দীর্ঘ অভিনয় জীবনের ইতি টেনে এবছর শোবিজকে বিদায় জানিয়েছেন ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তি সোহেল রানা। এবার সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ্যে আনলেন ভেতরের ক্ষোভ-নিজের ‘মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়’ নিয়ে। হতাশা আর দীর্ঘশ্বাসে ভেসে উঠল বরেণ্য এই অভিনেতার অভিমান। বললেন, ‘ধিক তোমাকে ধিক, তোমার মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট এবং মুক্তিযোদ্ধা আইডেন্টিটি কার্ডকে।’
রোববার দুপুরে নিজের ফেসবুকে একাধিক পোস্ট দেন সোহেল রানা। প্রথম পোস্টে একজন মুক্তিযোদ্ধা ও সিনিয়র নাগরিক হিসেবে চিকিৎসা সেবা এবং সরকারি সুবিধা না পাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি লেখেন, ‘কেবিন ভাড়া যা ছিল এক বছরের তা দ্বিগুণ হয়ে গেছে। শান্তিরক্ষাকারী বাহিনীরাও চিকিৎসা শেষে তাদের কাজের জন্য টোটাল বিল থেকে একটা কমিশন পান। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য তার কোনোটাই প্রযোজ্য নয়? সার্টিফিকেট এই কি কাজে আসে বা মুক্তিযোদ্ধা আইডেন্টিটি কার্ড কোন কাজে আসে বুঝি না! কোনো অভিযোগ নেই শুধু একটু দীর্ঘ নিঃশ্বাস!’
পোস্টের ঠিক দশ মিনিট পর আরেকটি পোস্টে নিজের নাম, পরিচয়, অতীত গৌরব-সবকিছুকেই যেন প্রশ্নবিদ্ধ করেন তিনি। লেখেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম ছবি ’ওরা ১১ জন’-এর প্রযোজক মাসুদ পারভেজ। ধিক তোমাকে ধিক, তোমার মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট এবং মুক্তিযোদ্ধা আইডেন্টিটি কার্ডকে।’
শুধু হতাশা নয়, অভিনেতা জানিয়েছেন নিজের শারীরিক দুর্বলতার কথাও। আগে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, ‘ইলেক্ট্রোলাইট ইম ব্যালেন্স ঠিক হয়নি, তাই শরীরের দুর্বলতাও কাটেনি। আপনাদের কাছে দোয়াপ্রার্থী।’
অভিনেতার এই ক্ষোভপূর্ণ বক্তব্যে সামাজিক মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। কেউ বলছেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার এভাবে নিজের অর্জনকে ধিক্কার জানানো রাষ্ট্রের জন্য লজ্জার; কেউ বা বলছেন, সোহেল রানা হয়তো রাষ্ট্রের প্রতি অভিমান থেকেই এই কথা বলেছেন।
উল্লেখ্য, ‘মাসুদ রানা’ চরিত্র থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে যে ছবিতে অভিনয় করেন তিনি, সেটাই ছিল তার অভিনয় জীবনের শুরু। পরিচালক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন সে ছবির মাধ্যমে। একসময়ে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন এই তারকা। তবে শেষপর্যন্ত রাজনীতি ও অভিনয়-দুই অঙ্গন থেকেই সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি।