পাবনার ঈশ্বরদীতে আটটি কুকুরছানাকে বস্তাবন্দি করে পুকুরে ফেলে হত্যার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এ ঘটনায় এক সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলার বাদী আকলিমা খাতুন বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনাটি প্রকাশিত হলে ব্যাপকভাবে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার ফোন করেছিলেন এবং ঘটনাটি অমানবিক উল্লেখ করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার কথা বলেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ঈশ্বরদী সার্কেল) প্রণব কুমার এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, প্রাণী কল্যাণ আইন-২০১৯-এর ৭ ধারায় মামলা হয়েছে। এতে ক্ষুদ্র কৃষক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের স্ত্রী নিশি রহমান একমাত্র আসামি।
প্রণব কুমার আরও জানান, মামলা হওয়ার পর রাতেই অভিযান চালিয়ে নিশিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকালে তিনি ঈশ্বরদী পৌর সদরের রহিমপুর গার্লস স্কুলের পাশে এক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
ইউএনও মো. মনিরুজ্জামান বলেন, এটি চরম অমানবিক ও নিষ্ঠুর কাজ। শাস্তি হিসেবে ওই কর্মকর্তাকে এক দিনের মধ্যে সরকারি বাসভবন ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আইন অনুযায়ী মামলা ও অভিযুক্ত নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং জামিন মঞ্জুর হয়নি। এ ছাড়া প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে মা কুকুরটির চিকিৎসার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহখানেক আগে ওই কর্মকর্তার বাসার আঙিনায় একটি মা কুকুর ৮টি ছানার জন্ম দেয়। গতকাল হঠাৎ কুকুরটিকে পরিষদ চত্বরে ছোটাছুটি করতে ও কাঁদতে দেখা যায়। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছানাগুলোকে পুকুরে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। স্থানীয়রা পুকুর থেকে মৃত ছানাগুলো উদ্ধার করে আনলে মা কুকুরটি পাশে বসে আর্তনাদ করতে থাকে। পরে ছানাগুলোকে মাটিচাপা দেওয়া হয়।
-20251203203408.webp)


