হজরত মুসা (আ.)-এর ওপর তাওরাত কিতাব নাজিল হয়েছিল। তূর পর্বতে তার ওপর এই কিতাব নাজিল করা হয়। হাদিস ও তাফসির অনুযায়ী, মুসা (আ.) চল্লিশ দিন রোজা রাখার পর তূর পাহাড়ে গমন করেন। তখন আল্লাহ তায়ালা সরাসরি তাওরাত তার ওপর নাজিল করেন।
হজরত ওয়াসিলা ইবনে আসকাআ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন— ইবরাহিম (আ.)-এর সহিফা রমজানের প্রথম রাতে অবতীর্ণ হয়। তাওরাত নাজিল হয় রমজানের ছয় তারিখে, ইনজিল তেরো তারিখে, আর জবুর নাজিল হয় আঠারো তারিখে। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১৬৯৮৪)
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, নিশ্চয়ই আমি তাওরাত নাজিল করেছি, যাতে রয়েছে হিদায়াত ও নূর। (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৪৪)
হজরত মুসা (আ.) যখন তূর পর্বত থেকে তওরাত নিয়ে এসে বনী ইসরাঈলের সামনে পেশ করে বললেন যে, এটা আল্লাহ প্রদত্ত কিতাব, তোমরা এর আদেশ ও নির্দেশ মেনে চলো, আল্লাহ তোমাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে সফল হবে।
তখন কিছু সংখ্যক উদ্ধত লোক বলল, যদি আল্লাহ স্বয়ং বলে দেন যে, এ কিতাব তার প্রদত্ত, তবে অবশ্যই আমাদের বিশ্বাস এসে যাবে। মুসা (আ.) আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাদেরকে তূর পর্বতে নিয়ে গেলেন।
বনী ইসরাঈল তাদের মধ্য থেকে ৭০ জন লোককে মনোনীত করে হজরত মুসা (আ.)-এর সঙ্গে তূর পর্বতে পাঠাল। সেখানে পৌঁছে তারা আল্লাহর বাণী স্বয়ং শুনতে পেল। তখন তারা নতুন ভান করে বলল—
শুধু কথা শুনে তো আমাদের তৃপ্তি হচ্ছে না-আল্লাহই জানেন এ কথা কে বলছে। যদি আল্লাহকে দেখতে পাই, তবে অবশ্যই মেনে নেব।
কিন্তু যেহেতু এ জগতে আল্লাহকে দেখার ক্ষমতা কারো নেই, কাজেই এ ধৃষ্টতার জন্য তাদের উপর বজ্রপাত হল এবং সবাই ধ্বংস হয়ে গেল। এক বর্ণনা অনুযায়ী তারা মারা গেল এবং অন্য বর্ণনা অনুযায়ী তারা অচেতন হয়ে পড়ল। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে পুনরায় জীবিত করেন।
তাদের এ ধ্বংসপ্রাপ্তির বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে—
وَاِذۡ قُلۡتُمۡ یٰمُوۡسٰی لَنۡ نُّؤۡمِنَ لَکَ حَتّٰی نَرَی اللّٰہَ جَہۡرَۃً فَاَخَذَتۡکُمُ الصّٰعِقَۃُ وَاَنۡتُمۡ تَنۡظُرُوۡنَ ٥٥ثُمَّ بَعَثۡنٰکُمۡ مِّنۡۢ بَعۡدِ مَوۡتِکُمۡ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ
আর যখন তোমরা বলেছিলে, হে মূসা! আমরা কিছুতেই তোমাকে বিশ্বাস করব না, যতক্ষণ না আল্লাহকে নিজেদের চোখে প্রকাশ্যে দেখতে পাব। এর পরিণামে বজ্র এসে তোমাদেরকে এমনভাবে পাকড়াও করল যে, তোমরা কেবল তাকিয়েই থাকলে। অতঃপর আমি তোমাদেরকে তোমাদের মৃত্যুর পর নতুন জীবন দান করলাম, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হও। (সুরা বাকারা, আয়াত : ৫৫-৫৬)
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন