ভারতীয় জাতীয় ফুটবল দলের কোচের পদ নিয়ে এক অদ্ভুত নাটকীয়তার সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে বার্সেলোনা কিংবদন্তি জাভি হার্নান্দেজের নাম জড়িয়ে তৈরি হয়েছে বিশাল বিতর্ক।
ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন (এআইএফএফ) প্রথমে দাবি করেছিল, খোদ জাভিই নাকি ভারতীয় দলের দায়িত্ব নিতে আবেদন করেছেন। কিন্তু পরে এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে, যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এআইএফএফের স্বচ্ছতা নিয়ে।
বৃহস্পতিবার রাতে xaviofficialfcb@gmail.com থেকে এআইএফএফ-এর কাছে একটি ইমেল আসে, যেখানে জাভি হার্নান্দেজের নামে ভারতীয় দলের কোচ হওয়ার আবেদন করা হয়েছিল।
এআইএফএফের জাতীয় দলের পরিচালক সুব্রত পল এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান যে, আবেদনের তালিকায় জাভির নাম ছিল এবং ইমেলটি এআইএফএফকে পাঠানো হয়েছিল।
এআইএফএফের টেকনিক্যাল কমিটির এক সদস্য টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানান, জাভি যদি সত্যিই আগ্রহী হতেন, তবে তার পারিশ্রমিক মেটানো ভারতীয় ফুটবলের পক্ষে সম্ভব হতো না।
এই খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম থেকে দ্রুত বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, যা জাভির কানেও পৌঁছায়। জাভির ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে বার্সা টাইমস-এর এক পোস্টে জানানো হয়, জাভি হার্নান্দেজ ভারতীয় কোচের পদে কোনো আবেদন করেননি এবং এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
তারা এআইএফএফ-এর বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে জাভির নাম ব্যবহার করে একটি 'ভুয়া নাটক' সাজানোর অভিযোগ করেন।
জনপ্রিয় ইতালিয়ান ক্রীড়া সাংবাদিক ফ্যাব্রিজিও রোমানোও তার এক্স অ্যাকাউন্টে নিশ্চিত করেন যে, জাভি কোচ হতে কোনো আবেদন করেননি এবং ভারতীয় ফেডারেশনের সঙ্গে তার কোনো আলোচনাও হয়নি।
অন্যদিকে, হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে সম্পূর্ণ ভিন্ন তথ্য উঠে আসে। সেখানে বলা হয়, জাভি হার্নান্দেজ নন, বরং ১৯ বছর বয়সী এক যুবক জাভির নাম ব্যবহার করে ভুয়া মেইলটি পাঠিয়েছেন।
সেই যুবক নাকি ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কল্যাণ চৌবেকে বোকা বানিয়েছেন। যদিও ওই প্রতিবেদনে সেই তরুণের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
জাভির এই ভুয়া আবেদন নিয়ে এআইএফএফ কর্তারা বৈঠক করেছেন, তবে ভুয়া আবেদনকারীর বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, সে বিষয়ে এআইএফএফ কিছু জানায়নি।
শুধু জাভি একাই নন, ভারতীয় দলের কোচ হওয়ার আবেদনের তালিকায় ম্যানচেস্টার সিটি কোচ পেপ গার্দিওলার নামও ছিল বলে টিওআই জানিয়েছে।
মোট ১৭০ জন কোচের আবেদন থেকে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা ১লা আগস্ট প্রকাশ করা হবে। ভারতের কোচ হওয়ার দৌড়ে বর্তমানে এগিয়ে আছেন ইংলিশ কোচ স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইন (যিনি ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ভারতীয় দলের দায়িত্বে ছিলেন।