মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে এক আবেগঘন এবং ঐতিহাসিক রাত দেখলো ফুটবল বিশ্ব। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে নিজেদের মাটিতে এটাই ছিল কিংবদন্তি লিওনেল মেসির শেষ ম্যাচ।
আর বিদায়ী রাতটা গোল ছাড়া যে অসম্পূর্ণ থেকে যেত, সেটা যেন নিজেই বুঝেছিলেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি।
প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগমুহূর্তে জুলিয়ান আলভারেজের নিখুঁত পাস থেকে মেসি উপহার দিলেন এক অনবদ্য ফিনিশ—একটি দারুণ চিপ শট, যা মুহূর্তেই উল্লাসে মাতালো গ্যালারির ৮০ হাজার দর্শক। আর্জেন্টিনা বিপক্ষে দেশের মাটিতে ৩-০ গোলে হারিয়েছে ভেনেজুয়েলাকে।
এই ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্ত ছিল আবেগময়। প্রথমার্ধের শেষ দিকে জুলিয়ান আলভারেজের নিখুঁত পাস থেকে মেসি এক দুর্দান্ত চিপ শটে বল জালে জড়িয়ে দিলেন। মুহূর্তেই গ্যালারি গর্জে উঠলো "লিও মেসি আছে পাশে, পুরো পথ আমরা পাড়ি দেব একসঙ্গে।
এই গোলটি কেবল একটি গোল ছিল না, এর পেছনে লুকিয়ে ছিল অনেক ইতিহাস। প্রায় দুই দশক আগে ভেনেজুয়েলার বিপক্ষেই বাছাইপর্বে প্রথম গোল করেছিলেন তিনি।
আবার, ডিয়েগো ম্যারাডোনার অধীনে প্রথমবার ১০ নম্বর জার্সি গায়ে চাপিয়েছিলেন এই ভেনেজুয়েলার বিপক্ষেই। যেন শুরুটা হয়েছিল যাদের বিপক্ষে, শেষটাও হলো তাদের বিরুদ্ধেই।
গোলটির পর মেসি যেন আরও জ্বলে উঠলেন। দ্বিতীয়ার্ধে লাওতারো মার্টিনেস এবং থিয়াগো আলমাদার অসাধারণ বোঝাপড়ায় মেসি নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন, যা তার চলতি বাছাইপর্বে অষ্টম গোল।
এর মধ্য দিয়ে তিনি সর্বোচ্চ গোলদাতার আসন নিশ্চিত করলেন। এই ম্যাচে মেসির মোট গোল সংখ্যা বিশ্বকাপ বাছাই ইতিহাসে ৩৫-এ পৌঁছালো, এবং জাতীয় দলের হয়ে তাঁর মোট গোল সংখ্যা দাঁড়ালো ১১৪-তে।
শুধু গোল নয়, এই রাতটি বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে মেসির অশ্রুসিক্ত আবেগ দিয়ে। ওয়ার্ম-আপের সময় থেকেই তাঁর চোখে পানি দেখা যাচ্ছিল, যা পুরো আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের এক প্রতিচ্ছবি ছিল।
খেলার পরেও তিনি বারবার করতালি দিয়ে দর্শকদের ভালোবাসা ফিরিয়ে দিয়েছেন। ২০ বছরের এই দীর্ঘ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে বিশ্বকাপ, কোপা আমেরিকা, ফাইনালিসিমা - সবকিছুই জিতেছেন তিনি।
এবার নিজের শেষ বাছাইপর্বের ম্যাচকে এক অমর স্মৃতিতে পরিণত করলেন নিজের জাদুতে। আর্জেন্টিনার বাছাই মিশন শেষ হবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ইকুয়েডরের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচ দিয়ে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন