বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে টানা ভারী বর্ষণে দক্ষিণাঞ্চলের অন্তত ১১টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। পাশাপাশি আরও কিছু নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি রয়েছে। ফলে বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর ও ঝালকাঠিসহ আশপাশের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. তাজুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, বর্ষা মৌসুমে বিভাগীয় নদনদীর পানি পর্যবেক্ষণ করা হয়। শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত পাওয়া সর্বশেষ তথ্যে দেখা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের ১১টি গুরুত্বপূর্ণ নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে রয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, যেসব নদীতে বিপৎসীমার ওপরে পানি প্রবাহিত হচ্ছে সেগুলো হলো:- কীর্তনখোলা নদী (বরিশাল): ৩০ সেন্টিমিটার ওপর, বিষখালী পয়েন্ট (ঝালকাঠি): ১৬ সেন্টিমিটার ওপর, বিষখালী পয়েন্ট (বেতাগী, বরগুনা): ৫২ সেন্টিমিটার ওপর, সুরমা-মেঘনা পয়েন্ট (দৌলতখান, ভোলা): ৮২ সেন্টিমিটার ওপর, সুরমা-মেঘনা পয়েন্ট (তজুমদ্দিন, ভোলা): ১৬৫ সেন্টিমিটার ওপর, বুড়িশ্বর/পায়রা পয়েন্ট (মির্জাগঞ্জ, পটুয়াখালী): ২৯ সেন্টিমিটার ওপর, বুড়িশ্বর/পায়রা পয়েন্ট (আমতলী, বরগুনা): ১৮ সেন্টিমিটার ওপর, বিষখালী পয়েন্ট (বরগুনা): ৩১ সেন্টিমিটার ওপর, বিষখালী পয়েন্ট (পাথরঘাটা, বরগুনা): ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর, কচা নদী (উমেদপুর): ২৩ সেন্টিমিটার ওপর, বলেশ্বর পয়েন্ট (পিরোজপুর): ৩২ সেন্টিমিটার ওপর।
এই নদীগুলোর পানি বাড়তে থাকায় তীরবর্তী অনেক নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। বিশেষ করে উপকূলীয় এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এতে ঘরবাড়ি, কৃষিজমি ও রাস্তাঘাটে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
বরিশাল আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশালে ২১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় সর্বোচ্চ বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার। আগামী দুই-তিন দিন এ অবস্থার অব্যাহত থাকতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছে।
পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি দেশের সব নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নদী পরিস্থিতি সত্ত্বেও ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল নদী বন্দরের সহকারী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) রিয়াদ হোসেন। তবে ভোলা-ইলিশা রুটে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. তাজুল ইসলাম জানান, অমাবস্যার প্রভাবে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এখনো বন্যার আশঙ্কা নেই। পরিস্থিতি আমরা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছি।