জান্নাত মুমিনের চিরস্থায়ী ও মূল আবাসস্থল। আল্লাহ তায়ালা জান্নাত থেকেই মানুষকে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। আবার জান্নাতেই পাঠাবেন তাদের। তবে দুনিয়ার জীবন থেকে জান্নাতে যাওয়ার যাত্রাটা শর্তসাপেক্ষ। দুনিয়াতে এসে আল্লাহ তায়ালার নির্দেশিত পথ মেনে চললেই শুধু জান্নাতে যাওয়া যাবে। এ ছাড়া জান্নাতে যাওয়ার উপায় নেই।
হাদিসের বর্ণনা অনুয়াযী সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবেন আমাদের প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। হজরত আনাস ইবনু মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, কিয়ামত দিবসে আমি জান্নাতের গেইটে এসে দরজা খোলার অনুমতি চাইব। তখন খাজাঞ্চি বলবেন, আপনি কে? আমি উত্তর করব, মুহাম্মাদ। খাজাঞ্চি বলবেন, আপনার জন্যই দরজা খুলতে আমি নির্দেশিত হয়েছি। আপনার পূর্বে অন্য কারোর জন্য দরজা খুলব না। (সহিহ মুসলিম)
অন্য হাদিসে হজরত ওমর বিন খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, আমি প্রবেশ করার আগ পর্যন্ত জান্নাত সকল নবীদের জন্য হারাম। আামার উম্মত জান্নাতে প্রবেশ করার আগ পর্যন্ত আগের সকল নবীর উম্মতের জন্য জান্নাতে প্রবেশ করা হারাম। (আলমু’জামুল আওসাত)
রাসুল (সা.) সবার আগে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। এরপর অন্য আমলকারীরা প্রবেশ করবেন। তবে নারীদের মধ্যে সর্বপ্রথম কে জান্নাতে প্রবেশ করবেন এমন সহিহ বর্ণনা হাদিসের মাধ্যমে পাওয়া যায় না। তবে জান্নাতের পরিচালনার দায়িত্বে কোন নারীরা থাকবেন এমন বর্ণনা পাওয়া যায়। এক হাদিসে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুল (সা.) জমিনে চারটি রেখা টানেন। অতঃপর বলেন, তোমরা কি জানো, এগুলো কী? সাহাবিরা বললেন, আল্লাহ ও তার রাসুল ভালো জানেন। তিনি বলেন, ‘জান্নাতবাসীর মধ্যে সর্বোত্তম নারী হলো খাদিজা বিনতে খুওয়াইলিদ (রা.), ফাতেমা বিনতে মুহাম্মদ (রা.), মারিয়াম বিনতে ইমরান ও আসিয়া বিনতে মাজাহিম।’ (মুসতাদরাক হাকিম, হাদিস: ২৯০৩)
অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জান্নাতের নারীদের সর্দার হবে মারিয়াম বিনতে ইমরান, ফাতেমা, খাদিজা ও ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া।’ (তাবরানি)
মুস্তাদরাক হাকিমে কয়েকটি বর্ণনা অনুযায়ী, নারীদের মধ্যে সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশকারীনি হজরত ফাতিমা বিনতে মুহাম্মাদ। আবার কোনো কোনো বর্ণনা অনুযায়ী বিধবা নারী সবার আগে জান্নাতে প্রবেশ করবেন।
এক হাদিসে এ বিষয়ে বলা হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন যে, আমিই প্রথম ব্যক্তি, যার জন্য জান্নাতের দুয়ার খোলা হবে। তবে একজন মহিলা আসবে, সে আমার সাথে প্রবেশে তাড়াহুড়া করবে। তখন আমি তাকে বলবো, কি হলো? কে তুমি? সে বলবে, আমি ওই মহিলা, যে নিজ সন্তানের জন্য দ্বিতীয় বিয়ে না করে ছিলাম। (মুসনাদে আবূ ইয়ালা মুসিলী)

