মুসলমানদের কাছে সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ ও পবিত্রতম দিন হলো শুক্রবার। এ দিনের মর্যাদা সম্পর্কে অসংখ্য হাদিস পাওয়া যায়। বিশেষত, জুমার দিনে এমন একটি ক্ষণ রয়েছে- যে মুহূর্তে আল্লাহ তাআলা তার বান্দার দোয়া কবুল করেন। সময়টি নিয়ে বর্ণনায় ভিন্নতা থাকলেও এই দিনে দোয়া কবুলের বিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই।
জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.)-এর বর্ণনায় রাসুল (সা.) বলেছেন, জুমার দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে, যখন বান্দা যা চাইবে আল্লাহ তা কবুল করবেন।
তিনি আরও বলেন, এই সময়টি তোমরা আছরের শেষ সময়ে অনুসন্ধান করো। (আবু দাউদ: ১০৪৮; নাসাঈ: ১৩৮৯)।
একইভাবে আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) বর্ণনা করে বলেন, আছরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া কবুল হয়। বিখ্যাত গ্রন্থ যাদুল মাআদ-এও এ মত উল্লেখ রয়েছে, যা ইমাম আহমদ (রহ.) গ্রহণ করেছেন।
অন্যদিকে আরেকটি বর্ণনায় এসেছে- ইমাম মিম্বরে বসার সময় থেকে জুমার নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত সময়টি দোয়া কবুলের বিশেষ মুহূর্ত। আবু দারদা ইবনে আবু মুসা আশআরি (রা.) তার পিতার সূত্রে রাসুল (সা.)-এর এ কথা বর্ণনা করেন। (আবু দাউদ: ১০৪৯)
এ ছাড়া আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন যে রাসুল (সা.) জুমার দিনের সেই মুহূর্তের সংক্ষিপ্ততার ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, যদি কোনো মুসলিম নামাজরত অবস্থায় আল্লাহর কাছে কিছু চায়, আল্লাহ তা অবশ্যই কবুল করেন। (বুখারি: ৬৪০০) আনাস ইবনে মালিক (রা.)-এর বর্ণনায়ও রয়েছে, জুমার দিনের সেই সময়টিতে বান্দার দোয়া কবুল হয়। (মুসান্নাফ: ৫৫৮৮)
সমস্ত বর্ণনা একত্র করলে আলেমদের অধিকাংশের মতে, বিশেষ মুহূর্তটি আছরের শেষ সময়ে, বিশেষত সূর্যাস্তের আগমুহূর্তে। তবে খুতবার সময় থেকে নামাজ শেষ হওয়াও অনেক আলেমের মতে দোয়া কবুলের সম্ভাবনাময় মুহূর্ত।
শুক্রবারের এই বরকতময় দিনে বিশেষ দোয়ার সময়গুলো আমাদের জন্য অনন্য সুযোগ। তাই এই সময়গুলোতে ইবাদত, দোয়া–মুনাজাত ও আল্লাহর স্মরণে ব্যস্ত থাকা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে জুমার দিনের বিশেষ মুহূর্তে দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

