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএই রাষ্ট্রদূত আবদুল্লাহ আলি আবদুল্লাহ খাসিফ আল হামুদি জানান যে, আগামী দুই মাসের মধ্যে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য ভিসা জটিলতা নিরসন হতে পারে।

তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভিসা পুনরায় চালু করার সম্ভাবনা রয়েছে।

আশা করছি, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যেই ভালো কিছু ঘোষণা আসবে।’ 
এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, দীর্ঘদিনের এই সংকট অবশেষে কেটে যেতে পারে।

এদিকে, ভিসা বন্ধ থাকার কারণে নতুন কর্মী পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না, যার ফলে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান শ্রমবাজার সংকুচিত হচ্ছে। এর ফলে কয়েকটি বড় সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, প্রতি বছর হাজার হাজার বাংলাদেশি কর্মী মধ্যপ্রাচ্যে কাজের জন্য অপেক্ষা করেন। তবে ভিসা জটিলতার কারণে অনেকে বিকল্প শ্রমবাজার খুঁজতে বাধ্য হচ্ছেন, যার মধ্যে মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ইউরোপীয় দেশগুলো রয়েছে। 

যারা ইতোমধ্যে ইউএই-তে অবস্থান করছেন, তাদের অনেকের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। ভিসা নবায়ন করতে না পারায় অনেকেই এখন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে গণ্য হচ্ছেন, যা তাদের জন্য বড় আইনি ঝুঁকি তৈরি করছে।

এ ছাড়া বাংলাদেশে রেমিট্যান্সের একটি বড় অংশ আসে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। নতুন কর্মী পাঠানো বন্ধ থাকায় এবং প্রবাসীদের অনিশ্চয়তার কারণে এই রেমিট্যান্স প্রবাহেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এই ভিসা জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে বাংলাদেশি শ্রমবাজারের জন্য কিছু দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

যেমন- ইউএই শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের জন্য প্রতিযোগী দেশ রয়েছে, যেমন- ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ফিলিপাইন ও ইন্দোনেশিয়া। যদি বাংলাদেশ দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে না পারে, তাহলে ইউএই-এর নিয়োগকর্তারা এসব দেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার দিকে বেশি ঝুঁকতে পারেন। তাই রেমিট্যান্স প্রবাহ বজায় রাখতে নতুনকর্মী পাঠানো অত্যন্ত জরুরি। যদি ভিসা সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে এটি বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও প্রভাব ফেলতে পারে। অনেক কর্মীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও নবায়নের সুযোগ না থাকায় তারা অবৈধ অভিবাসী হয়ে পড়ছেন। এর ফলে নির্বাসনের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে, যা বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক হতে পারে।

ভিসা সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশ সরকার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন। এজন্য বাংলাদেশ সরকারকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারের সঙ্গে আরও কার্যকর আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে যাতে দ্রুত ভিসা পুনরায় চালু করা যায়।

ইতোমধ্যে গত (২৯ জানুয়ারি) বুধবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশিদের ভিসা সহজীকরণসহ প্রবাসীদের নানা জটিলতা নিরসনে মিনিস্ট্রি অব হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড এমিরেটাইজেশনের আন্ডার সেক্রেটারির খলিল ইব্রাহিম খোরির সঙ্গে বৈঠক করেছেন দুবাইয়ের বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান।

দ্বিপাক্ষিক এই বৈঠকে বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, ভিসা প্রাপ্তি ও ট্রান্সফার সহজীকরণ এবং এ দেশে বসবাসরত প্রবাসী কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রকৌশলী, ডাক্তার, নার্সসহ বিভিন্ন সেক্টরে অধিকহারে বাংলাদেশিদের নিয়োগের বিষয়ে খোরির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন কনসাল জেনারেল রাশেদুজ্জামান।

সবমিলিয়ে রাষ্ট্রদূতের সাম্প্রতিক বক্তব্য বাংলাদেশের শ্রমবাজারের জন্য আশাব্যঞ্জক হলেও, এটি বাস্তবে কার্যকর হতে সময় লাগতে পারে। 

বাংলাদেশ সরকারকে দ্রুত কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে এবং শ্রমবাজারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।

যদি ফেব্রুয়ারির মধ্যেই সংযুক্ত আরব আমিরাত বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা খুলে দেয়, তবে এটি লক্ষাধিক কর্মপ্রত্যাশীর জন্য স্বস্তির খবর হবে এবং বাংলাদেশি অর্থনীতিতে রেমিট্যান্স প্রবাহকে আরও শক্তিশালী করবে। এখন দেখার বিষয়, এই প্রতিশ্রুতি কত দ্রুত বাস্তবে রূপ নেয়।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!