যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে ফিরে এসে এক ঘোষণার মাধ্যমে আবারও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। নতুন এই নির্বাহী আদেশে বিশ্বের ১২টি দেশের নাগরিকদের ওপর পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা এবং আরও ৭টি দেশের নাগরিকদের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ট্রাম্প জানান, এই সিদ্ধান্ত তিনি ‘জাতীয় নিরাপত্তা, বৈদেশিক নীতি ও সন্ত্রাসবাদবিরোধী লক্ষ্য’ বিবেচনা করেই নিয়েছেন। তার ভাষায়, যারা যুক্তরাষ্ট্রে এসে ভিসা অতিরিক্ত সময় থাকেন বা যারা নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করেন, তাদের ঠেকাতেই এই নিষেধাজ্ঞা।
পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত দেশের মধ্যে রয়েছে- আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন।
আংশিকভাবে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে- বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা।
সম্প্রতি কলোরাডোর বোল্ডারে একটি ইসরায়েলপন্থি অনুষ্ঠানে হামলার পর ট্রাম্প বলেন, ‘ভিনদেশিদের যথাযথ যাচাই ছাড়া প্রবেশ এই ধরনের ঝুঁকি ডেকে আনে। আমরা তাদের চাই না।’
এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মানবাধিকার কর্মী ও অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা। ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য প্রমিলা জয়পাল বলেন, ‘এই বৈষম্যমূলক নীতিমালা শুধু মানবিকতা বিরোধীই নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ও বহুসাংস্কৃতিক সমাজব্যবস্থাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, ট্রাম্পের এই নিষেধাজ্ঞা পরিবার বিচ্ছিন্নতা, শিক্ষাগত ক্ষতি এবং বৃহৎ অভিবাসী সম্প্রদায়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। হাইতি, কিউবা ও ভেনেজুয়েলা থেকে আগত আমেরিকান অভিবাসীদের মধ্যে দুশ্চিন্তা ছড়িয়ে পড়েছে।
নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসার ওপরও সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হবে। একই সঙ্গে প্রতিটি ভিসা আবেদনকারীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পর্যবেক্ষণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে মার্কিন দূতাবাসগুলোকে।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, তালিকাটি ভবিষ্যতে পরিবর্তন হতে পারে। নতুন ঝুঁকি উদ্ভব হলে অন্যান্য দেশও এতে যুক্ত হতে পারে। আবার যারা ‘উল্লেখযোগ্য উন্নতি’ করবে, তাদের তালিকা থেকেও বাদ দেওয়া হতে পারে।