ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে হেরে গেলেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের দেওয়া অঙ্গীকার পূরণে লড়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ছাত্রদল প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী আবিদুল ইসলাম খান।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ ঘোষণা দেন।
দীর্ঘ পোস্টে আবিদ লিখেছেন, ভিপি নির্বাচনে হেরে গেলেও সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে তিনি লড়ে যাবেন। কখনো তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ছেড়ে যাবেন না বলেও আশ্বাস দিয়েছেন।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘ক্ষুদ্র জীবনে আমি এতদূর আসব কোনোদিন ভাবিনি। নির্বাচনের আগের রাতে খালেদ মুহিউদ্দিন ভাই আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ৫ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চাই। আমি কোনো সদুত্তর দিতে পারিনি। আমি আসলে কোনোদিনই জানতাম না নিজেকে কোথায় দেখতে হবে, কোথায় দেখা উচিত। একের পর এক আন্দোলন-সংগ্রাম এসেছে, নিজেকে রাজপথে সঁপে দিয়েছি। সেই পথ আজ আমাকে এতদূর নিয়ে আসল। ইটস ওকে।’
ভোটের দিনের শুরু থেকেই মিডিয়ার অপপ্রচারের শিকার হয়েছেন দাবি করে তিনি আরও লিখেছেন, ‘এই নির্বাচনে আমার দিনটা শুরু হয় মিডিয়ার অপপ্রচার দিয়ে। দুপুর থেকেই আমি ভোটে বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক সমস্যা খুঁজে পেয়েছি, সারাটা দিন সেসব নিয়ে কথা বলেছি। এই সমস্ত অভিযোগের একটা সুষ্ঠু অনুসন্ধান ও যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে আসবে বলে এখনো আশা রাখি।’
সীমিত সময়ে প্রচারণার মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছার চেষ্টা করেছেন উল্লেখ করে আবিদ লিখেছেন, ‘মানুষ হিসেবে আমরা কেউ পরিপূর্ণ না। আমি জানি, আমি আপনাদের জন্য যথেষ্ট কাজ করতে পারিনি। সত্যি বলতে জীবন আমাকে সেই সুযোগটুকুও দেয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী ভাই-বোনদের ভোট দিতে আসার জন্য আমি মন থেকে ধন্যবাদ জানাই। মাত্র ২০ দিনের ক্যাম্পেইনে আমি চেষ্টা করেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ছাত্রের কাছে ছুটে যেতে। অনেকটুকু কাছাকাছি গিয়েছি, কিন্তু সবাইকে হয়তো স্পর্শ করতে পারিনি।’
সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি আদায়ে লড়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি আরও লেখেন, ‘তবে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই, আমার যাত্রা এখানেই শেষ নয়, আমার যাত্রা আরও অনেক দীর্ঘ। আমি এখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের একজন ছাত্রনেতা। কথা দিচ্ছি, আমার নির্বাচনী ইশতেহারে যা-কিছু ছিল, তা একজন ছাত্রনেতা হিসেবেই প্রশাসনের কাছ থেকে আদায় করে নিতে যা যা করা দরকার তা আমি করব।’
নতুন দিনের ছাত্র রাজনীতি উপহার দেবেন এমন প্রত্যয় জানিয়ে ডাকসুর এই ভিপি প্রার্থী আরও লিখেছেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতির নতুন শুরুটা আমাদের হাত ধরেই হবে। আমরা অতন্দ্র প্রহরী হয়ে রাজপথ পাহারা দেবো, নিজেদের সবটুকু দিয়ে সমগ্র বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসব। ইনশাআল্লাহ, এর প্রতিফলন আপনারা পরবর্তী ডাকসুতে দেখতে পাবেন। আবিদ আপনাদের কখনো ছেড়ে যাবে না।’
মার্টিন লুথার কিং (জুনিয়র)-এর উক্তি দিয়ে তিনি পোস্টের শেষে লিখেছেন, ‘আমাদের অবশ্যই সীমিত হতাশা মেনে নিতে হবে, কিন্তু কখনো অসীম আশা হারানো যাবে না।’