ঢাকা মঙ্গলবার, ০১ জুলাই, ২০২৫

সেদিন কাউকে কিছু না জানিয়ে কেন চলে গেলেন গর্ডন গ্রিনিজ

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১, ২০২৫, ১২:২৫ পিএম
বাংলাদেশের সাবেক কোচ কিংবদন্তি ক্রিকেটার গর্ডন গ্রিনিজ। ছবি- সংগৃহীত

১৯৯৭ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ যখন আইসিসি ট্রফি জিতে প্রথম বারের মতো বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে, তখন দলের কোচ ছিলেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার গর্ডন গ্রিনিজ।

তার হাত ধরেই বাংলাদেশ বিশ্ব ক্রিকেটের আঙিনায় প্রথম পা রাখে। এই সাফল্যের পর তাকে শুধু সম্মানসূচক নাগরিকত্বই দেওয়া হয়নি, বরং তিনি বাংলাদেশে নায়কোচিত সম্মান পেয়েছিলেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তার অবদান অনস্বীকার্য।

১৯৯৯ সালের ৩১ মে, পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়ের দিনে গ্রিনিজের সঙ্গে বোর্ডের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

যদিও বাংলাদেশ সেই ম্যাচে জয়লাভ করে, যা ছিল বিশ্বকাপে তাদের প্রথম জয়, গ্রিনিজ সেই ম্যাচের মাঝপথেই মাঠ ছেড়ে চলে যান এবং কাউকে কিছু না জানিয়ে টিম হোটেল ত্যাগ করেন।

এর মূল কারণ ছিল বিশ্বকাপের মাঝপথেই তাকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত। দলের শেষ ম্যাচের আগের দিন তাকে এই দুঃসংবাদ জানানো হয়, যা গ্রিনিজের জন্য অত্যন্ত অপমানজনক ছিল।

৪ জুন দল দেশে ফেরার পর তাদের বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা দেওয়া হলেও, সেই উদযাপনে গ্রিনিজ ছিলেন না।

কেন এই আকস্মিক বরখাস্ত?

গ্রিনিজকে বরখাস্ত করার সঠিক কারণ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হয়, বোর্ডের সঙ্গে তার কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য তৈরি হয়েছিল।

বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়ে এমন আকস্মিক বরখাস্তের ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই গ্রিনিজকে হতাশ করেছিল। এবং এর ফলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের সম্পর্কটা সম্মানজনকভাবে শেষ হয়নি।

কিংবদন্তি গর্ডন গ্রিনিজ

ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা ওপেনারদের আলোচনায় অবধারিতভাবে চলে আসে একটি নাম— গর্ডন কাথবার্ট গ্রিনিজ। ১০৮ টেস্টে ৭,৫০০-এর বেশি রান এবং ১২৮ ওয়ানডেতে ৫,১৩৪ রান নিয়ে তাঁর ক্যারিয়ার পরিসংখ্যানই তাঁর ব্যাটিং দক্ষতার সুস্পষ্ট প্রমাণ।

বিশেষ করে ওয়ানডেতে তাঁর ৪৫.০৩ ব্যাটিং গড়, যা আধুনিক যুগেও ঈর্ষণীয়, সত্তরের দশকের ক্রিকেটে ছিল রীতিমতো বিস্ময়কর।

সময়ের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকা এই বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান ছিলেন সত্তরের ও আশির দশকের ওয়েস্ট ইন্ডিজের অপ্রতিরোধ্য দলের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। দলের সবচেয়ে উজ্জ্বল তারকাদের একজন।

তবে বাংলাদেশের মানুষের কাছে গর্ডন গ্রিনিজ কেবল একজন ক্রিকেট কিংবদন্তি নন, তিনি এক বিশেষ পরিচয়ে পরিচিত—বাংলাদেশের ক্রিকেটে নতুন দিগন্ত উন্মোচনকারী ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফিজয়ী দলের কোচ।

তার হাত ধরেই বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেদের পদচিহ্ন রাখতে শুরু করে, যা পরবর্তীতে টেস্ট মর্যাদা লাভে সহায়ক হয়েছিল।