শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২৫, ০২:২৮ পিএম

কাজের কারণে জুমা ছুটে গেলে কী করবেন

ধর্ম ডেস্ক

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১২, ২০২৫, ০২:২৮ পিএম

জুমার নামাজ। ছবি - সংগৃহীত

জুমার নামাজ। ছবি - সংগৃহীত

ইসলাম ধর্মে জুমার নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম এবং এটি প্রাপ্তবয়স্ক ও মানসিক-শারীরিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুসলমানের উপর ফরজ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। কোরআন ও হাদিসে জুমার মর্যাদা এবং এ দিনের নামাজের আহ্বানে সাড়া দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত জোরালোভাবে তুলে ধরা হয়েছে। সুরা জুমার নবম আয়াতে আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ দিয়েছেন- জুমার আজান শুনলে দ্রুত আল্লাহর স্মরণে ছুটে যেতে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যসহ পার্থিব ব্যস্ততা সাময়িকভাবে ছেড়ে দিতে।

এর উদ্দেশ্য হলো মুসলমানদের মাঝে সম্মিলিতভাবে ইবাদত, উপদেশ গ্রহণ এবং সামাজিক ঐক্য প্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টি করা। হাদিসে নবী করিম (সা.) জুমার নামাজ অবহেলা করার পরিণতি সম্পর্কে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন- যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে পরপর তিনটি জুমা ত্যাগ করে, আল্লাহ তার হৃদয়ে মোহর এঁটে দেন। এটি জুমার নামাজের প্রতি গুরুত্ব এবং অবহেলা না করার শিক্ষা দেয়।

তবে বাস্তব জীবন সবসময় একইরকম থাকে না। অনেক সময় মানুষের ব্যক্তিগত, শারীরিক বা পরিস্থিতিগত সমস্যার কারণে জুমার জামাতে উপস্থিত হওয়া সম্ভব হয় না। শরিয়ত অত্যন্ত বাস্তবমুখী বিধান প্রদান করেছে- যেখানে মানুষের কষ্ট, দুর্বলতা বা অক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে বৈধ অজুহাতকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

ইমাম মালিক (রহ.) গুরুতর অসুস্থতা, শরীরের চরম দুর্বলতা, প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তা কাদা হয়ে যাওয়া, জীবন-নাশের সম্ভাবনা থাকা, কারাবন্দি অবস্থা, কিংবা এমন রোগীর সেবা করা যার সেবা ছাড়া সে বিপদের মুখোমুখি হতে পারে- এসবকে জুমা না পড়ার যুক্তিসঙ্গত কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

এ ধরনের পরিস্থিতিতে শরিয়ত নির্দেশ দেয়- জুমা না পড়ে ব্যক্তি চার রাকাত জোহর নামাজ আদায় করবে, যা তার ফরজ আদায়ের বিকল্প হিসেবে গণ্য হবে। কারণ আল্লাহ ঘোষণা করেছেন- তিনি দ্বীনে কোনো সংকীর্ণতা রাখেননি এবং কোনো মানুষকে তার সাধ্যের বাইরে দায়িত্বও দেন না।

তবে এই ছাড় সাধারণ বা অজুহাতস্বরূপ ব্যস্ততার জন্য প্রযোজ্য নয়। শুধু কাজের চাপ, সামান্য বৃষ্টি, অলসতা, দূরত্ব, কিংবা সুবিধার জন্য জুমা এড়িয়ে যাওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং তা গুনাহ হিসেবে গণ্য হয়। জুমা শুধু একটি ফরজ ইবাদতই নয়- বরং এটি মুসলিম সমাজের ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব ও পারস্পরিক সম্পর্ক মজবুত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। মসজিদে ইমামের খুতবা মানুষকে নৈতিকতা, সামাজিক দায়িত্ববোধ ও ঈমানি চেতনায় উজ্জীবিত করে। তাই জুমার নামাজ কেবল একটি নিয়ম নয়, বরং একজন মুসলমানের সাপ্তাহিক আধ্যাত্মিক পুনর্জাগরণের ক্ষেত্র।

সর্বশেষে, ইসলাম এমন একটি ধর্ম যা কঠোরতার নাম নয়; বরং সহজতা ও ভারসাম্যের ধর্ম। তাই বিশেষ ও অনিবার্য পরিস্থিতিতে জুমার নামাজে অংশগ্রহণ করতে না পারলে শরিয়ত-স্বীকৃত বিকল্প হিসেবে চার রাকাত জোহর আদায় করলেই বিধান পূর্ণ হয়। তবে কোনোভাবেই জুমার নামাজকে হালকাভাবে নেওয়া যায় না। যথাযথ কারণ ছাড়া জুমা ত্যাগ করা নিষিদ্ধ এবং আধ্যাত্মিক ক্ষতির কারণ। মুসলমানের উচিত জুমার মর্যাদা, গুরুত্ব ও বরকত সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং যথাসম্ভব উপস্থিত হয়ে এ ফরজ ইবাদত আদায় করা।

Link copied!