শুক্রবার, ২০ জুন, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২৫, ০১:১৯ এএম

মিরপুরে পুরোদমে জমেছে কেনাকাটা

এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২৫, ০১:১৯ এএম

ছবি:  রূপালী বাংলাদেশ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পবিত্র ঈদুল ফিতর মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে একটি। ঈদ অর্থ উৎসব বা আনন্দ, এই আনন্দ বহুগুণে বাড়াতে দেশজুড়ে চলে ব্যাপক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। সারা বছর যত পণ্য আর সেবা কেনাবেচা হয়, তার বড় অংশ হয় এই ঈদকে কেন্দ্র করে। আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পুরোপুরি জমে উঠেছে রাজধানীর বাজারগুলো। 

সরেজমিনে মিরপুর ১০, ১ ও ২ ঘুরে দেখা যায়, পরিবারের সদস্যদের জন্য নতুন জামাকাপড় কিনতে ছোট-বড় মার্কেট, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আউটলেট, শপিংমলে উপচেপড়া ভিড় সাধারণ মানুষের। 

মিরপুর ১০ নম্বর গোল চত্বর, শাহ আলী মার্কেট, এফএস স্কয়ার, মিরপুর ২ নম্বর রাস্তার দুপাশজুড়ে  চন্দবিন্দু, নবরূপ, স্বেতজ, দ্বেসজ, রিসম্যান, দর্জিবাড়ি, নোঙর, ম্যানলি, প্রথমা দেশীয় ব্যন্ডসহ ১ নম্বর সনি সিনেমা হল এরিয়ার মিরপুর নিউ মার্কেট, রূপায়ণ, লতিফ শপিংসহ সব মলে ছিল একই চিত্র। 

ক্রেতারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবার পোশাকের দাম একটু বেশি হওয়ায় তদের বাজেটে টান পড়ছে। দামের সঙ্গে রয়েছে পোশাকের মান নিয়ে প্রশ্ন। একই সঙ্গে নির্ধারিত বাজেটের মধ্যে মিলছে না পছন্দের পোশাক।

গতকাল রোববার সকাল থেকেই মিরপুর ১, ২ ও ১০ নম্বরের বিভিন্ন শপিংমলে, ফ্যাশন হাউজে মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে ফ্যাশন হাউজগুলোতে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ভিড় বাড়তে দেখা গেছে। ইফতারের পর দোকানগুলোতে লোকজন পরিবারসহ আসতে শুরু করে। ক্রেতার ভিড়ের সঙ্গে বিক্রি বেড়েছে বলে জানান বিক্রেতারা।

ইফতারের পর স্ত্রী ও সন্তানদের জন্য ঈদের পোশাক কিনতে শাহ-আলী শপিং মলে আসেন বেসরকারি চাকরিজীবী আজিজ হাকিম। প্রায় এক ঘণ্টা যাচাই-বাছাই করেও বাজেটের মধ্যে ছেলেমেয়ের জন্য পোশাক কিনতে পারেননি বলে জানান। 

দাম বাজেটের বাইরে দাবি করে তিনি বলেন, যেভাবে সবকিছুর দাম বাড়ে, আমাদের মতো মধ্যবিত্ত শ্রেণির সেই হারে বেতন-বোনাস বাড়ে না। যে কারণে উৎসবের সময় আমাদের পড়তে হয় একধরনের মানসিক চাপে। শাহ-আলীতে শপিং করা হয়, কারণ এখানে সব ধরনের পোশাক পাওয়া যায়। 

অন্য এক বিক্রেতা আসমেরি শামান্তা লুবনা বলেন, বাবার বাড়ির বাজেট আছে নিজের গহনা, শাড়ি ও স্বামীর জন্য। এবার আমাদের বিয়ের পর প্রথম ঈদ, যে কারণে বাজেটে কোনো ঘাটতি নেই। নিজের জন্য শাড়ি, থ্রিপিস, শাশুড়ির জন্য শাড়ি, স্বামীর জন্য ঘড়ি, জুতা কিনেছি। 

এখন শাহ-আলীর চতুর্থতলা থেকে কিছু স্বর্ণের জিনিস নিলে আজকের মতো শপিং শেষ হবে। তবে চাঁদরাতে একবার আসব, যদি কোনো কিছু কেনা বাদ পড়ে যায়। মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর, শাহ আলী মার্কেটের নিচতলায় পাওয়া যাচ্ছে থ্রিপিস, নতুন ডিজাইনের ওয়ান-টুপিস, কারচুপি বুটিকস, সুতি বুটিকস, মাল্টি কালারের মেয়েদের নানা পোশাক। দ্বিতীয় তলায় রয়েছে ছেলেদের প্যান্ট, শাট, র্টিশাট, পাঞ্জাবিসহ মেয়েদের বোরকাসহ বাচ্চাদের পোশাক। 

শাহ-আলী মার্কেটে ছেলেদের সুতি, এমব্রয়ডারি, সিকুয়েন্স, স্প্যানডেক্স, লিনেন পাঞ্জাবির দাম দেড় হাজার থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। আর কাবলি সেট, ডিজাইনার পাঞ্জাবি ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দোকানভেদে মেয়েদের টপস, ওয়ানপিস, টুপিস, থ্রিপিস, জাম্প স্যুট, ওয়েস্টার্ন ২ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকায় মিলছে। শিশুদের জামা-কাপড় ২ হাজার থেকে ৬ হাজারের মধ্যে।

মিরপুর ২ নম্বর বেবিশপে বাচ্চাদের জন্য শপিং করতে আসা মানতাহা মুনা বলেন, তাদের পাঁচ বছরের মেয়ের জন্য কেনাকাটা করেছেন। তবে যে টাকা বাজেট, তাতে সবকিছু কেনা সম্ভব হবে না। দ্বিগুণের বেশি টাকা খরচ হবে বলে ধারণা করছেন তিনি।।

তিনি বলেন, বাচ্চাদের কাপড়ের ক্ষেত্রে কোনো আপস করি না, কারণ আরামদায়কের সঙ্গে একটু কালারফুল বিষয়টা গুরুত্ব দিতে হয়, সেক্ষত্রে ব্র্যান্ড ছাড়া কেনা যায় না।  সবখানেই এবার দাম বেশ চড়া। টুপিস নিয়েছি, দাম পড়েছে আড়াই হাজার টাকা। যে ফ্রকগুলো পছন্দ হচ্ছে, তার দাম ৪ হাজারের ওপরে। এখনো বাকি জুতা-মোজাসহ আরও অনেক কিছু। 

চন্দ্রবিন্দু ফ্যাশন হাউজের বিক্রেতা নাফিজ নুর বলেন, পোশাকের দাম গতবারের তুলনায় ৫০০ থেকে হাজার টাকা বেশি। তবে এটা খুব একটা বেশি বলা যাবে না। দামের সঙ্গে মানের ভিন্নতা রয়েছে। 

আর যারা কিনছেন, তাদের এ বিষয়ে কোনো আপত্তি নেই। মিরপুর গ্রামীণ চেকে শপিং করতে মর্জিনা বেগম বলেন, কাপড়ের মান, ডিজাইন নিয়ে অভিযোগ নেই। তবে দাম নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়তে হচ্ছে। বিক্রেতারাও মানছেন যে জামা-কাপড়ের দাম কিছুটা বেশি। এর জন্য তারা দুষছেন মূল্য সংযোজন কর মূসক বা ভ্যাটকে। 

মিরপুর ২ নম্বরে বাঙালিয়ানা ব্র্যান্ডের কর্মচারী মাসুদ শাহজাহান বলেন, ২ হাজার টাকার পণ্যে ২০০ টাকা ভ্যাট আছে। কাপড়ের কাঁচামালের দামও বাড়তি। সব পণ্যের দাম বেড়েছে এটা সঠিক নয়। নতুন কয়েকটি পণ্যের দাম একটু বেশি

। মিরপুর-১ ‘মিরপুর নিউমার্কেটে শপিং করতে আসা এক ক্রেতা বলেন, পোশাকের দাম কিছুটা বাড়তি মনে হচ্ছে। এবার অর্ধেক কেনাকাটা করেছি, নিজেরটা পরে কিনব ভেবেছি। যেহেতু এখানে দামদর করার সুযোগ নেই, কারণ সবগুলোই ব্র্যান্ডের শপ। গরম শুরু হওয়ায় সন্তানের জন্য সুতি কাপড়ের মধ্যে হালকা কাজের জামাকাপড় কিনেছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাম্মি সুমা শপিং করতে এসেছেন মিরপুর ১ নম্বর মুক্তবাংলা শপিং কমপ্লেক্সে। তিনি রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, এবারের ঈদটা পড়েছে গরমের মধ্যে। ঈদ আসতে আসতে গরমটা আরও তীব্র হবে বোঝা যাচ্ছে। সে জন্য সুতি ও হালকা রঙের পোশাক খুঁজছি। 

তবে পরিবারের সঙ্গে ঈদের রাতে বের হওয়ার জন্য ভারী কাজের পোশাক কিনতে পারি। জামা-কাপড়ের জন্য বাসা থেকে যে বাজেট নিয়ে এসেছি, সেটা দিয়েই পোশাক কিনব। মিরপুর শপিং সেন্টারে সজীব হাসান নামের একজন ক্রেতা জানান, মিরপুর ১ নম্বরে এই শপিং সেন্টার অনেক বড় এবং জুতা ও কাপড়ের যে ব্র্যান্ডগুলো রয়েছে, তাতে কালেকশন অনেক বেশি থাকে। 

তবে, গত বছরের তুলনায় পোশাকের দাম কিছুটা বেশি। দেখেশুনে বাজেটের মধ্যে কিনেছি জুতা ও জামা। দামের তুলনায় পোশাকের মান কম বলে দাবি করেন তিনি। ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার নিচে মিলছে না ভালো পাঞ্জাবি। 

পাঞ্জাবি কিনতে আসা কয়েকজন তরুণ জানান, গত বছরের তুলনায় এবার পাঞ্জাবির দাম এক থেকে দেড় হাজার টাকা বেশি। মিরপুর রূপনগরের বাসিন্দা অমিত রাজু খাদেম বলেন, গতবারের তুলনায় দাম একটু বেশি। ফ্যাশন হাউজ থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকায় পাঞ্জাবি কিনলাম এবার। এ ধরনের পাঞ্জাবি গতবার ছিল ৩০০০ টাকার মতো।

দুই মেয়েকে নিয়ে মিরপুর সনি সিনেমা হল টাওয়ারের একটি ফ্যাশন হাউজে কেনাকাটা করতে দেখা যায় ব্যবসায়ী আক্তার হামিদকে। তিনি রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, মেয়েদের কেনাকাটা শেষ করতে পারিনি। সবার জন্য কেনাকাটা করে আমি কিনব। মেয়েদের তো ঈদের একটা ড্রেস কিনতেই ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা যাচ্ছে। 

মিরপুর ১ নম্বরের আর্টিসান ব্র্যান্ডের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মাহবুব রনি বলেন, বেশির ভাগ পণ্যের দাম প্রায় আগের মতোই রয়েছে। এখানে ছেলেদের জামা-কাপড় বেশি বিক্রি হয়। কয়েকটি পণ্যের দাম মানভেদে কিছুটা বেড়েছে। তবে, যেসব ক্রেতা আমাদের পণ্য ব্যবহার করেন, তারা সন্তুষ্ট। ঈদের কেনাকাটা প্রসঙ্গে বলেন, কেনাকাটা রমজানের মাঝখান থেকেই বাড়ে। গত শুক্রবার থেকেই ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে, সঙ্গে বেড়েছে কেনাকাটাও।
 

আরবি/এসএম

Link copied!