ঢাকা শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫

ফিফা কংগ্রেসে যেতে বাধা, কেন ফেরত পাঠানো হলো কিরণকে? 

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২৫, ০১:০১ পিএম
মাহফুজা আক্তার কিরণ। ছবি- সংগৃহীত

দুই মেয়াদে ফিফার নির্বাহী কমিটির সদস্য থাকার পর ২০২৩ সালে হেরে যান মাহফুজা আক্তার কিরণ। তবে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার কংগ্রেসে তার উপস্থিতি নিয়মিত ঘটনা।

সেই ধারাবাহিকতায় প্যারাগুয়েতে অনুষ্ঠেয় ফিফার ৭৫তম কংগ্রেসে যোগ দিতে মঙ্গলবার ভোরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর যান কিরণ। কিন্তু সেখান থেকে তাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

ঠিক কী কারণে মাহফুজা আক্তার কিরণকে প্যারাগুয়ে যেতে দেওয়া হয়নি, তা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে কোনো আইনি জটিলতা থাকতে পারে। 

বাফুফের নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যানকে এভাবে ফেরত পাঠানোকে দেশের ফুটবলের জন্য লজ্জাজনক বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। একইসঙ্গে বিষয়টি নিয়ে নির্বাহী কমিটির সদস্যদের মধ্যেও চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বোর্ড সভায় কোনো আলোচনা ছাড়াই ফিফা কংগ্রেসে কিরণের নাম চূড়ান্ত করা ভালোভাবে নেননি কমিটির অনেকেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নির্বাহী সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ফিফার কংগ্রেসে যাওয়ার মতো কি কিরণ ছাড়া আর কেউ নেই! বারবার কেন তিনিই বাফুফের প্রতিনিধি হবেন?’

নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি বছর ফিফার কংগ্রেসে বাফুফের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের যাওয়ার কথা। এবারের কংগ্রেসে সভাপতি তাবিথ আউয়াল ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার পদাধিকারবলে যোগ দিয়েছেন। 

তৃতীয় কোনো সদস্য নির্বাচন করার ক্ষেত্রে বোর্ডের সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হয়। তবে অভিযোগ উঠেছে, সভাপতি থাকা অবস্থায় কাজী সালাউদ্দিনের আনুকূল্যে কিরণ যেভাবে দাপটের সঙ্গে বিদেশ সফর করেছেন, বর্তমান সভাপতি তাবিথ আউয়ালের সময়েও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে।

নির্বাহী কমিটির অনেকেরই অভিযোগ, সভাপতি চাইলে অন্য কোনো যোগ্য ব্যক্তিকে ফিফা কংগ্রেসে পাঠাতে পারতেন। তাদের কাছে বিষয়টি রহস্যজনক। তাদের আরও অভিযোগ, এবার কিরণের বিদেশ সফর ব্যক্তিগত ছিল না, অথচ এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক নির্বাহী সদস্য হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে একটু আলোচনা করা উচিত ছিল। কিন্তু সভাপতি একক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এটা খুবই লজ্জাজনক যে, বাফুফের একজন সদস্য ফিফা কংগ্রেসে যেতে পারেননি। নিশ্চয়ই তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আছে, তাই বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।’

উল্লেখ্য, মাহফুজা আক্তার কিরণ নানা ইস্যুতে প্রায়ই সমালোচিত হন। বাফুফের সর্বশেষ নির্বাচনের আগেও তার বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়েছিল। তবে কোনো এক ‘শক্তির’ জোরে তিনি সদস্য নির্বাচিত হন এবং নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যানের পদ পান। 

অথচ তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের বহু অভিযোগ রয়েছে। সাম্প্রতিক নারী ফুটবল দলের বিদ্রোহের সঠিক সমাধানেও তার ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। সালাউদ্দিনের মতো নতুন সভাপতি তাবিথেরও কিরণকে অগ্রাধিকার দেওয়া নিয়ে বাফুফের অভ্যন্তরে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।